নয়াদিল্লি: হিন্দি সিনেমার উদীয়মান তারকা সুশান্ত সিংহ রাজপুত আর নেই। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে মুম্বইয়ের বান্দ্রায় নিজের বাসভবনে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। কেন নিজের জীবনে আচমকা এই ছেদ সুশান্ত টেনে দিলেন? এ ব্যাপারে এখনই নির্দিষ্টভাবে কোনও কিছু জানা যায়নি। অভিনেতার আকস্মিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া চলচ্চিত্র মহলে।
খুবই প্রাণবন্ত ছিলেন সুশান্ত। তাঁর দিলদরিয়া মেজাজের কথা ঘনিষ্ঠ মহলে সবারই জানা ছিল। ১৯৮৬-র ২১ জানুয়ারি বিহারের পূর্ণিয়া জেলায় ছোট্ট একটি গ্রাম মলডিহাতে তাঁর জন্ম। এমন একটি গ্রাম থেকে বলিউড পর্যন্ত সফর একেবারেই সহজ কাজ ছিল না। কিন্তু কঠোর পরিশ্রম ও ভালো কিছু করার জেদে সমস্থ প্রতিকূলতা, মুশকিল পরিস্থিতিকে পিছনে ফেলেন তিনি।
সুশান্তর বাবা কেকে সিংহ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিক। মা ২০০২ সালেই প্রয়াত হয়েছিলেন। বাবা-মায়ের কনিষ্ঠ সন্তান ছিলেন সুশান্ত। জানা গেছে, সুশান্তর চার দিদি। তাঁদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। সুশান্তর এক দিদি রাজ্য পর্যায়ের ক্রিকেটারও ছিলেন।
সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে বলিউডে পৌঁছে গিয়েছিলেন সুশান্ত। কিশোর কালে হারিয়ে যাওয়া মায়ের অভাব খুবই অনুভব করতেন সুশান্ত। সোশ্যাল মিডিয়ায় মাকে স্মরণ করে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতেন তিনি। কিছুদিন আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মায়ের ছবি শেয়ার করে আবেগবিহ্বল পোস্ট করেছিলেন তিনি। আর ওটাই ছিল তাঁর শেষ পোস্ট।




ছবি সৌজন্যে সোশ্যাল মিডিয়া
পটনার সেন্ট কারেন্স স্কুল ও দিল্লির কুলাচি হংসরাজ মডেল স্কুলে পড়াশোনা সুশান্তর। এরপর দিল্লির টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। যদিও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়াশোনা সম্পূর্ণ করতে পারেননি তিনি। মাঝপথেই পড়া ছেড়ে দেন।
২০০৮-এ কিস দেশ মে হ্যায় মেরা দিল সিরিয়ালের মাধ্যমে টেলিভিশন দুনিয়ায় আত্মপ্রকাশ ঘটে তাঁর। এরপর পবিত্র রিস্তা সিরিয়ালে মূল চরিত্রে অভিনয়। এর মাধ্যমে ছোট পর্দার বড় তারকা হয়ে ওঠেন তিনি।



সুশান্তর বোনেরা-  ছবি সৌজন্যে সোশ্যাল মিডিয়া
কাই পো চে-র মাধ্যমে বড়পর্দায় অভিষেক সুশান্তর। প্রথম সিনেমাই বক্স অফিসে সাফল্য পেয়েছিল। গত বছরের ছিছোরে ছিল তাঁর শেষ সিনেমা। বক্স অফিসে সফল হয়েছিল ওই সিনেমা।
জানা গেছে, সুশান্ত সিংহ রাজপুতের সঙ্গে ছিলেন তাঁর বন্ধু। রাতে তাঁরা যে যাঁর কামরায় ঘুমোতে চলে যান। এদিন সকাল ১০ টায় সুশান্তকে জুসের গ্লাস হাতে দেখেন পরিচারক।সুশান্তকে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করতেও দেখেন পরিচারক। দুপুর ১২ টা নাগাদ পরিচারক দরজার কড়া নাড়েন। সুশান্তর বন্ধুও দরজায় ধাক্কা দেন।সাড়া না পেয়ে ফোন করেন সুশান্তর বন্ধু, মেলেনি জবাব।জবাব না মেলায় দরজা ভাঙার চেষ্টা করা হয়।এরপর এক চাবিওয়ালাকে ডেকে দরজা খোলা হয়। ‘দরজা খুলে সুশান্তকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ঘর থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়নি।ঘর থেকে উদ্ধার অবসাদ ও হাইপার টেনশনের প্রেসক্রিপশন-ওষুধ।