কলকাতা: তাঁকে ফোন করে চরিত্রের বিবরণ শুনিয়েছিলেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য (Anirban Bhattacharya)। তারপর বলেছিলেন, 'বল, এমন চরিত্র তোকে কেউ কখনও অফার করেছে?' সত্যিই তাঁর অভিনয় করা অন্য সমস্ত চরিত্রে থেকে আলাদা। লেডি ম্যাকবেথ। 'মন্দার' এর লায়েলি। এই চরিত্রের জন্যই যেন অপেক্ষা করছিলেন সোহিনী সরকার (Sohini Sarkar)। 'মন্দার' (Mandaar)-এর লালির চরিত্রে অভিনয় তাঁর মনে থাকবে চিরকাল। 


 


প্রশ্ন: 'মন্দার' থিয়েটারের মঞ্চ আর গল্পের মিশেল। এই কাজটার অংশ হতে পেরে কেমন লাগছে?


সোহিনী সরকার: একজন অভিনেত্রী হিসেবে কাজ করে অবশ্যই ভালো লেগেছে। তবে দর্শকের মতামত সবসময় ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আমরা নিজেদের জন্য কাজ করি, কিন্তু তার থেকেও বেশি করি দর্শকদের জন্য। ট্রেলার এবং তারপর যখন সিরিজটা বেরবে সেটা দেখে দর্শক কী বললেন সেই অপেক্ষায় রয়েছি।


 


প্রশ্ন: 'লায়েলি' মেদিনীপুরের গ্রাম্য টানে কথা বলে। ভাষার অনুশীলনটা কীভাবে করলেন?


সোহিনী: আমাদের টিমে উজান বলে একটি ছেলে ছিল। সে মেদিনীপুরে গিয়ে গোটা চিত্রনাট্যটা একজনকে দিয়ে বলিয়ে রেকর্ড করে এনেছিল। আমরা সবাই সেটা শুনে শুনে অভ্যাস করতাম। তারপর অনির্বাণকে পাঠাতাম। ও আবার যা যা বদলাতে হবে বলে দিত, মতামত দিত। এভাবেই অভ্যাস চলেছে অনেকদিন ধরে। তারপর তো একসঙ্গে বসে অভ্যাস করেছিই।


 


প্রশ্ন: অনির্বাণ সহ অভিনেতা ছিলেন, পরিচালক অনির্বাণকে কী নতুন করে চিনলে?


সোহিনী: চিনলাম, কিন্তু তাতে আমি অবাক হইনি। থিয়েটারে ও কাজ দেখেছি। পরিচালক হিসেবে অনির্বাণ খুঁতখুঁতে। আর যে কাজটা ও করছে সব বিষয়ে ওর জ্ঞান প্রচুর। যে বিষয়টা অনির্বাণ জানে না, সেটা নিয়ে ও কাজ করে না। দেবাশীষকে এর আগে কেউ কখনও দেখেনি। আমায় যখন চিত্রনাট্য শুনিয়েছিল, আমি প্রশ্ন করেছিলাম, মন্দারটা কে করবে। ও বলল দেবাশীষ। আমি সঙ্গে সঙ্গে বলেছিলাম, কোন দেবাশীষ। আসলে সবাই একটা পরিচিত মুখ খুঁজি। কিন্তু অনির্বাণ নয়ডা থেকে দেবাশীষকে নিয়ে এসেছিল, কারণ ওর মনে হয়েছিল 'মন্দার'-এর চরিত্রের জন্য ওই সেরা। এতটা ভেবেচিন্তে প্রতিটা কাজ ঠিক করেছে ও। 


 


প্রশ্ন: দেবাশীষ আগে কখনও পর্দায় অভিনয় করেননি। তাঁর বিপরীতে অভিনয় করতে গিয়ে সমস্যা হয়েছে?


সোহিনী: আমি একজন অভিনেত্রী। পর্দায় যে কোনও চরিত্রকে জ্য়ান্ত করে তোলাটা আমার কাজ। আমি যখন দেখছি আমার বিপরীতের মানুষটা নিজের সর্বস্ব দিয়ে অভিনয় করছে, তখন নিজের মধ্যেও আরও ভালো কাজ করার তাগিদটা তৈরী হয়। দেবাশীষ ফ্লোরে থাকা মানেই, খুব কম কথা বলবে, ফোন ঘাঁটবে না। আমার যখনই ইচ্ছা হয়েছে একবার হোয়াটসঅ্যাপটা দেখি, তখনই আমি দেবাশীষকে দেখেছি। কী মন দিয়ে কাজ করছে। তখন আর আমার অভিনয় ছাড়া আর কিছু করার ইচ্ছা হত না। 


 


প্রশ্ন: আপনি নিজে কখনও পরিচালনার কথা ভেবেছেন?


সোহিনী: না কখনও ভাবিনি। বন্ধুবান্ধবরা এত ভালো কাজ করছে, এত ভালো চরিত্র দিচ্ছে, আর কি চাই।


 


প্রশ্ন: এরপর সোহিনী সরকারকে কোন চরিত্রে দেখতে পাচ্ছেন দর্শক?


সোহিনী: সামনেই ওয়েরসিরিজ শ্রীকান্ত মুক্তি পাবে। সেখানে আমার চরিত্রটা একেবারে অন্যরকম। 'হইচই'-এর পরপর দুটো কাজ কিন্তু চরিত্র দুটো একেবারে আলাদা। 


 


প্রশ্ন: লেডি ম্যাকবেথের চরিত্রে অভিনয়ের অফার পেয়ে কেমন লেগেছিল?


সোহিনী: (হাসি) অনির্বাণ ফোন করে চিত্রনাট্য শুনিয়েছিল। তারপর বলেছিল, বল, এমন চরিত্র আগে কখনও কেউ অফার করেছে? সত্যিই কেউ অফার করেনি। একজন অভিনেত্রী হিসাবে কাজটা করে ভীষণ ভালো লেগেছে। তবে ফ্লোরে ভেবেছিলাম পরিচালকের থেকে বকুনি খাব। হয়ত অনির্বাণ যেমন চেয়েছে তেমন অভিনয় করতে পেরেছি বলে আর বকুনি খেতে হয়নি।