তোর্ষা ভট্টাচার্য্য, কলকাতা: নাটকের মঞ্চ থেকে শুরু করে ছোটপর্দা, বড়পর্দা... তাঁর অভিনয়ের কেরিয়ার দীর্ঘ। তবে মুখ্যচরিত্রে আসার সুযোগ পাননি তেমনভাবে। এই ছবিটির অফার পেয়ে প্রথমে তিনি বলে ফেলেছিলেন.. 'চুল উঠে গিয়েছে, মোটা হয়েছি.. এতদিন পরে তোরা আমায় মুখ্যচরিত্রে ভাবলি...' তবে দমে যাননি তিনি। দাপিয়ে শ্যুটিং করেছেন এক রাশ কচিকাঁচাদের সঙ্গে, মিশেছেন, হেসেছেন প্রাণ খুলে। ধ্রুব বন্দ্য়োপাধ্যায় পরিচালনায় 'বগলা মামা যুগ যুগ জিও' (Bogla Mama Jug Jug Jiyo) ছবিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা এবিপি লাইভকে (ABP Live) শোনালেন খরাজ মুখোপাধ্যায় (Kharaj Mukherjee)। 


এর আগেও ধ্রুবর সঙ্গে কাজ করেছেন খরাজ। অভিনেতা বলছেন, 'দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন-এ ধ্রুবর সঙ্গে প্রথম কাজ করেছিলাম। তখনই মনে হয়েছিল ও কাজ জানে, ভীষণ খুঁতখুঁতে একটা লোক। এমন পরিচালক পাওয়া যায় না। সেইসময়ে ও বলেছিল, 'খরাজদা তোমায় নিয়ে একটা ভাল কাজ করব।' তবে সেই কাজ যে কোনো সিনেমার নামভূমিকা.. তা ধারণা করিনি।'


মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের অফার পেয়ে অবশ্য প্রথমটা একটু দ্বিধা করেছিলেন খরাজ। অভিনেতা বলছেন, 'বগলামামা সাহিত্য নির্ভর চরিত্র, ছোটবেলায় চাঁদমামায় পড়েছি। তবে প্রথমে অফারটা পেয়ে সংশয় হয়েছিল। মনে হয়েছিল, এই সুযোগ আগে এলে আরও অনেক এনার্জি নিয়ে কাজ করতে পারতাম। এখন চুল উঠে গিয়েছে, চেহারা স্থূল হয়েছে। ধ্রুবকে বলেছিলাম, এতদিন পরে আমায় মুখ্যচরিত্রের সুযোগ দিলি। ও আমায় বুঝিয়েছিল, আরও আগে এই চরিত্রে অভিনয় করতে তা মামা হত না, বগলা দাদা হয়ে যেত। বগলামামার চরিত্র করার জন্য একটু বয়স হওয়াই প্রয়োজন।'


 এ তো গেল ছবির অফারের গল্প। শ্যুটিংয়ের সময় আবার অন্যরকম অভিজ্ঞতা। খরাজ বলছেন, 'ধ্রুব কিন্তু খুব খাটিয়েছে শ্যুটিংয়ের সময়, বকাবকিও করেছে। আবার জড়িয়ে ধরে আদর করে গালে চুমুও খেয়েছে। তখন সব বকুনি ভুলে গিয়েছি। আসলে ধ্রুব ব্যক্তিত্বটাই এমন.. গোটা টিমের মধ্যে উদ্দীপনা জাগিয়ে রাখতে পারে, বুস্ট করতে পারে আর প্রাণপাত করে খাটতে পারে। ওর যেটা চাই.. ঠিক বের করে নেবে ও।'


ছবিতে খরাজ ছাড়াও অনেক অভিনেতা অভিনেতা রয়েছেন। তাঁদের এক এক জনের এক এক বয়স। খরাজ বলছেন, 'এই ছবিটা সাদা কালো ছবির মোড়কে একটা রঙিন ছবি। সত্তরের দশকের সিনেমায় যে অনাবিল আনন্দ ছিল, পাড়া কালচার ছিল.. সেটাকেই তুলে ধরা হয়েছে এই ছবিতে। তখন প্রত্যেক পাড়ায় যেমন একজন করে মামা, কাকা, পিসি থাকতেন.. তাদেরই তুলে আনা হয়েছে এই ছবি জুড়ে। ছবিতে অপরাজিতা (আঢ্য) রয়েছেন এবং ওঁকে নিয়ে কিছু বলাই বাহুল্য। আমি ওঁর অনুরাগী বলতে পারেন। এছাড়াও রজতাভ (দত্ত), কৌশিক (সেন), ঋদ্ধি (সেন), দিতিপ্রিয়া (রায়)... প্রত্যেকে ভীষণ ভীষণ ভাল অভিনেতা। ওঁরা আগামীতে আরও অনেক পরিণত হবে। ধ্রুব বলেছিল, সবার সঙ্গে মিশে যেতে... তবেই সেই বন্ডিংটা পর্দায় ফুটে উঠবে। আমি চেষ্টা করেছি মাত্র।'


এতদিন পরে মুখ্যচরিত্র পাওয়ার আক্ষেপ রয়েছে? খরাজ বলছেন, 'আমার মনে হয় প্রত্যেক শিল্পীকেই তাঁর সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এই শিক্ষা আমি নিজেই অনেককে দিয়েছি। আমিও সেই অপেক্ষাই করছিলাম।'


আরও পড়ুন: Tiger 3 : পর্দায় একসঙ্গে আসতে চলেছেন টাইগার থ্রি-র জ়োয়া ও উরির বিহান? জল্পনা উস্কে দিলেন ক্যাটরিনা