কলকাতা: ধারাবাহিকের সেটেই একটু গান আর নাচ, দোলের আগে এভাবেই রঙের উৎসবে মেতে উঠল টিম 'লক্ষ্মী কাকিমা সুপারস্টার'। এই ধারাবাহিকের যিনি নায়িকা, তিনি নাচ করতে ভালোবাসেন। অপরাজিতা আঢ্য। শ্যুটিংয়ের ফাঁকে হামেশাই তিনি মেতে ওঠেন ছোট্ট নাচে গানে। দোলের আগেও গালে আবিরের ছোঁয়া লাগিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নাচের ছন্দে মাতলেন তিনি। 


আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও আপলোড করেছেন অপরাজিতা। সেখানে নায়িকার পরণ হলুদ শাড়ি। এক্কেবারে দোলের আদর্শ পোশাক। আর তার সঙ্গে পা মিলিয়েছেন আরও দুই সঙ্গী। তিন সঙ্গীর নাচে অন্য মাত্রা এনেছে শ্রী-এর গলার গান। মোবাইল দেখে শ্রী গাইছেন 'বসন্ত এসে গেছে'।


আরও পড়ুন: মুক্তি পেল 'হিরোপন্থী টু' ছবির ট্রেলার, হাড় হিম করা লুকে নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি


দীর্ঘদিন পরে ছোটপর্দায় ফিরেই ম্যাজিক দেখিয়েছেন অপরাজিতা। নতুন ধারাবাহিক নিয়ে উচ্ছসিত অপরাজিতা আঢ্য। কাকিমা সুপারস্টার হল কীভাবে? অপরাজিতা বলছেন, 'আমরা আসেপাশে যে চরিত্রদের দেখতে পাই তাঁরা সবাই সুপারস্টার। আমার বাড়ির বিপরীতে একজন জেঠিমা থাকতেন। তিনি ঠোঙা বিক্রি করে এক ছেলেকে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট বানিয়েছিলেন অন্যজন ব্যাঙ্কে চাকরি করতেন। আমার পিসি শাশুড়িও ঠোঙা বিক্রি করে, মুড়ি ভেজে, তাঁর ৪ ছেলে মেয়েকে মানুষ করেছিলেন। মানুষ যখন অসহায় হয়ে পড়ে, তখন বিশেষত মহিলারা বুক গিয়ে এই সংসারটা আগলে রাখেন, চালিয়ে যান। এই চরিত্রটা আমার খুব কাছের কারণ আমাদের চারিদিকে এমন অনেক লক্ষ্মী কাকিমারা ছড়িয়ে আছেন। তারা সবাই আমাদের কাছে সুপারস্টার। প্রত্যেকেই আসা করি এই চরিত্রটার সঙ্গে ভীষণ মিল খুঁজে পাবেন। আমি মাটির কাছাকাছি চরিত্র করতে ভীষণ ভালো লাগে। আমাদের কাছে এই মায়েরাই সুপারস্টার।'


লক্ষ্মীর চরিত্রটা ঠিক কেমন? অপরাজিতা বলছেন, '২০২২ সালে এসে কেউ হাত গুটিয়ে বসে নেই। গ্রামের দিকে আমার জা'য়েরা থাকেন। তাঁরাও প্রত্যেকে সংসার চালানোর পাশাপাশি সংসারকে সাহায্য করার জন্য কিছু না কিছু করছেন। কেউ শাড়ির ব্যবসা, কেউ শিক্ষকতা। লক্ষ্মীও ঠিক এমনই একটা ঘরোয়া চরিত্র। সে মুদির দোকান চালায়। আবার সেইসঙ্গে দশভূজা হয়ে সংসারও সামলায়। দু পয়সা বেশি রোজগার হবে বলে ঘুগনি নিয়ে মেলায় চলে যেতেও দু'বার ভাবে না। চরিত্রটার প্রস্তাব আসার পরে আমার স্বামী আমায় বলেছিলেন, 'তোমার যা ব্যক্তিত্ব তাতে এই ধরণের চরিত্রে অভিনয় করবে?' আমি বলেছিলাম, করব। কারণ আমি নিজেও এইরকম। কখনও বসে থাকতে পারি না। শ্যুটিং না থাকলে খেলনা বানাই, রান্না করি, আরও কত কি! পর্দায় লক্ষ্মীর কাছে মুদির দোকানটা কেবল দায়িত্ব নয়, সে কাজটাকে ভীষণভাবে ভালোবাসে। অনেকেই তার দোকানে আসে জিনিস কিনতে নয়, পরামর্শ নিতে। লক্ষ্মী তাদের কথা শোনে। ঘরে কোথাও না কোথাও তার একটা দুঃখ লুকনো আছে। লক্ষ্মী যেন হালকা হয়, ভালো থাকে ওই দোকানকে ঘিরেই।'