কলকাতা: স্তব্ধ সঙ্গীত জগৎ। ছুটির দিনের সকালে পাওয়া খবর যেন কালো মেঘ টেনে এনেছিল মনের আকাশে। 'জীবন্ত সরস্বতী'-র প্রয়াণে যেন এক মুহূর্তের জন্য হারিয়ে গেল সমস্ত সুর। প্রয়াত কিংবদন্তি লতা মঙ্গেশকর। তাঁর প্রয়াণে কারও মনে পড়ে গেল শিল্পীর সঙ্গে কাটানো পুরনো দিন, কেউ আবার অকপটে স্বীকার করে নিলেন সঙ্গীত জগতে লতা মঙ্গেশকরের অবদানের কথা। ভিডিও বার্তায় শোকজ্ঞাপন করে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নিলেন এ আর রহমান (A R Rahaman)।
আজ একটি ভিডিও বার্তায় শোকজ্ঞাপন করে সঙ্গীতশিল্পী এ আর রহমান বলেন, 'লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুতে সঙ্গীত জগতের যে ক্ষতি হল তা অপূরণীয়। তবে লতাজির সঙ্গে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলতে গেলে আমার প্রথমেই মনে হয় বাবার কথা। খুব ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছি আমি। তবুও মনে পড়ে খাটের পাশে লতাজির একটি ছবি রেখেছিলেন বাবা।আমার বাবা লতাজির খুব বড় অনুরাগী ছিলেন। আমাদের বাড়িতে লতা মঙ্গেশকরের একটি ছবি রয়েছে। আমার মনে আছে, প্রতিদিন বাড়ি থেকে স্টুডিয়োর উদ্দেশে বেরনোর সময় সেই ছবিতে প্রণাম করতেন বাবা। কখনও লতাজির আশীর্বাদ ছাড়া তিনি স্টুডিয়োতে যেতেন না। লতাজির ছবিটিই বাবাকে অনুপ্রাণিত করত।'
এ আর রহমান আরও বলেন, ' আমার সৌভাগ্য আমি লতাজির কিছু কিছু অনুষ্ঠানের অংশ হতে পেরেছি। একবার মনে আছে শো-এর আগে আমি দেখতে পাই, বন্ধ ঘরে তানপুরা নিয়ে আমার তৈরি করা সুর খুব আস্তে আস্তে অনুশীলন করছেন লতাজি। বিশ্বাস হয়নি প্রথমে। এটাই ওনার রেওয়াজের ধরণ! আমি তখনও নিজে গান গাওয়ার কথা ভাবিনি তার আগে। নিজেকে একজন সুরকার হিসেবেই দেখে এসেছি। কিন্তু তারপর থেকে প্রত্যেক শো-এর আগে আমি তানপুরা নিয়ে অনুশীলন করি।'
এ আর রহমান আরও বলেন, লতাজি একবার আমায় বলেছিলেন, এক একটি গানের জন্য নওশাদ সাহেব তাঁকে ১১ দিন রিহার্সালের সময় দিতেন। হৃদয় দিয়ে গান অনুশীলন করতেন লতাজি। কিশোরদা, রফি সাহেব, সলীল চৌধুরী, লতাজি প্রত্যেকেই সঙ্গীত জগতের এক একজন স্তম্ভ। আমাদের উচিত তাঁর সংগীতের ধারা বহন করে নিয়ে যাওয়া।''