নয়াদিল্লি: ৭০তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের (70th National Film Awards) মঞ্চে 'দাদাসাহেব ফালকে' (Dadasaheb Phalke Award) সম্মানে ভূষিত হলেন প্রবীণ অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। হাতে চোট নিয়েই পৌঁছন অনুষ্ঠান মঞ্চে, রাষ্ট্রপতির হাত থেকে গ্রহণ করেন সম্মান। 'শো রিল' (Showreel) দেখানোর সময় আবেগঘন দেখায় তাঁকে। পুরস্কার গ্রহণের পর দিলেন স্পিচ। মজার ছলে বলা নানা গল্পে মুগ্ধ হলেন দর্শক।


প্রথম জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পর কেমন হয়েছিল মিঠুনের অবস্থা?


পুরস্কার নেওয়ার পর এদিন মঞ্চে বক্তব্য রাখেন মিঠুন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, 'সংলাপ দিলে কত সহজে পড়ে নিই, বলে দিই, এখানে তো কোনও কাগজ নেই, কী যে বলব কিছুই বুঝতে পারছি না।' এরপর উপস্থিত সকলকে সম্মান জানিয়ে বলেন, 'এটুকুই বলব যে এই মঞ্চে এর আগে আমি তিন বার এসেছি আপনাদের আশীর্বাদে। কিন্তু প্রথমবার জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পর আমার কী হয়েছিল, সেই কথা এই প্রথমবার জানাব আপনাদের।'


নিজের স্বভাবোচিত ঢঙে মজা করে অভিনেতা বলে চলেন, 'প্রথম জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পর লোকজনের ভূয়সী প্রশংসা পেয়ে আমার মাথা একটু একটু করে খারাপ হতে শুরু করে। যে বিশাল কিছু করে ফেলেছি আমি। সেই সময় বম্বেতে একটা স্ক্রিনিংয়ের আয়োজন করা হয়, যেখানে 'মৃগয়া' দেখে যদি পছন্দ হয় তাহলে সিনেমার ডিস্ট্রিবিউশন হবে। আমিও পৌঁছে যাই। ভাবি যে আমাকে দেখে ওঁর পছন্দ হতে পারে, আমাকে কাজে নিতে পারেন। সিনেমা শেষ হওয়ার পর সেই সম্মানীয় ব্যক্তিকে আমি জিজ্ঞেস করি যে 'স্যার, সিনেমা কেমন লাগল?' তিনি আমাকে বলেন, 'সিনেমা ভাল লাগল, তুমিও দারুণ অভিনেতা। কিন্তু জামাকাপড় পরলে তোমাকে কেমন লাগবে?' আমি এক মুহূর্তের জন্য চমকে যাই, যে আমি কি ওঁর সামনে জামাকাপড় ছাড়া দাঁড়িয়ে আছি?' মিঠুন চক্রবর্তীর কথা শুনে ততক্ষণে হাসিতে ফেটে পড়েছে দর্শকাসন, হাসছেন মন্ত্রীরাও।


 



তবে গল্প থামে না এখানেই, স্মৃতির সরণি বেয়ে হেঁটে চলেন মিঠুন। বলেন, 'ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেয়ে তো নিজেকে আলপাচিনো ভাবছিলাম। আমার অ্যাটিটিউড বদলে গিয়েছিল।' তাঁর অঙ্গভঙ্গি দেখে হাসতে থাকেন তাঁর সহকর্মীরাই। তবে তাঁর কর্মজীবনে গায়ের রং যে 'সমস্যা' হয়ে দাঁড়ায় সে কথা অকপটে জানান মিঠুন। গায়ের রং নিয়ে কটাক্ষের সম্মুখীন হয়েছেন বারবার, জানান অভিনেতা। তাঁর কথায়, 'গায়ের রং বদলাতে তো পারব না, কিন্তু আমি তো নাচ করতে পারি। এমন নাচ করব, আমার পায়ের সাহায্যে, যে দর্শক আমার পা দেখবেন, তাঁদের চোখ আর আমার ত্বক, মুখের দিকে না যায়। আমি একেবারে সেটাই করেছি। কোথাও আমার পা থামতে দিইনি।'





আরও পড়ুন: Mithun Chakraborty: হাতে চোট, চোখের জল সামলে উঠলেন কোনও রকমে, 'দাদাসাহেব ফালকে' সম্মান পেলেন মিঠুন


নবীন প্রজন্মের উদ্দেশে এরপর অভিনেতা বলেন, 'আমাদের দেশে প্রতিভার অভাব নেই। কিন্তু অর্থ নেই তাঁদের কাছে। তাঁদের বলব, আত্মবিশ্বাস হারাবে না। টাকাপয়সা না থাকলেও আশা ছাড়বে না। আর স্বপ্ন নিশ্চয়ই দেখবে। মনে রাখবে, নিজে ঘুমিয়ে পড়লেও স্বপ্ন যেন কোনওদিন না ঘুমায়।'


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।