মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: স্বামীর মৃত্যু ও মৃতদেহ নিয়ে চুলোচুলি দুই সতীনের মধ্যে। রীতিমতো টানাটানি চলে সেই দেহ নিয়ে। মৃত্যুর পর পরিবারের হাতে দেহ হস্তান্তর করলেও সতীনের তরজায় দেহ 'বেওয়ারিশ' মেনে ঢুকিয়ে দেওয়া হল মহকুমা হাসপাতালের মর্গে। এমন ঘটনায় হতভম্ব বনেছে পুলিশও।
জানা গিয়েছে, সম্পত্তির লোভে মৃতদেহ নিয়ে টানাটানি চলে দুই সতীনের মধ্যে। যার জেরে ময়নাতদন্তের পরে দেহ হস্তান্তর করেও ফের দুর্গাপুর মহকুমা হাসপতালের মর্গের ভেতর ঢুকলো দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার রামনগরে। সেখানকার বাসিন্দা আটচল্লিশ বছরের বাবলু মাল-এর মৃত্যুর পরই এমন ঘটনা ঘটল।
কী জানা গিয়েছে?
পুলিশ সূত্রে খবর, দু'বার বিয়ে রয়েছে বাবলু মালের। প্রথম পক্ষের স্ত্রী থাকেন বিধাননগরের আম্মা কলোনিতে বাবলু মালের একটি বাড়িতে। আর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী থাকেন দুর্গাপুরের এমএমসি'র শ্রীপল্লীতে। শুক্রবার রাতে দুর্গাপুরে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় বাবলু মালের। এরপর তাঁকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী এবং তাঁর পরিবার।
কিন্তু প্রাণে বাঁচানো যায়নি তাঁকে। শুক্রবার রাত্রে মৃত্যু হয় বাবলু বাবুর। দুর্ঘটনায় মৃত্যু বলে শনিবার ময়নাতদন্তের জন্য দেহ নিয়ে যাওয়া হয় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীকেই দেহ হস্তান্তর করে। কিন্তু ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলেও সেই মৃতদেহ রইল মর্গের ভেতর। কারণ প্রথম পক্ষের স্ত্রীর দাবি দেহ তাঁদের দিতে হবে।
অন্যদিকে, দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর দাবি মৃতদেহ তাঁদের দিতে হবে। কারণ হাসপাতালে ভর্তি তাঁরাই করেছিলেন। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হয় বচসা। এই টানাপোড়েনের জেরে পুলিশও হতভম্ব হয়ে পড়ে। এদিকে, প্রথম পক্ষ বলে তাঁরা দ্বিতীয় পক্ষকে চেনেন না আর দ্বিতীয় পক্ষ বলেন তাঁরা প্রথম পক্ষকে চেনেন না।
তবে কার কাছে থাকতেন বাবলু মাল? মৃত বাবলু বাবুর মায়ের দাবি প্রথম পক্ষের স্ত্রীর কাছেই থাকতেন প্রয়াত ব্যক্তি। শনিবার দুপুর থেকেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো উত্তেজনার পারদ ছড়িয়ে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিধান নগর ফাঁড়ির পুলিশ।