কলকাতা: সদ্য রেকর্ডিং শেষ করেছেন। সেটের আলো তখনও নেভেনি। মাইক, গিটার সরিয়ে একটু জায়গা করে নেওয়া গেল ছোট্ট মঞ্চের ওপরেই। আজ কেউ 'বৃদ্ধাশ্রম' বা 'নীলাঞ্জনা' গাইবার অনুরোধ করেননি তাঁকে। নিজের পছন্দমত গজল শো করেছেন, প্রিয় গান গেয়েছেন। গানের রেকর্ডিং শেষে এবিপি লাইভের ক্যামেরায় শুরু হল নচিকেতা চক্রবর্তী-র গল্পের রেকর্ডিং।



প্রশ্ন: করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বিনোদন জগতে খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আপনার নিজের ভার্চুয়াল শো করতে কেমন লাগে?


নচিকেতা চক্রবর্তী: অনলাইন পারফরমেন্সটা অনেকটা আঙুল দিয়ে ফুটবল খেলার মত। আমায় একটা দুটো ভার্চুয়াল শো করতে হয়েছে ঠিকই। তবে ওইভাবে ঠিক শো হয় না। তবে 'প্লেটুমি'-র এই অনুষ্ঠানটা আমার কাছে খুব বিশেষ।


 


প্রশ্ন: নতুন রেকর্ডিংয়ের অনুষ্ঠানে নচিকেতাকে নতুন করে চিনবেন দর্শক?


নচিকেতা: মানুষ যে গান শুনে অভ্যস্ত বা যে গানগুলো একজন শিল্পীকে বিখ্যাত করে, দর্শক তাঁকে সেই গানের মধ্যেই জড়িয়ে রাখে। আমায় জীবনমুখী গানের ট্যাগ লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার অবস্থা মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কেষ্ট মুখোপাধ্যায়ের মত হয়ে গিয়েছে। প্রথম ছবিতে মাতালের চরিত্রে তাঁর অভিনয় হিট করে গিয়েছে। তারপর সারাজীবন তাঁকে মাতালের চরিত্রেই অভিনয় করতে হল। আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। তবে এই অনুষ্ঠানে আমায় আমার ভালোলাগার গান গাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। যে গান শুনে, শিখে আমি জীবনমুখী গান বানাতে শুরু করেছি, সেই গান গাইতে পেরেছি। আমায় কেউ বলেনি একটা পুরনো বৃদ্ধাশ্রম হয়ে যাক বা নীলাঞ্জনা হয়ে যাক। ৩০ বছর ধরে যত অনুষ্ঠান করছি, তার মধ্যে আজকেরটা মনে থেকে যাবে।



প্রশ্ন: ছকভাঙা গানের সাহস জুগিয়েছিল কোন কোন নাম?


নচিকেতা: অনেকেই আছেন। মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, মৃণাল চক্রবর্তী, হৈমন্তি শুক্ল, নির্মলা মিত্র, আরতি মুখোপাধ্যায় আর সর্বপরি, লতা মঙ্গেশকর, মহম্মদ রফি, গুলাম আলি.. এনাদের সবার থেকেই উদ্বুদ্ধ হয়েছি আমি।


 


 


 


প্রশ্ন: এখন বিভিন্ন রিয়্যালিটি শো অনেককেই স্পটলাইটে নিয়ে এসেছে। সঙ্গীতের জগতেও একাধিক শো হচ্ছে। আপনি নিজে এই বিষয়টাকে কীভাবে দেখেন?


নচিকেতা: এখন যেগুলো হয় সেগুলো রিয়্যালিটি শো নয়। ওগুলো পিচ করা হয়, এডিট করা হয়, যাতে মানুষের শুনতে আর দেখতে ভালো লাগে। অন্য অনেকরকম কায়দা আছে। ওগুলো এক একটা শো। ওর সঙ্গে রিয়্যালিটি শো-এর কোনও সম্পর্ক নেই।


 


প্রশ্ন: সাংস্কৃতিক জগতের বহু মানুষই এখন সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন। আপনার রাজনীতি থেকে সরে থাকাটা কি ইচ্ছাকৃত?


নচিকেতা: রাজনৈতিক মঞ্চে আমি গিয়েছি। সেটা আমার নিজস্ব রাজনৈতিক বোধ থেকে। তবে রাজনীতিটাকে আমি কখনও রুজি বানাতে চাইনি।


 


প্রশ্ন: রাজনীতিতে যোগদানের অফার পেয়েছেন?


নচিকেতা: (হাসি) অফার থাকবে না? অফার থাকবে না? নচিকেতা আমার নাম। এখনও আমার নামে শো হাউজফুল হয়। আর আমার কাছে অফার থাকবে না!


 


প্রশ্ন: সামনেই দুর্গাপুজো, পুজোয় নতুন গান মুক্তি পাচ্ছে?


নচিকেতা: পুজোর গান বলে কিছু হয় না আমার কাছে। আমি যখনই গান গাই তখনই পুজো হয়।