লখনউ: বলিউডের প্রথম তারকা হিসেবে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছিলেন বেবি ডল গায়িকা কণিকা কপূর। লন্ডন থেকে ফিরে আসার পর তাঁর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। এর আগে তিনি বেশ কয়েকটি পার্টিতে গিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁর সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা নিজেদের কোয়রেন্টিন করেছিলেন। লন্ডন থেকে ফিরেও কোয়ারেন্টিনে না থাকা নিয়ে বিভিন্ন মহলে কণিকার সমালোচনা হয়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে যাবতীয় বিতর্কের জবাব দিতে গতকাল ইনস্টাগ্রাম একটি পোস্ট মারফত সাফাই দিয়েছিলেন কণিকা। আপাতত সুস্থ তিনি। হাসপাতাল থেকে ছাড়াও পেয়েছেন। কিন্তু এরমধ্যেই লখনউ পুলিশের নোটিশ পৌঁছে গিয়েছে তাঁর বাড়িতে। বাড়িতে নোটিশ সেঁটে পুলিশ তাঁকে থানায় এসে বয়ান রেকর্ডের নির্দেশ দিয়েছে। কণিকার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৬৯ ধারা (জীবনের পক্ষে বিপজ্জনক রোগ ছড়ানোর ব্যাপারে অবহেলাসূচক কাজ) ও ২৭০ ধারা (জীবনের পক্ষে বিপজ্জনক রোগের সংক্রমণ ছড়াবার ঘাতক কাজ) –য় অভিযোগ আনা হয়েছে। এরফলে যে তাঁর বিড়ম্বনা বাড়ল বলেই মনে করা হচ্ছে।
কৃষ্ণনগরের এসিপি দীপক কুমার সিংহ বলেছেন, কণিকাকে থানায় এসে তাঁর বয়ান লিখিতভাবে নথিভূক্ত করতে হবে। এরপর পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে পুলিশ।
গতকাল রবিবার কণিকা তাঁর রোগ নিরাময়ের জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন ইনস্টাগ্রাম পোস্টের মাধ্যমে। তাঁর সম্পর্কে যে সমস্ত অভিযোগ উঠেছিল, সেগুলিরও জবাব দিয়েছিলেন ওই পোস্টের মাধ্যমে।
কনিকা লিখেছিলেন, কিছু তথ্য আপনাদের জানাতে চাই। আমি এখন লখনউতে মা-বাবার সঙ্গে দারুণ সময় কাটাচ্ছি। ইংল্যান্ড, মুম্বই বা লখনউতে যাঁজের সংস্পর্শে এসেছি, তাঁদের কারুরই করোনার কোনও লক্ষ্মণ নেই। এমনকি, তাঁদের সবার টেস্ট নেগেটিভ এসেছে। আমি ১০ মার্চ ইংল্যান্ড থেকে মুম্বই রওনা দিই এবং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আমার নির্ধারিত নিয়ম মেনেই পরীক্ষা করা হয়েছিল। ওই দিন আমাকে কোনও পরামর্শ দেওয়া হয়নি। ১৪ ও ১৫ মার্চ আমি এক বন্ধুর সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ ও নৈশভোজ করেছিলাম। আমি কোনও পার্টির আয়োজন করিনি। আমি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ছিলাম। ১৭ ও ১৮ মার্চ আমার মধ্যে করোনার লক্ষ্মণ দেখা দেয়। তাই আমি নিজে থেকেই পরীক্ষার অনুরোধ করি। ১৯ মার্চ আমার পরীক্ষা হয় এবং ২০ মার্চ যখন জানতে পারি যে, আমি কোভিড-১৯ আক্রান্ত তখন হাসপাতালে ভর্তি হওয়াই উচিত মনে করি। তিনটি টেস্ট নেগেটিভ হওয়ার পর আমাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। তখন থেকে ২১ দিন আমি বাড়িতেই রয়েছি। আমি চিকিত্সক ও নার্সদের ধন্যবাদ দিতে চাই। তাঁরা অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে আমার চিকিত্সা করেছেন। আমার আশা, প্রত্যেকেই সততা ও সংবেদনশীলতার সঙ্গে এই বিষয়টির মোকাবিলা করতে পারবেন। কোনও ব্যক্তি সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা বাস্তবটা বদলে দিতে পারে না।