মুম্বই: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে বলিউডে শিবির বিভাজন। কেউ কেউ এই আইনের বিরুদ্ধে দেশের নানা শহরে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ সমর্থন করেছেন, অনেকে বিরোধিতাও করেছেন বা নীরবতা পালনই শ্রেয় মনে করছেন। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ সহ সেখানকার পড়ুয়া, শিক্ষকদের ওপর মুখোশধারী হামলাবাজদের আক্রমণের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় ক্য়াম্পাসে আয়োজিত প্রতিবাদসভায় হাজির হয়ে পড়ুুয়াদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে বিতর্কের কেন্দ্রে এসেছেন দীপিকা পাড়ুকোন। এবার প্রবীণ অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ গত কয়েক বছরে বলিউড, চলচ্চিত্র দুনিয়া সামাজিক ইস্যুতে কতটা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে, তা নিয়ে মতামত দিতে গিয়ে সিএএ নিয়ে বলিউডি কলাকুশলীদের প্রতিবাদী ভূমিকাকে বাহবা দিলেন। সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে সিএএ- বিরোধী অবস্থান নেওয়া কলাকুশলীদের প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, এই লোকগুলোর অনেক বেশি সাহস, হারানোর অল্পই আছে। কিন্তু কেন চলচ্চিত্র মহলের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্বরা মুখ খুলছেন না, সেটা বোঝা যায়। তবে কেউ অবাক হতে পারেন এটা ভেবে সত্যিই ওঁদের কতটা হারানোর আছে? মুখ খুললে কি আপনারা মরে যাবেন? দীপিকার (পাড়ুকোন) মতো মেয়ে, যে শীর্ষে থেকেও এরকম একটা সাহসী কাজ করেছে, তার প্রশংসা তো করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে, অভিনেতা অনুপম খেরকে একহাত নিয়েছেন তিনি। সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদকে ট্যুইটে কটাক্ষ করেছেন অনুপম। নাসিরুদ্দিনের বক্তব্য়, অনুপম খেরকে গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই। উনি একটা ভাঁড়। এফটিআইআই, এনএসডি-তে ওঁর সমসাময়িক লোকজনরাই ওঁর মোসাহেবি চরিত্রের কথা বলবেন। চাটুকারিতা ওঁর রক্তে। ওটা না করে থাকতে পারেন না।


পাল্টা অনুপম বলেছেন, নাসিরুদ্দিন শাহকে আমার ভালবাসায় ভরা শুভেচ্ছা। উনি আমার চেয়ে বয়সে, মর্যাদায় বড়। আমি বরাবর ওঁর শিল্পসুষমার সম্মান করি, করবও। তবে কখনও কখনও দু-একটা কথার জবাব দিতেই হয়। একটি ভিডিও ট্যুইট করে অনুপম জানিয়েছেন, কখনও আপনার সম্পর্কে খারাপ কথা বলিনি, তবে এবার বলতে চাইব যে, গোটা জীবন এত সাফল্য পেয়েও আপনি হতাশায় ভুগছেন। আপনি দিলীপ কুমার, রাজেশ খন্না, অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খান, বিরাট কোহলির সমালোচনা করতে পারলে আমারও করতে পারেন। এঁদের একজনও আপনার কথায় গুরুত্ব দেননি। কেননা আপনি যে ধারণা পোষণ করেছেন বছর বছর ধরে, তাতে ভাল, মন্দ বিচারের বোধই হারিয়ে ফেলেছেন। আমার নিন্দেমন্দ করে যদি দু-একদিন আলোচনার কেন্দ্রে থাকতে চান, থাকুন, আপনাকে সেই সুযোগ উপহার দিচ্ছি। ভগবান আপনাকে সুখে রাখুন, আপনার শুভানুধ্যায়ী অনুপম। আর জানেন কি, আমার রক্তে কী বইছে? হিন্দুস্তান রয়েছে আমার রক্তে। এটা বুঝে নিন।

ইদানীং বলিউডে যে ‘দেশপ্রেমনির্ভর ছবি’ করার ধুম পড়েছে, তা নিয়ে সমালোচনামূলক অভিমত জানিয়ে নাসিরুদ্দিন বলেছেন, চলচ্চিত্র দুনিয়া সবসময়ই ক্ষমতাসীনদের তুষ্ট করতে চেয়েছে। আমি সত্যিই অবাক হয়ে ভাবি, এই ছবি পরিচালকদের মধ্যে বিশ্বাসের জোর কতটা, যাঁরা নতুন করে ইতিহাস লেখায় সাহায্য করছেন।