মুম্বই: বাড়িতে দুষ্কৃতী হামলায় তিনি একা জখম হননি। আহত হয়েছিল ছোট ছেলে জেহ্-ও। ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল একরত্তিকেও। হামলার রাতে ঠিক কী ঘটেছিল, এতদিন পর তা খোলসা করলেন অভিনেতা সেফ আলি খান। জানালেন, গৃহ সহায়িকা না থাকলে প্রাণে বাঁচতেন না তিনি। (Saif Ali Khan Attacked)

Continues below advertisement

অক্ষয় কুমারের সঙ্গে সম্প্রতি কাজল ও টুইঙ্কল খন্নার শো ‘Two Much With Kajol and Twinkle’-এ অংশ নেন সেফ। সেখানে বাড়িতে দুষ্কৃতী হামলা নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। ঠিক কী ঘটেছিল ওই রাতে, জানতে চান কাজল এবং টুইঙ্কল। আর তাতেই চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেন সেফ। (Attack on Saif Ali Khan)

সেফ বলেন, “করিনা বাইরে ছিল। আমি ছেলেদের সঙ্গে (তৈমুর ও জেহ্) একটা সিনেমা দেখে উঠেছিলাম সবে। বেশ দেরিতেই ঘুমাতে গিয়েছিলাম। করিনা ফেরার পর কিছু ক্ষণ কথা বলি আমরা, তার পর শুয়ে পড়ি। হঠাৎ গৃহ সহায়িকা ছুটে আসেন, বলেন, ‘জেহ্ বাবার ঘরে একজন ঢুকে পড়েছে। হাতে ছুরি রয়েছে, টাকা চাইছে।”

Continues below advertisement

সেফ জানিয়েছেন, দুই ছেলেকে বাঁচাতে পড়িমরি করে দৌড় দেন তিনি। ছোট্ট জেহ্-র দিকে ছুরি তাক করা হয়েছিল কি না জানতে চান অক্ষয়। এতে সেফ বলেন জানান, ওই যুবক এদিক ওদিক করছিল। জেহ্ও আহত হয়। আহত হন জেহ্-কে দেখভালের দায়িত্বে থাকা আয়াও। তাঁদের দু’জনের শরীরেই আঘাতের চিহ্ন ছিল, কেটে গিয়েছিল।

ওই মুহূর্তে ঠিক কী ঘটছিল, তা নিয়ে সেফ বলেন, “আমি নিজের প্রশিক্ষণ স্মরণ করতে চাইছিলাম। কিছুটা প্রতিহত করতেও সফল হই। কিন্তু তথনই পিঠে জোরে আঘাত অনুভব করি। তত ক্ষণে সকলে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন। গীতা, আমাদের গৃহ সহায়িকা আমাকে আড়াল করতে ছুটে আসেন। ধস্তাধস্তিতে ওই যুবককে ধাক্কা দেন উনি। গীতাই আমার প্রাণ রক্ষা করে। আমার শরীরের সর্বত্রই ছুরি বসানো হয়। শেষে ওই দুষ্কৃতীকে ঘরে তালাবন্ধ করে দিই আমরা।” 

ছেলেকে রক্ষা করতে সেফ যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েন, অনেকেই তার প্রশংসা করেছেন। কিন্তু তাঁর পরিবারের উপর দিয়ে যে ঝড় বইছিল, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। সেফের কথায়, "হুড়মুড়িয়ে জেহ্-র ঘরে ঢুকি আমি। দেখি, অন্ধকার করে জেহ্-র বিছানার উপর ঝুঁকে দাঁড়িয়ে রয়েছে একজন। হাতে ছুরি রয়েছে তার। ওর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ি আমি। ধস্তাধস্তি শুরু হয় আমাদের মধ্যে। ওর হাতে দু’টি ছুরি ছিল। আমাকে এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করে। তৈমুর সিঁড়ি থেকে চিৎকার করে, ‘বাবা তুমি কি মারা যাবে?’ আমি কোনও রকমে বলি, 'না, মরব না। আমি ঠিক আছি'। ”

গত ১৬ জানুয়ারি মুম্বইয়ের বান্দ্রায় সেফ ও করিনা কপূর খানের বাড়িতে ঢুকে পড়ে এক দুষ্কৃতী। জানা যায়, সটান জেহ্-র ঘরে ঢুকে পড়ে সে। ছুরি দেখিয়ে ১ কোটি টাকা দাবি করে। ছেলেকে বাঁচাতে সেফ খোদ ওই দুষ্কৃতীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। এতে ওই যুবক তাঁর শরীরে পর পর কোপ বসিয়ে দেয়। মোট ছয়টি গুরুতর ক্ষত ছিল সেফের শরীরে, যার মধ্য়ে দু’টি ছিল মারাত্মক। ছুরির একটি অংশ ভেঙে সেফের পিঠে ঢুকে যায়। 

ওই রাতে নিজেই লীলাবতী হাসাপাতালে ভর্তি হন সেফ। চিকিৎসকরা জানান, এত গভীর ক্ষত ছিল যে, একটু হলেই ছুরির ভাঙা অংশ সরাসরি শিরদাঁড়ায় গেঁথে যেত। দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচারের পর সেফের শরীর থেকে ছুরির ভাঙা অংশটি বের করেন চিকিৎসকেরা। সেফের ঘাড়েও একটি গভীর ক্ষত ছিল। ডান দিকের কাঁধে, পিঠের বাঁ দিকেও ছিল গভীর ক্ষত।