মুম্বই: 'আদিপুরুষ' (Adipurush) আর বিতর্ক যেন মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। দর্শকেরা তো বটেই, ছবি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রীও। সম্প্রতি এই ছবি নিয়ে মুখ খুলেছেন অভিনেতা মুকেশ খান্না (Mukesh Khanna)। ছোটপর্দার 'শক্তিমান' চরিত্রে যিনি জনপ্রিয় আট থেকে আশির মধ্যে। 


সম্প্রতি ওম রাউতের (Om Raut) পরিচালিত ছবিকে তিনি 'হতাশাজনক রামায়ণ' (disrespecting Ramayana) বলছে উল্লেখ করেছেন। সম্প্রতি, ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে মুকেশ বলেছেন, 'রামায়ণের জন্য 'আদিপুরুষ'-এর থেকে বড় অপমান আর কিছু হতে পারে না। ছবিটা দেখে মনে হচ্ছে, রামায়ণ সম্পর্কে পরিচালক ওম রাউতের কোনও জ্ঞানই নেই। আর আমাদের মধ্যে তো একজন বিশাল বড় বুদ্ধিজীবী রয়েছেনই, ছবির সংলাপ লেখক মনোজ মুন্তাশীর শুক্লা (Manoj Muntashir Shukla). উনি তো রামায়ণটাকে কলিযুগে এনে ফেলেছেন। ওঁর লেখা বোকা, অর্থহীন সংলাপ, ঘুম পেয়ে যাওয়ার মতো চিত্রনাট্য গোটা ছবিটাকে যেন একটা ঘুমের ওষুধ বানিয়ে দিয়েছে। এই ছবিটার সঙ্গে আর যাই হোক.. রামায়ণের কোনও সম্পর্ক নেই।'


এখানেই থামেননি পর্দার 'শক্তিমান'। তিনি আরও বলেন, 'এই ছবিতে মেঘনাদের যে লুক তৈরি করা হয়েছে, সেটা ভীষণ খারাপ একজন WWE যে যোগ দেওয়া কুস্তিগীরের মতো। আর তার গোটা গায়ে আবার ট্যাটু! সেই সঙ্গে মুখে সংলাপ, 'বেটা তেরি জ্বলি'! এই ধরণের সংলাপ কীভাবে রামায়ণের সঙ্গে খাপ খেতে পারে! এটা কী কোনও টাপৌরি চরিত্র! আর এখানে রাবণকে যেভাবে দেখানো হয়েছে, সেটা ভয়াবহ! রাবণ একজন পন্ডিত ব্যক্তি ছিলেন। যদি ছবিতে তাকে ভয়ঙ্কর দেখাতেই হয়, তবে এমন দৃশ্যায়ন হবে কেন! রামায়ণকে এমনভাবে বিকৃত করতে তো সাহসের প্রয়োজন!'


মানুষ হিসেবে প্রভাসের ও তাঁর অভিনয়ের প্রশংসা করলেও এই ছবি নিয়ে দ্বিমত রয়েছে মুকেশের। তিনি বলেন, 'রামের চরিত্র করতে গেলে মন ছুঁতে হয়। যা অরুণ গোভিলের অভিনয়ে ছিল। কেবল মাসল দেখালেই কেউ রাম হয়ে যায় না। কোনও মহাকাব্যের চরিত্রদের এমন করে বদলে দেওয়ার কোনও অধিকার নেই কারও। রাবণকে তো কমেডি চরিত্রে পরিণত করা হয়েছে। রাবণ তো কমেডিয়ান ছিলেন না।'


এখানেই শেষ করেননি মুকেশ, তিনি আরও বলেন, 'যে কোনও স্বাভাবিক কিশোর কিশোরীরও রামায়ণ সম্পর্কে অনেক বেশি পরিষ্কার ধারণা রয়েছে এই ছবির চেয়ে। আমরা তো কেবল বই থেকে নয়, ধরাবাহিক থেকেও রামায়ণ সম্পর্কে জেনেছি। তাই কেউ যদি আদিপুরুষ দেখার পরিকল্পনা করেন, তাঁকে বলব, দয়া করে প্রেক্ষাগৃহের বাইরে নিজের মস্তিষ্কটা রেখে তারপরে দেখতে ঢুকবেন।'