মুম্বই: আত্মহত্যা নয়, জীবনকে উপভোগ করার মধ্যেই রয়েছে আনন্দ। হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করা রাঘবকে এই কথাই অনবরত বুঝিয়ে চলেছে অনিরুদ্ধ। অন্যদিকে চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছেন, সাড়া দিচ্ছে না রাঘব। বেঁচে থাকার ইচ্ছাই নাকি চলে গেছে তার! কিন্তু ছেলের মন থেকে আত্মহত্যা প্রবণতাকে মুছে ফেলতে নিজের কলেজ জীবনের গল্প শোনাতে শুরু করেন বাবা অনিরুদ্ধ। তারপর..

হাসির মোড়কে গভীর বার্তা দিয়েছিল সুশান্ত সিংহ রাজপুত অভিনীত 'ছিঁছোড়ে'। সাফল্যের উদযাপনের গল্প ছেড়ে ব্যর্থতাকে কাটিয়ে ওঠার গল্প বলেছিল এই ছবি। কিন্তু যাঁর মুখ দিয়ে দর্শকদের কাছে ব্যর্থতাকে হারিয়ে জীবনে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল 'ছিঁছোড়ে'-এর চিত্রনাট্য, সেই সুশান্তই সিদ্ধান্ত নিলেন অসময়ে জীবনকে থামিয়ে দেওয়ার।

সূত্রের খবর, অবসাদের চিকিত্সা চলছিল সুশান্তের। ডাক্তারি ভাষায় একে বলে ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন। এই মানসিক অসুখে বাড়ে আত্মহত্যা প্রবণতা। সুশান্তের ঘরে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে এমন প্রেসক্রিপশন ও ওষুধ পেয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও কোনও সুইসাইড নোট এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলেই খবর।

সুশান্তের পরিচারক পুলিশকে ফোন করে ঘটনার খবর দেন। দুর্ঘটনার সময় তাঁর কিছু বন্ধুও বাড়িতে ছিলেন বলে জানা গেছে। সকালে উঠে বন্ধুরা সুশান্তকে ডেকেও কোনও সাড়া পাননি। তাঁরা ঘরে ঢুকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান তাঁকে।

কেরিয়ারের ভালো সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন সুশান্ত। শেষবারের মতো বড়পর্দায় এসে শুনিয়ে গিয়েছিলেন বেঁচে থাকার মন্ত্র। ২০১৯ সালে অনিরুদ্ধ পাঠকের মুখ থেকে হস্টেল জীবনের গল্প শুনে বেঁচে থাকার নতুন অর্থ খুঁজে পেয়েছিল অনেক 'লুজার'।  গল্পে আত্মহত্যা প্রবণতা কাটিয়ে রাঘবকে জীবনের মূল ছন্দে ফিরিয়ে আনতে সফল হয়েছিল অনিরুদ্ধ। ছবিতে অনিরুদ্ধ বলেছিল,' জিন্দেগী মে আগর কুছ সবসে জায়দা ইম্পট্যান্ট হ্যায় তো ও হ্যায় খুদ জিন্দেগি।' (জীবনে সবচেয়ে জরুরি যদি কিছু থেকে থাকে তা হল জীবন নিজেই) পর্দায় নিজের বলা কথা ভুলে গিয়ে বাস্তবে নিজেই রাঘবের পথ কেন বেছে নিলেন সুশান্ত? উত্তর খুঁজছেন সবাই।