কলকাতা: শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Ray) সিনেম্যাটোগ্রাফার (Cinematographer) সৌম্যেন্দু রায় (Soumendu Roy Death)। বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি। 


প্রয়াত সৌম্যেন্দু রায়


সত্যজিৎ রায়ের গল্প ভাষা পেয়েছে তাঁর ছবিতে। সত্যজিৎ রায়ের সিনেমা মানেই যাঁর নাম সিনেম্যাটোগ্রাফার হিসেবে জ্বলজ্বল করেছে অধিকাংশ ছবিতে তিনি সৌম্যেন্দু রায়। কিংবদন্তি পরিচালকের দীর্ঘদিনের সঙ্গী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। জনপ্রিয় রূপকলা কেন্দ্রের ক্যামেরার বিভাগীয় প্রধানও ছিলেন তিনি। 'ইন্ডিয়ান সোসাইটি অফ সিনেম্যাটোগ্রাফার্স'-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সৌম্যেন্দু রায়। 


সিনেম্যাটোগ্রাফারের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'এক্স'-এ পোস্ট করে তিনি লেখেন, 'বিশিষ্ট সিনেমাটোগ্রাফার সৌমেন্দু রায়ের প্রয়াণে আমি গভীরভাবে শোকাহত। প্রবাদপ্রতিম চিত্রপরিচালক সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে উনি দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। 'তিন কন্যা', 'অশনি সংকেত', 'অরণ্যের দিনরাত্রি', 'গুপী গাইন বাঘা বাইন'-র মতো অনেক ছবিতে ক্যামেরার দায়িত্ব সামলেছিলেন সৌমেন্দু রায়। তাঁর সেসব অসাধারণ কাজ দর্শক এখনও মনে রেখেছেন। তিনি চিত্রপরিচালক তপন সিংহ, তরুণ মজুমদার, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, এম এস সথ্যু প্রমুখের ছবিতেও কাজ করেছেন। সিনেমাটোগ্রাফির পাশাপাশি তিনি রূপকলা কেন্দ্রের উপদেষ্টাও ছিলেন। বাংলা তথা বিশ্ব চলচ্চিত্রে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য আমাদের সরকার তাঁকে ২০১২ সালে 'বিশেষ চলচ্চিত্র পুরস্কার' ও ২০১৫ সালে 'চলচ্চিত্র পুরস্কার (সারা জীবনের অবদান)' প্রদান করে। এছাড়া তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ দেশ-বিদেশের বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। তাঁর প্রয়াণে চলচ্চিত্র জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি সৌমেন্দু রায়ের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।'






সত্যজিৎ রায়ের ছবি তৈরির সেই ইউনিটের শেষ জীবিত সদস্য ছিলেন সৌম্যেন্দু রায়। আজ একেবারেই শেষ হল সেই অধ্যায়। দীর্ঘদিন ধরে একাধিক বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন শিল্পী। 


সত্যজিৎ রায়ের ২১টি ছবির প্রত্যেক ফ্রেম দর্শক দেখেছেন সৌম্যেন্দু রায়ের ধরা লেন্সেই। যে তালিকায় অবশ্যই রয়েছে 'পথের পাঁচালি'। ছবির ক্যামেরার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরু করেন, পরে নিজের দক্ষতায় গুণী সিনেম্যাটোগ্রাফার হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। 


আরও পড়ুন: Ziaul Faruq Apurba: টোটা-শান্তনুর সঙ্গে 'চালচিত্র'র কাস্টে যোগ দিলেন ওপার বাংলার অপূর্ব


১৯৬০ সালে, তাঁকে সত্যজিৎ রায়ের 'রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর'-এর ক্যামেরার সম্পূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁদের পেশাগত বন্ধন অটুট ছিল ১৯৯২ সালে, পরিচালকের মৃত্যু পর্যন্ত। তবে কেবল সত্যজিৎ রায়ের ছবিতেই নয়, সৌম্যেন্দু সিনেম্যাটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করেছেন তপন সিন্হা, বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের একাধিক বিখ্যাত ছবিতে। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন


https://t.me/abpanandaofficial