নয়াদিল্লি : বৃহস্পতিবার ৬৬ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা সতীশ কৌশিক। দিল্লিতে ছিলেন অভিনেতা। সেই সময় অস্বস্তি বোধ করেন। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শেষ রক্ষা হয়নি। সতীশের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ পুরো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ও তাঁর ফ্যানরা।
দিল্লিতে অভিশপ্ত সেই রাতে সতীশ কৌশিকের সঙ্গে ছিলেন তাঁর ম্যানেজার সন্তোষ রাই। তিনি ETimes-কে এক সাক্ষাৎকার ঘটনার রাতের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সাড়ে ৮টা নাগাদ রাতের খাবার খাই। ৯ মার্চ সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের বিমানে মুম্বই ফিরে আসার কথা ছিল আমাদের। উনি (সতীশ কৌশিক) বলেন, সন্তোষ, আমরা তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ি। সকালের ফ্লাইট ধরতে হবে। কিন্তু, রাত ১২টা ৫ মিনিট নাগাদ জোরে জোরে উনি আমার নাম ধরে ডাকতে থাকেন। দৌড়ে এসে জিজ্ঞাসা করি, স্যার, কী হয়েছে ? কেন চিৎকার করছেন ? ফোনেই বা কেন ডাকলেন না ?" উনি বলেন, শোনো, আমার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। কোনও ডাক্তারের কাছে নিয়ে চলো আমায়।
এর পাশাপাশি তিনি অভিনেতার শেষ কথাগুলো শেয়ার করেছেন। ETimes-কে তিনি জানান, "আমরা বেরিয়ে একটু এগিয়ে গেলে, ওঁর বুকে ব্যথা বেড়ে যায়। উনি বলতে থাকেন, তাড়াতাড়ি হাসপাতাল চলো। উনি মাথাটা আমার কাঁধে রাখেন। বলেন, সন্তোষ, আমি মরতে চাই না। আমাকে বাঁচাও। আমাকে বংশীকার জন্য বাঁচতে হবে। মনে হচ্ছে, আর বাঁচব না। শশী ও বংশীকার খেয়াল রেখো।"
এদিকে বর্ষীয়ান অভিনেতা সতীশ কৌশিকের (Satish Kaushik) মৃত্যুতে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে! যে ফার্ম হাউসে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সতীশ, তার মালিক বিকাশ মালুর দ্বিতীয় স্ত্রীর অভিযোগে শোরগোল পড়ে গেছে। অভিনেতার মৃত্যুতে তাঁর স্বামীর ভূমিকা রয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন তিনি। এমনকী এই মর্মে ওই মহিলা পুলিশের কাছেও অভিযোগ জানিয়েছেন। যার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে দিল্লি পুলিশ (Delhi Police)।
এক বিবৃতিতে দিল্লি পুলিশ সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে জানিয়েছে, এক মহিলার (বিকাশ মালুর স্ত্রী) অভিযোগের ভিত্তিতে অভিনেতা সতীশ কৌশিক মৃত্যু মামলায় তদন্ত শুরু হয়েছে। সমগ্র ঘটনার তদন্ত করছেন সাউথ ওয়েস্ট জেলার ইন্সপেক্টর স্তরের এক অফিসার। ওই মহিলাকে বিবৃতি দেওয়ার জন্য পুলিশের তরফে ডাকা হবে।
এএনআইকে বিকাশ মালুর স্ত্রী বলেন, সতীশজির মৃত্যু নিয়ে আমি একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। উনি একটা পার্টির জন্য স্বামীর ফার্ম হাউসে এসেছিলেন। যেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। ফার্ম হাউস থেকে কিছু আপত্তিকর ওষুধও পাওয়া যায়।
এর পাশাপাশি তিনি অভিযোগ জানান, সতীশ কৌশিক ও বিকাশ মালুর মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। তাঁদের মধ্যে টাকা-পয়সা নিয়ে বিবাদ ছিল। ২০২২ সালের অগাস্ট মাসে উভয়ের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। যার পর সতীশজি স্বামীকে দেওয়া ১৫ কোটি টাকা চেয়েছিলেন। কিন্তু, আমার স্বামী বলেছিলেন ভারতে ওই টাকা দেবেন। পরে আমি যখন স্বামীকে এবিষয়ে জানতে চাই তখন উনি জানান, সতীশজির কাছে উনি টাকাটা ধার নিয়েছিলেন। কিন্তু, কোভিড পর্বে সেই পরিমাণ টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে। স্বামী ওই টাকা ফেরত দিতে চাইছিলেন না। উনি এমনকী বলেন, সতীশ কৌশিকের সঙ্গে এব্যাপারে মিটমাট করতে ব্লু পিল ও রাশিয়ান মহিলাদের ব্যবহার করবেন। সেই কারণেই আমি পুলিশের কাছে এই দিকটা তুলে ধরেছি। যাতে স্বচ্ছ তদন্ত হয়।