মুম্বই: সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুতে ড্রাগ-কানেকশনে সৌভিক ও মিরান্ডাকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এনসিবি হেফাজতের নির্দেশ। ড্রাগ-যোগ তদন্তে এনসিবি-র এফআইআরে নাম রিয়ারও। রিয়াকেও খুব শীঘ্রই জিজ্ঞাসাবাদ করবে এনসিবি। ড্রাগ-যোগে ধৃত সৌভিক ও মিরান্ডাকে আদালতে পেশ করা হয় আজ।


শুক্রবার এই মামলায় এনসিবি গ্রেফতার করে রিয়া চক্রবর্তীর ভাই সৌভিক ও হাউস ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডাকে। তাঁদের দুজনের সঙ্গে এই মামলায় গ্রেফতার জাইদ, কাইজান ইব্রাহিমকে মুম্বইয়ের সিওন হাসপাতালে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এনসিবি-র ডেপুটি ডিরেক্টর (অপারেশনস) কেপিএস মালহোত্র এ কথা জানিয়েছেন। সূত্রের খবর, তাঁদের সবারই টেস্ট নেগেটিভ এসেছে। শুক্রবার ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর সৌভিককে গ্রেফতার করা হয়।

শুক্রবার  সুশান্ত মৃত্যুতে ড্রাগ-যোগে গ্রেফতারির পর স্বাস্থ্যপরীক্ষার করে রিয়া চক্রবর্তীর ভাই সৌভিক চক্রবর্তী এবং সুশান্তের ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডাকে আজ আদালতে পেশ করে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো । সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, সুশান্তের জন্য সৌভিকের নির্দেশে ড্রাগ কিনতেন মিরান্ডা। ভাইকে ড্রাগ আনতে বলতেন রিয়াই। কতটা ড্রাগ কেনা হয়েছিল, তদন্ত করে দেখছে এনসিবি। ড্রাগ যোগে এখন পর্যন্ত মোট গ্রেফতার ৭ জন।

সুশান্তের পরিবারের দাবি, স্যামুয়েল মিরান্ডাকে নিয়োগ করেছিলেন রিয়া। যদিও, রিয়ার দাবি, মিরান্ডাকে কাজে নিয়োগ করেন সুশান্তের দিদি প্রিয়ঙ্কা।
গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, রিয়া চক্রবর্তীর ফোনে মিরান্ডা সুশি নামে একটি নম্বর সেভ করা ছিল। সেটি স্যামুয়েল মিরান্ডার নম্বর বলেই সন্দেহ। সূত্রের দাবি, এবছর এপ্রিলে সেই নম্বর থেকে রিয়ার কাছে একটি হোয়াটসঅ্যাপ আসে। যেখানে লেখা ছিল, হাই রিয়া। জিনিসটা শেষ। আমরা কি সৌভিকের বন্ধুর থেকে নিতে পারি? তবে ওর কাছে শুধু হ্যাশ ও বড আছে। এই হ্যাশ এবং বাড ড্রাগের নাম।
এই হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট সামনে আসার পরই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, তাহলে কি স্যামুয়েল মিরান্ডাকে রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতেন? তাঁদের মাধ্যমে কি সুশান্তকে ড্রাগের নেশা ধরিয়েছিলেন রিয়া? সূত্রের খবর, সৌভিক এবং স্যামুয়েল মিরান্ডাকে গ্রেফতারের পর রিয়া চক্রবর্তীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবে এনসিবি।
এই নিয়ে সুশান্তকাণ্ডে ড্রাগ কানেকশনে মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করল এনসিবি। এর মধ্যে পাঁচজনই ড্রাগ কারবারি বলে অভিযোগ। ধৃতদের নাম,আব্বাস রামজান আলি লখানি,করণ অরোরা,জায়েদ ভিলাত্রা,কাইজান ইব্রাহিমএবং আব্দুল বাসিত পরিহার।
এনসিবি সূত্রে দাবি, তদন্তে জানা গিয়েছে, রিয়ার সঙ্গে সরাসরি কোনও ড্রাগ ডিলারের যোগাযোগ ছিল না। তিনি সৌভিক এবং সুশান্তের হাউস ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডার মাধ্যমে ড্রাগ আনাতেন। সৌভিকের সঙ্গে ৪-৫ জন ড্রাগ ডিলারের যোগাযোগ ছিল। সৌভিক বললে স্যামুয়েল মিরান্ডাও ড্রাগ এনে দিত।
শুক্রবার ভোরেই রিয়া চক্রবর্তীর বাড়িতে পৌঁছে যায় এনসিবি। রিয়ার বাড়ি ও গাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। সুশান্তের হাউজ ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডার বাড়িতে পৌঁছয় এনসিবিআর আরেকটি টিম। রিয়ার পুরনো মোবাইল ফোন এবং তাঁর ভাই সৌভিকের ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করে এনসিবি।
এরপর সৌভিক ও স্যামুয়েলকে অফিসে তলব করে এনসিবি। শুরু হয় ম্যারাথান জেরা। সূত্রের দাবি, জেরায় সৌভিক স্বীকার করেছেন, তিনি কয়েকবার ড্রাগ আনিয়েছিলেন।জেরায় সুশান্তের হাউস ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডাও স্বীকার করেছেন, তিনি সুশান্তের জন্য ড্রাগ কিনতেন।দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর রিয়া চক্রবর্তীর ভাই সৌভিক ও সুশান্তের হাউস ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডাকে গ্রেফতার করে এনসিবি।