মুম্বই: সলমন খানকে খুনের ষড়যন্ত্র মামলায় নয়া তথ্য হাতে পেল পুলিশ। গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই এবং তাঁর শাগরেদরা সলমনের গাড়িতে হামলা চালানোর ছক কষেন বলে তদন্তে নেমে জানতে পারল নবী মুম্বই পুলিশ। মহারাষ্ট্রের পানভেলের ফার্ম হাউজে নিত্য যাতায়াত সলমনের। সেখানেই সলমনের গাড়ি উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল এবং তার জন্য পাকিস্তান থেকে অস্ত্রসশস্ত্রও আনানো হয় বলে জানা গিয়েছে। (Salman Khan)


এই ঘটনায় নবী মুম্বই পুলিশ এফআইআর দায়ের করেছে। ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে চার জনকে। গত ১৪ এপ্রিল মোটর সাইকেলে চেপে এসে কিছু দুষ্কৃতী বান্দ্রায় সলমনের ফ্ল্যাট লক্ষ্য করে গুলি চালায়। সেই মামলার তদন্তে নেমেই পাকিস্তান থেকে অস্ত্র আমদানি এবং বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের দিকটি উন্মোচিত হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। (Salman Khan House Firing)


পুলিশের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, জেলবন্দি গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণৌই, তাঁরা কানাডা নিবাসী তুতো ভাই আনমোল বিষ্ণোই এবং সহযোগী গোল্ডি ব্রার এই বৃহত্তর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। এক পাকিস্তানি দালাল মারফত  একাধিক AK-47, M-16 রাইফেল আমদানি করা হয়। আরও বেশ কিছু হাই-ক্যালিবার অস্ত্রশস্ত্রও পাকিস্তান থেকে আনা হয় বলে দাবি পুলিশ।


জানা গিয়েছে, সলমনের উপর হামলা চালাতে ৬০-৭০ জনের একটি টিম গঠন করা হয়েছিল। প্রত্যেকের কাঁধে পৃথক দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। সলমনকে খুন করতে নাবালক শ্যুটারও নিয়োগ করা হয়েছিল। যে চারজকে গ্রেফতার করেছে নবী মুম্বই পুলিশ, তাঁদের মধ্যে তিন জনকে ধনঞ্জয় ওরফে অজয় কাশ্যপ, ওয়াপসি খান ওরফে ওয়াসিম চিকনা এবং রিজওয়ান খান, পরিকল্পনায় সরাসরি যুক্ত ছিল বলে জানা গিয়েছে। অজয় বিষ্ণৌই গ্যাং-এরই সদস্য। নবী মুম্বইয়ের কলাম্বোলির বাসিন্দা। 'শুখা শ্যুটার' নামের একজনের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাঁর। পানভেল বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এবং অন্যান্য জায়গায় বার বার তাঁদের মধ্যে দেখা সাক্ষাৎ হয়েছে। এমনকি সলমনের বাড়ির আশেপাশে ঘুরে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ছক কষেছেন তাঁরা। 


বেআইনি ভাবে পাকিস্তান থেকে যে অস্ত্রশস্ত্র এসে পৌঁছয়, তা হাতে পেতে পাক সীমান্তের কাছাকাছিও পৌঁছন অজয় বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, হামলার পর কন্যাকুমারী হয়ে শ্রীলঙ্কা পালিয়ে যাওয়ার ছক ছিল দুষ্কৃতীদের। সেখান থেকে অন্য দেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেবেন বলে কানাডা থেকে সকলকে আশ্বস্ত করেছিলেন আনমোল।  গ্যাংস্টার আনন্ত পালের কন্যা চিনুও এই পরিকল্পনার অংশ ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।


আরও পড়ুন: 'Kota Factory' Season 3: ফিরছেন জিতু ভাইয়া! কবে মুক্তি পাবে 'কোটা ফ্যাক্টরি সিজন ৩'? ঘোষণা হল তারিখ


পুলিশের দাবি, সলমনকে খুন করতে পৃথক পরিকল্পনা ছিল। অতর্কিতে সলমনের গাড়িতে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলার পরিকল্পনা যেমন ছিল, পাশাপাশি তাঁর ফার্ম হাউসেও হামলার পরিকল্পনা ছিল। এলোপাথাড়ি গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়ার ছক ছিল বলিউড অভিনেতাকে। 


সলমনের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চলার ঘটনায়, চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ২৬ এপ্রিল গুজরাত থেকে ভিকি গুপ্ত, সাগর পাল এবং পঞ্জাব থেকে অনুজ থাপন ও আরও একজনকে আটক করা হয়। মোট ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এর মধ্যে পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীনই মৃত্যু হয় অনুজের। গলায় ফাঁস লাগিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে জানা যায়। 


অনুজের মৃত্যুতে পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। বম্বে হাইকোর্ট অনুজের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করে। রিপোর্টি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নেই বলে জানা যায়। অনুজের গলায় ফাঁসের যে দাগ ছিল, তার বিশদ তথ্যও ছিল না বলে উঠে আসে। অনুজের মা রিতা দেবীর অভিযোগ, তাঁর ছেলের উপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়, তাতেই মারা গিয়েছেন অনুজ। যদিও পুলিশের দাবি, জেলের শৌচাগারে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন অনুজ। অনুজের পরিবার সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছে।