কলকাতা: মাতৃহারা হলেন মিঠুন চক্রবর্তী। বৃহস্পতিবার ৯৫ বছর বয়সে মুম্বইয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মিঠুনের মা শান্তিরানি চক্রবর্তী। এক সময়ে কলকাতার জোড়াবাগানের বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকতেন শান্তিরানি দেবী। পরবর্তীকালে ছেলের সঙ্গে থাকতেন মুম্বইয়ে। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া চক্রবর্তী পরিবারে।


একাধিকবার নিজের জীবনে মায়ের অবদানের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তী। তাঁর প্রয়াণে অবশ্য অভিনেতার কাছ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। চিরকালই নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পছন্দ করেন তিনি। অন্যথা হল না এবারেও। তবে এই খবর ছড়িয়ে পড়তে সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকপ্রকাশ করেছেন রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে অভিনেতা অভিনেত্রী অনেকেই। 


সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি লম্বা লেখা শেয়ার করে স্মৃতিচারণ করেছেন সঙ্গীতশিল্পী শিলাজিৎ। ছোটবেলায় নাকি মাত্র ২ জনকে ভয় পেতেন শিল্পী। একজন তাঁর সেজোমাসি, অন্যজন মিঠুন চক্রবর্তীর মা। শিলাজিতের শান্তি দিদা। শিল্পীর মা শান্তি মাসি বলে ডাকতেন তাঁকে আর সেটা শুনে মাঝে মাঝে ভুল করে সেটাই বলে ফেলতেন শিলাজিৎও। 


শিল্পী লিখছেন, 'দিদার চোখের দিকে তাকালেই কেমন একটা অনুভূতি হত। ওঁর ঢলঢলে চোখে একটা সম্মোহনী দৃষ্টি ছিল। মা তো বদমায়েশি করলেই ভয় দেখাতেন, 'শান্তি দিদা কে বলে দেব' এটা বলে। এই দিদা রত্নগর্ভা। খুব কষ্টে মানুষ করেছিলেন তার তিন মেয়ে আর এক ছেলেকে। ছেলে বিখ্যাত হয়ে যাওয়ার পরে, তিনি আমাদের পাড়ার লোক বলেই অহঙ্কারে ফেটে পড়তাম আমরা। কিন্তু শান্তি দিদা বদলাননি। ছেলে বিশ্ব বিখ্যাত হওয়ার পরেও কোনোদিন বোঝা যায়নি উনি সুপারস্টার মিঠুনের মা। আমার ছোটোবেলার ভাল লাগার চরিত্র দের মধ্যে উনি ছিলেন একজন।'


সোশ্যাল মিডিয়ায় মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে তাঁর মায়ের একটু পুরনো ছবিও শেয়ার করে নিয়েছেন শিলাজিৎ। ছেলের খ্যাতির গর্ব কখনও ছুঁতে পারেনি তাঁকে। হয়তো সেই গর্ব, অহংকার তিনি রেখে দিতেন মনের মধ্যেই। চিরকার ভীষণ সাদামাটা জীবনযাপন করেছেন শান্তিরানি চক্রবর্তী। শেষ বয়সে তিনি থাকতেন ছেলের কাছেই। 


শিলাজিৎ আরও লিখেছেন, 'উনি মাথায় হাত দিলে মনে হত, শান্তি পেলাম। শান্তি দিদা চলে গেল।মায়ের যথারীতি মনটা ভাল নেই। পুরনো অ্যালবাম থেকে এই ছবিটা মা পাঠালেন আমাকে। দেখা হতো না ,কিন্তু মনে থাকতেন, খবর নিতাম। মনটা খারাপ হয়ে গেল। পৃথিবী একজন মাকে হারাল । এমন স্নেহময়ী  মানুষ আমি খুব কম দেখেছি।'