কলকাতা: সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে আবেগপ্রবণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবিপি আনন্দের ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দেকে প্রতিক্রিয়া দিলেন। তিনি বলেন, 'খুবই দুঃখের খবর। আমি ভাবতেই পারিনি যে উনি মারা যাবেন। কারণ কালকে আমার কাছে খবরটা এসেছিল যে ওনার অপারেশনটা করার পরে কিছু শারীরিক সমস্য়া হয়েছে। মাঝে ভালো হয়েছিলেন, কিন্তু এত তাড়াতাড়ি যে অবস্থার অবনতি হবে, ভাবতেই পারছিনা। এত নিয়ম মেনে জীবন কাটাতেন, তারপরও যে কী হয়ে গেল, ভাবতে পারছি না। কোভিডের কারণে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা ছিল। যখনই অন্য একজন ডাক্তারকে পাঠাবো ভাবছি, তখনই শুনলাম উনি আর নেই। কোভিড থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। রক্তচাপও ঠিক ছিল। হঠাৎ কোথা থেকে কী হয়ে গেল ভাবতে পারছি না। এখন যেটা বক্তব্যের, সন্ধ্যা দি তো আমাদের স্বর্ণ সন্ধ্যা। স্বর্ণ যুগের সকলেই তো প্রায় চলে গিয়েছেন। আমাদের সন্ধ্যা দি ছিলেন। কত গান গেয়ে গিয়েছেন। সঙ্গীত অ্যাকাডেমীর চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। জাগো বাংলার প্রতিটা অনুষ্ঠানে আসতেন।'


সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরের প্রয়াণের খবরও জানানো হয়নি সন্ধ্যা মুখোপাধ্য়ায়কে। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে দুজন কিংবদন্তি প্রয়াত হলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'হ্যাঁ। এ যুগের আর কেউ নেই। এই ক্ষতি তো শুধু দেশের ক্ষতি নয়। আমি মনে করি সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ভারতরত্ন। রাতে ওঁর মৃতদেহ কোথায় রাখা হবে, তা নিয়ে কথা বলছি। হাসপাতালে কিংবা পিস ওয়ার্ল্ডে রাখার কথা ভাবছি। আগামীকাল রবীন্দ্রসদনে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ওঁর দেহ শায়িত থাকবে। যাতে ওঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারেন সকলে। আমার এখনও মনে পড়ে। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ছেলেমানুষের মতো ছিলেন। নিজে এত ভালো গান গান। আর আমাকে বলতেন, মমতা একটা গান শোনাও না। আমি বলতাম, সন্ধ্যা দি আপনি আমাকে বলছেন! আপনি নিজে সঙ্গীত বিশারদ। তাও কতবার গাইতে বলতেন। তাই আমাকে কতবার সন্ধ্যা দিকে আমায় গান শোনাতে হয়েছে। এতটা ভালো আমাকে উনি বাসতেন।' আগামীকাল রাজ্যের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সম্মান দিয়ে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। আগামী কাল ১২টা নাগাদ মরদেহ নিয়ে রবীন্দ্র সদনে রাখা হবে। ৫টা পর্যন্ত সেখাানেই শায়িত থাকবে দেহ। সেখানে সম্মান জানানো যাবে।


কথা বলতে বলতে কান্নায় গলা বুজে এল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের। গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে ভারাক্রান্ত তাঁর মন।