কলকাতা: রুপোলি পর্দায় তাঁর জনপ্রিয়তা আজও বজায় রয়েছে সমানভাবে। তিনি চলে যাওয়ার ৫ বছর পরেও। কিন্তু তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ারের জন্য তিনি আজও চর্চিত, বিতর্কিত। তিনি তাপস পাল (Tapas Paul)। আজ তার জন্মদিন, বেঁচে থাকলে ৬৭ বছর পূর্ণ করতেন তিনি। তাপস পাল নেই, কিন্তু টলিগঞ্জের আবাসনের প্রতিটি কোণায় রয়ে গিয়েছে তাঁর স্মৃতি। সেই ফ্ল্যাটে বসেই, এবিপি লাইভ বাংলাকে মন খুলে এক অজানা তাপস পালের গল্প শোনালেন, তাঁর স্ত্রী। নন্দিনী পাল।
তাপস পালের নাম বললে, এখনও জড়িয়ে যায় চৌমাহার মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলা তাঁর সেই বিতর্কত মন্তব্য। একটা আদ্যপান্ত রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে বলা তাপস পালের ওই ওই মন্তব্য মেনে নিতে পারেননি তাঁর অনুরাগীরা। কেন তাপস পাল ওই বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন, সেই নিয়ে আজও বিতর্ক রয়েছে। তবে তাপস পাল কি সত্যিই ইচ্ছাকৃতভাবে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন? নাকি তিনি দিনের শেষে ঘরে ফিরে তাঁর মন্তব্যের জন্য মনখারাপ করতেন? স্ত্রী নন্দিনী বলছেন, 'চৌমাহা বিতর্কের পরে তাপস নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিল। বিতর্কিত মন্তব্যের পরে উনি লোকের সামনে আসতে লজ্জা পেতেন। গুমরে গুমরে একটা সময়, কষ্ট পেতে পেতে চলে গিয়েছেন। উনি ক্ষমা চেয়েও বলেছেন, এটা যথেষ্ট নয়। ওঁর যখন সিবিআই কাস্টার্ডি হয়, সেটায় ওঁর কোনও দোষ ছিল না। সেটা সাধারণ মানুষও জানেন। কিন্তু উনি সেই সময়ে আমায় বলতেন, 'যেটা হয়েছে বেশ হয়েছে। এটাই আমার পাপের প্রায়শ্চিত্ত। মানুষের কর্মফল তাকে পেতেই হবে।' উনি চিটফান্ডে জড়িত ছিলেন না। কিন্তু নিজেকে কখনও ওই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা করেননি।' উনি কোনও অজুহাত দেননি ওঁর এই মন্তব্যের জন্য। আমরাও আজ অবধি ওঁর ওই মন্তব্যের কোনও অজুহাত দিইনি। আমরা আজও লজ্জিত।'
বর্তমানে টলিউডে গল্প বলার ধরণ বদলেছে। তাপস পালের সমসাময়িকেরা এখনও চুটিয়ে অভিনয় করতেন। যদি তাপস পাল বেঁচে থাকতেন, তাঁকে কি আবার নতুনভাবে বড়পর্দায় দেখা যেত? স্ত্রী নন্দিনী বলছেন, 'উনি ভীষণ আবেগপ্রবণ ছিলেন। কখনও মাথা দিয়ে চলেননি, মন দিয়ে চলেছেন। মুখ দেখে মানুষকে বিচার করেছেন। রাজনৈতিক হতে হলে যে বিচক্ষণতা লাগে, যে গণ্ডারের চামড়া থাকা উচিত.. সেগুলো ওঁর কিছুই ছিল না। বারে বারে আমায় বলতেন, 'জানো, আমার মনে হয়, আমি অভিনয়টা ছাড়া আর কিছুই করতে পারি না। আমি মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কোথায় যেন কি একটা হয়ে গেল, যেটা আমি নই।'