কলকাতা: পুজো যতই এগিয়ে আসছে, ততই এগিয়ে আসছে সিনেমা মুক্তির দিনও। এবার পুজোয় একটি নয়, দুটি নয়, মুক্তি পাচ্ছে ৪টে ছবি।  দেব (Dev) অভিনীত 'রঘু ডাকাত', প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee) ও শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় (Shrabanti Chatterjee) অভিনীত 'দেবী চৌধুরানী', অনীক দত্ত পরিচালিত 'যত কাণ্ড কলকাতাতেই' এবং, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় (Shiboproshad Mukherjee) ও নন্দিতা রায় (Nandita Roy) পরিচালিত ও আবির চট্টোপাধ্যায় (Abir Chatterjee) ও মিমি চক্রবর্তী (Mimi Chakraborty) অভিনীত সিনেমা 'রক্তবীজ ২'। আর একসঙ্গে চারটি সিনেমা মুক্তি মানেই তো অবধারিতভাবে প্রেক্ষাগৃহ পাওয়া নিয়ে সমস্যা, চাপানউতোর। এই বিষয় নিয়ে মুখ খুলেছেন, কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।

Continues below advertisement

সোশ্যাল মিডিয়ায় কুণাল ঘোষ লেখেন, 'টলিউডে চুক্তিভঙ্গের ইঙ্গিত। বাংলার সিনেমার স্বার্থে ঠিক হয়েছিল পুজোয় আসা সবকটি ছবি প্রথমে সমান সুযোগ পাবে। তারপর দর্শকের সাড়া অনুযায়ী বা ব্যবসা অনুযায়ী হল মালিকরা সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু, যা খবর, 'প্রভাবশালী' একটি ছবি বাড়তি শো পাচ্ছে একাধিক হলে শুরু থেকেই। 'রক্তবীজ 2'-এর মত প্রথম পর্ব সুপারহিট হওয়া ছবিকেও কোণঠাসা করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে গোড়া থেকে। এটা কাম্য নয়। শুরুটা সবাই সমান সুযোগ পাক। তারপর দর্শকের বিচার। সেটা না হলে এত বৈঠকের মানে কী? যাঁরা বৈঠক করেছিলেন, তাঁরা এখন কী করছেন? সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে নজর দিন। হল মালিকরাও বিষয়টায় নিরপেক্ষতা রাখুন। চারটি সিনেমা, রক্তবীজ টু, রঘু ডাকাত, দেবী চৌধুরানী, যত কান্ড কলকাতাতেই সমান সুযোগ পাক আত্মপ্রকাশে, তারপর দর্শকের বিচারে দৌড় চলুক। একটা ছবি নেপথ্য প্রভাবে শুরুর দিন থেকে বাড়তি শো পাবে, এসব হলে তার প্রতিবাদও হবে। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত পোস্ট। বাংলা ছবির একজন দর্শক হিসেবে। সেন্সর বোর্ড ও ইমপার প্রাক্তন সদস্যও বটে। টেলিফিল্ম পরিচালনা ও পূর্ণ ছবি প্রযোজনার অভিজ্ঞতাও আছে।'

কুণাল ঘোষের এই পোস্ট শেয়ার করে নিয়েছেন শিবপ্রসাদ পত্নী জিনিয়া সেন। তবে এই বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য শোনা যায়নি দেব বা এসভিএফ-এর তরফে। 'রঘু ডাকাত'-এর এই যৌথ প্রযোজক প্রেক্ষাগৃহ পাওয়া নিয়ে কোনও কথা বলেননি। অন্যদিকে আজ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবিপি লাইভ বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, হল পাওয়া নিয়ে যদি সমস্যা হয়, তাহলে তা আলোচনার মাধ্যমে মেটানো যেতে পারে। 

Continues below advertisement

এই বিষয় নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন প্রযোজক রানা সরকার। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কুণাল ঘোষ ও দেব একই রাজনৈতিক দলের সমর্থক হয়েও কেন দেবের ছবি বিরোধী পোস্ট করেছেন?  সেই পোস্টের ও পাল্টা উত্তর দিয়েছেন কুণাল ঘোষ। অন্যদিকে তাঁর এই পোস্ট নিয়ে এবিপি আনন্দের তরফ থেকে কুণাল ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি জানান, তিনি এই বিষয়ে কিছু বলবেন না। কারণ এটা তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। দলের সঙ্গে তাঁর এই মতামতের কোনও সম্পর্ক নেই।'

অন্যদিকে আজ, সাংবাদিক সম্মেলনে এই বিষয়ে লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'আগে জানতাম, ছবি ভাল হলে, সেই ছবি চলে। কিন্তু এখন নিজস্ব লবি, নিজস্ব চেনাজানা আছে, তাঁদের সিনেমাই বেশি চলে। এখন একটা খারাপ ছবি ও অনেকদিন ধরে চলছে এই নজির ও রয়েছে। ভাল ছবিও হল থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। সবটাই রাজনৈতিক প্রভাব থাকে বলে করা হয়। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় দর্শকদের ও শিল্পীদের। সর্বপোরি ক্ষতি হয় আমাদের বাংলার। আগে ছবি নিয়ে অনেকের কৌতুহল ছিল। ভাল ছবি মর্যাদা পেত। এখন সিনেমায় তাঁরাই সুযোগ পায় যাঁরা তৃণমূল সরকারকে আপোস করে চলে।'