কলকাতা: সুশান্ত সিংহ রাজপুতের আপ্তসহায়ক ছিলেন দিশা সালিয়ান। আর সুশান্তের মৃত্যুর এক মাসের মধ্যেই মৃত্যু হয় তাঁর। আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মেয়ে আত্মহত্যা করেছে মানতে চাননি দিশার বাবা। তিনি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। ৫ বছর ধরে সেই কেস চলছে। গত ১৭ মার্চ নতুন করে উদ্ধব ঠাকরে, আদিত্য ঠাকরে, দিনো মোরিয়া, সুরজ পাঞ্চোলি, পরমবীর সিংহ, শচীন ভাজে ও রিয়া চক্রবর্তীর নামে মামলা দায়ের করেন রিয়ার বাবা। এই ঘটনায় সেই কারণেই রাজনৈতিক রঙ লেগেছিল। তবে অবশেষে এই মামলার ক্লোজার রিপোর্ট জমা দিল সিবিআই।


কী রইল সেই ক্লোজার রিপোর্টে? সিবিআইয়ের রিপোর্টে রয়েছে সুশান্তের মৃত্যুর ৬ দিন পরেই মালাডের এক ১৪ তলা উঁচু বিল্ডিং থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন দিশা। সুশান্তের আপ্তসহায়ক হিসেবে কাজ করতেন দিশা। মৃত্যুর সময়ে দুটো কাজ তিনি দেখছিলেন। তাঁকা কাজের চাপ ছিল অত্যন্ত বেশি। দিশা তা সামনে উঠতে পারছিলেন না। এর সঙ্গে দিশার প্রেমিক রোহন রাই জানিয়েছেন, দিশার বাবা একটি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে ছিলেন। থানেতে তার মশলা তৈরির কারখানায় একজন মহিলা কর্মচারীর সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, দিশার কষ্টার্জিত অর্থ তাঁর বাবা কার্যত উড়িয়ে দিতেন বলে দাবি করেছেন দিশার প্রেমির রোহন রাই। দিশার বাবা হামেশাই দিশার কাছ থেকে টাকা ধার নিতেন। মুম্বইয়ের একটি ফ্ল্যাটে বাবা মায়ের সঙ্গেই থাকতেন দিশা। তবে দিশার বাবার এই সম্পর্ক ভীষণভাবে আঘাত করেছিল তাঁকে। সেই চাপ দিশা সামলে উঠতে পারেননি। সঙ্গে আর্থিক সমস্যা তো ছিলই।


২০২০ সালের জুন মাসে মৃত্যু হয় সুশান্তের। একই মাসে মারা যান সুশান্তের ম্যানেজার দিশাও। জানা গিয়েছিল একটি বহুতল থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন তিনি। দিশার বাবার অভিযোগ, অত উঁচু থেকে পড়লে মাথার খুলি ফেটে চৌচির হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু তা হয়নি। নাক মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ হওয়ার কথা। সেটাও হয়নি। মৃতদেহ যেখানে পড়েছিল, সেখানে রক্ত জমে থাকার কথা ছিল। তাও পাওয়া যায়নি। অতএব দিশার বাবার দৃঢ় বিশ্বাস, তাঁর মেয়ের মৃত্যু আদৌ আত্মহত্যা নয়। তবে আজ সিবিআই যে ক্লোজার রিপোর্ট জমা দিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে দিশার মৃত্যুতে আদৌ কারও হাত নেই। মানসিক টানাপোড়েনই ছিল তাঁর মৃত্যুর অন্যতম কারণ।