কলকাতা: কলকাতার বনেদি যৌথ পরিবার। বাড়িতে অনেক বাচ্চা, হই হুল্লোড়... এই সব ভীষণ প্রিয় ছিল তাঁর। একরত্তি মেয়ের জন্মদিনটা হাজার কাজের চাপেও ভুলতেন না কখনও। যতই ব্যস্ততা থাকুক, ২৮ এপ্রিল দিনটা শুধুমাত্র পরিবারের জন্যই। নতুন জামা, কেক-পায়েসে দিনটা এক্কেবারে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতে কোনও কসুর করতেন না তিনি। আর মেয়ে? তিনি জানতেনই না, তাঁর বাবার কাজটা ১০টা-৫টার চাকরি নয়, এক্কেবারে অন্যরকম। মেয়ে জানতেনই না, তিনি যখন ছোট্ট, তখন তাঁর বাবা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন রুপোলি পর্দা। তারকাসুলভ জীবনযাপন নয়, বাড়িতে রঞ্জিত মল্লিক (Ranjit Mallick) একেবারে সাদামাটা, ঘরোয়া। মেয়ের জন্মদিনটা তিনি সাজিয়ে তুলতেন সখে, আদরে.. আর পাঁচ জন বাবা যেমন করেন.. সেভাবেই। সময় পেরিয়েছে, বয়স বেড়েছে.. কিন্তু বাবা-মেয়ের বন্ধুতা কমেনি। মেয়ে কোয়েলের (Koel Mallick) জন্মদিনে স্মৃতিতে ডুব দিলেন রঞ্জিত মল্লিক।
মল্লিকবাড়ি চিরকালই জমজমাট। সেই বাড়ির মেয়ে কোয়েলের জন্মদিনও হত জাঁকজমক করেই। এবিপি লাইভ (ABP Live)-কে রঞ্জিত মল্লিক বলছেন, 'আমাদের যৌথ পরিবার, বাড়িতে অনেক বাচ্চা। তাদের মধ্যে কারও জন্মদিন মানেই সবার খুব আনন্দ। কোয়েলের জন্মদিনটাও ঠিক সেভাবেই কাটত। ওর মা ওকে ভীষণ সুন্দর করে সাজিয়ে দিতেন, নতুন জামা, চুলে ফিতে দিয়ে। সকালে পায়েস হত, বিকেলে কেক। আমি চিরকালই ফ্যামিলি ম্যান। বিশেষ দিনগুলোতে বাড়িতে থাকতে ভীষণ ভালবাসি। শ্যুটিং থাকলেও বলে দিতাম, ২৮ তারিখ শ্যুট করব না। বাড়িতে ওইদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্যন্ত হত। নাচ-গান আড্ডায় মেতে থাকত সব্বাই। আমিও ছোটদের সঙ্গে মিলে ভীষণ মজা করতাম। তারপর যত বয়স বেড়েছে, জন্মদিনের জাঁক কমে এসেছে। বিয়ের পরেও কিছু বছর জাঁকজমক করেই জন্মদিন হয়েছিল। এখন পরিবারের লোকজনের সঙ্গেই কোয়েল জন্মদিনটা কাটায়। একটা বেলা আমাদের সঙ্গে, আরেকটা ওর নিজের বন্ধু বা শ্বশুরবাড়িতে কাটায়। এখনও পর্যন্ত এমন একটা জন্মদিনও যায়নি, যেটায় ওর সঙ্গে আমাদের দেখা হয়নি।'
কোয়েল যখন ছোট, পর্দায় তখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন রঞ্জিত মল্লিক। একের পর এক শ্যুটিংয়ের কাজ। কখনও মেয়ের জন্মদিনে শ্যুটিংয়ের কাজে বাইরে থাকতে হয়েছে? একটু ভেবে অভিনেতা বললেন, 'তেমন ঘটনা মনে পড়ছে না। শ্যুটিংয়ে আমার বলাই থাকত, ২৮ এপ্রিল কাজ করব না। আর যদি কখনও আউটডোরে যেতে হত ওই দিনটায়, কোয়েলও সঙ্গে থাকত।' এখন মল্লিক পরিবারের চোখের মণি কবীর। মায়ের জন্মদিনে কতটা আনন্দ করে একরত্তি পুত্র? হেসে ফেলে রঞ্জিত বললেন, 'কবীরকে নিয়ে আমাদের গোটা দিন কেটে যায়। বাড়িতে কেক আসা মানেই ও 'হ্যাপি বার্থ ডে' গান শুরু করে দেয়। মায়ের জন্মদিনের কেকও কাটে একসঙ্গে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কোয়েলের জন্মদিনের জৌলুস কমেছে বটে, কিন্তু পরিবারের সঙ্গে বিশেষ দিন কাটানোর খুশিটা একইরকম রয়েছে।'
আরও পড়ুন: Side Effects Of Oranges : গুণের 'খনি', কিন্তু কখন স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর কমলা লেবু ?