কলকাতা : জয় গোস্বামীর 'মালতীবালা হাইস্কুল'! বাঙালির সেন্টিমেন্ট। এই কবিতা প্রথম গানের রূপ পেয়েছিল লোপামুদ্রা মিত্রর কণ্ঠে। সেটা নব্বইয়ের দশক। এখনও বহু মেয়েরি বিরহযাপনের সঙ্গী এই গান 'বেণীমাধব,বেণীমাধব, এতদিনের পরে, সত্যি বলো, সে সব কথা এখনো মনে পড়ে?'
সম্প্রতি জি বাংলার (Zee Bangla) জনপ্রিয় অনুষ্ঠান সা রে গা মা পা'-র (Sa Re Ga Ma Pa) মঞ্চে জয় গোস্বামীর লেখা 'মালতীবালা হাইস্কুল'কবিতাটি একেবারে অন্যভাবে সঙ্গীতাকারে উপস্থাপনা করেন নাট্যকার গৌতম হালদার (Goutam Halder)। তারপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় বয়ে যায় সমালোচনার ঝড়। বহু নেটিজেনই এই পারফর্ম্যান্সের সমালোচনা করতে গিয়ে তীক্ষ্ণ ভাষার ব্যবহার করেন। আবার শিল্পীর পাশেও দাঁড় অনেকে শিল্পীর স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলেছেন। তবে ঝড়র মতো কুমন্তব্য উড়ে এসেছে কমেন্ট বক্সে। তারপর তা নিয়ে শিল্পজগতের তারকা - মহাতারকারাও নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। এবার গৌতম হালদারের উপস্থাপনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখলেন 'মালতীবালা হাইস্কুল'কে 'বেণীমাধব,বেণীমাধব'গানে রূপ দেওয়া লোপামুদ্রা মিত্র।
লোপামুদ্রা মিত্র লিখছেন, 'সব কাজ সকলের ভালো নাইই লাগতে পারে। শিল্প- সাহিত্য, জীবনবোধ, সবটাই , যেটা আমার ভালো, সেটা মন্দ তোমার কাছে। এই নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। ১৯৯৬ সালে আমার গাওয়া বেণীমাধবও ঠিক লাগেনি, এমন মানুষও অনেক আছেন। কবি জয় গোস্বামীর মালতিবালা, তখন সমীর চ্যাটার্জির সুরে আর আমার গলায় বেণীমাধব হয়ে উঠেছিলো। স্বয়ং কবি যে দিন প্রথম শুনেছিলেন গানটি, তাঁর প্রশ্ন ছিল , কেন একেবারে শেষে “বেণীমাধব, তোমার বাড়ি যাবো” ফিরিয়ে আনা হল ? কিন্তু, কবিতাটি গানে রূপান্তর করেন সমীর চট্টোপাধ্যায়। ভাবনাটা আর গান তখন হয়ে উঠেছে ওই মানুষটার সৃষ্টি। সেই ভাবনা,স্বয়ং কবি মেনে নিয়েছিলেন।'
নেটিজেনদের অনেকেই যেখানে লোপামুদ্রা'বেণীমাধব,তোমার বাড়ি যাবো'-র সঙ্গে এই গানের তুলনা টেনে গৌতমকে কটাক্ষ করেছেন, সেখানে সঙ্গীতশিল্পী নিজে তার নিন্দা করেছেন। 'শ্রোতা ,দর্শক,পাঠক আমাদের ঈশ্বর। এ কথা আমার বা আমাদের শিরোধার্য। তবু,আমি প্রতিবাদ করছি। জানি, আমিও এ লেখার জন্য অথবা ভিন্ন ভিন্ন কারণে,অকারণে কুৎসিত কিছু শব্দ দেখবো আমার পাতায়। তবু,না লিখে পারলাম না। এটা অন্যায়। শালীনতা ,সম্মান,ভাষার নিয়ন্ত্রণ,সমীহ, শ্রদ্ধা ইত্যাদি শব্দ কি আমরা পুরোপুরি ভুলে গেলাম। আমরা কি অসভ্য হয়ে উঠছি ক্রমশ? কষ্ট হচ্ছে মেনে নিতে।'
এর আগে এবিপি লাইভ-কে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে গৌতম হালদার বলেন, 'নিন্দা ও প্রশংসা দুটোই জীবনে সমানভাবে গ্রহণ করে নিতে পারলে সবচেয়ে ভাল হয়। নিস্পৃহ থাকতে পারি না আমরা কিন্তু সেটা থাকতে পারলেই বোধ হয় সবচেয়ে ভাল হয় বিশেষ করে আমরা যাঁরা শিল্পের কাজ করি তাঁদের ক্ষেত্রে। দর্শকের যাতে ভাল লাগে সেই মতো করেই করার চেষ্টা করেছিলাম।'
আরও পড়ুন :