কলকাতা: তাঁর ভালোবাসা মঞ্চ। কিন্তু বড়পর্দা থেকে ছোটপর্দা, সব জায়গাতেই অবাধ বিচরণ তাঁর। সম্প্রতি বড়পর্দাতেই মন দিয়েছিলেন তিনি। তবে দীর্ঘদিন পরে তাঁর ছোটপর্দায় ফেরার সিদ্ধান্ত বেশ চমকে দিয়েছে দর্শকদের। কিন্তু হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত কেন? এবিপি লাইভকে 'গোধূলি আলাপ'-এর আইনজীবী হয়ে ছোটপর্দায় ফেরার কারণ জানালেন অভিনেতা কৌশিক সেন (Kaushik Sen)।
রাজ চক্রবর্তীর প্রযোজনায় 'গোধূলি আলাপ' ধারাবাহিকে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করছেন কৌশিক। হঠাৎ ছোটপর্দায় ফেরার সিদ্ধান্ত কেন? অভিনেতা বললেন, 'এই বছরটা আমার কাছে ভীষণ বিশেষ। আমার নাটকের দল 'স্বপ্নসন্ধানী'-র ৩০ বছর পূর্ণ হচ্ছে এই বছর। সেই উপলক্ষ্যে আমরা 'হ্যামলেট' নাটকটা মঞ্চস্থ করব। ইতিমধ্যেই মহড়া শুরু হয়ে গিয়েছে। এই বছরটা 'স্বপ্নসন্ধানী'-কে বেশি সময় দেব বলেই ধারাবাহিক করার সিদ্ধান্ত নিই। আমি রাজকে (রাজ চক্রবর্তী) বলেছিলাম, নাটকের মঞ্চ আমার ভালোবাসা। সেই ভালোবাসাকে আমি অগ্রাধিকার দেব। এতে রাজের সংস্থা রাজি হয়। তাই এই ধারাবাহিকে ফেরা। মে মাসের শেষ পর্যন্ত এই ধারাবাহিক ছাড়া আর কোনও কাজ করব না আমি। কেবলমাত্র টেলিভিশনের কাজটা করব, বাকি সময়টা স্বপ্নসন্ধানীর।'
'গোধূলি আলাপ'-এর প্রোমো একটা অসমবয়সী সম্পর্কের গল্প বলে। প্রায় মধ্যবয়স্ক এক আইনজীবীর সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর থেকে অনেক ছোট একটি মেয়ের। কৌশিক বলছেন, 'ধারাবাহিকে কীভাবে কাজ হয় সেই ধাঁচটা আমার চেনা। তবে এই ধারাবাহিকের চিত্রনাট্যটা আমায় ভীষণ আকৃষ্ট করেছিল। টেলিভিশনে গল্প বলার একটা ধারা রয়েছে, তার টার্গেট অর্ডিয়েন্সও আলাদা। কিন্তু এই গল্পটা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছে আমার। প্রথমে অনেকের এই ধারাবাহিক পছন্দ নাও হতে পারে। কারণ এমন সম্পর্কের সমীকরণ দেখার অভ্যাস মানুষের নেই। তাই চরিত্রটা একদিকে যেমন চ্যালেঞ্জিং, তেমনই একটু বিপজ্জনকও।'
অনেক রাত্রে অঞ্জনদাকে ফোন করে বললাম, 'সবাই তোমার গানগুলো গাইছি তাই..'
'শ্রীময়ী' থেকে শুরু করে 'লক্ষ্মী কাকিমা সুপারস্টার', 'সর্বজয়া', তারপর 'গোধূলি আলাপ' ছোটপর্দা হঠাৎই মধ্যবয়স্কদের কেন্দ্র করে গল্প বোনার দিকে ঝুঁকেছে? কৌশিক বলছেন, 'এটাই তো হওয়া উচিত। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সম্পর্কের জটিলতাও বাড়ে। সেটাকে পর্দায় ফুটিয়ে তোলা জরুরি। জাতীয়স্তরে এই ধরণের গল্প আগেই শুরু হয়েছে, বাংলায় একটু দেরীতে হলেও এই ধারাটা এসেছে। জুলফিকর, ইতি মৃণালিনী, রাজকাহিনীতেও আমি মধ্যবয়স্কের চরিত্রে অভিনয় করেছি। ধারাবাহিকে এই প্রথম।'
দীর্ঘদিন পরে ধারাবাহিকে চাপ সামলাবেন কী করে? কৌশিক বললেন, 'এখন সিনেমাতেও যথেষ্ট তাড়াতাড়ি কাজ হয়। ১১-১২ দিনে গোটা ছবি শ্যুটিং হয়ে যায়। আরও একটা বিষয় রয়েছে। যখন কেবল ছবি করি, তখন ভালো ছবি, পছন্দের চরিত্রের সঙ্গে সঙ্গে এমন কাজও করতে হয়েছে যেটা ততটা পছন্দের নয়। ধারাবাহিকের ক্ষেত্রে কেবলমাত্র একটাই সংস্থার সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে। তাই স্বপ্নসন্ধানীকে বেশি সময় দিতে পারব।'