কলকাতা: অভিনয়ে পা রাখা, গ্ল্যামারের ঝলকানি, বৈভব যেন চোখ ধাঁধিয়ে দেয় তরুণ অভিনেতা অভিনেত্রীদের। বড় বাড়ি, গাড়ি, পরিচিতি.. কিন্তু সেখান থেকে বিচ্যুতি কি ততটাই স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে পারেন সবাই? সদ্য় টলিউডে ঘটে যাওয়া ৩ অভিনেত্রী মডেলের মৃত্যু যেন নতুন করে সামনে নিয়ে এল আলোর দুনিয়ার অন্ধকার প্রশ্নগুলোকে। পল্লবী দে, বিদিশা মজুমজার এবং মঞ্জুষা নিয়োগী.. এই তিন অভিনেত্রী মডেলের অকালে চলে যাওয়া যেন প্রশ্ন রেখে গেল, ক্য়ামেরার ফ্ল্যাশের মতোই খ্যাতির ঝলকানি সামলানো কী সহজ?
২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে টলিউডে কাজ করছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (Swastika Mukherjee)। বর্তমানে কী রুপোলি পর্দার অভিনেতা অভিনেত্রীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে? স্বস্তিকা বলছেন, 'আমি প্রচুর মানুষকে ইন্ডাস্ট্রিতে আসতে দেখলাম, প্রচুর খ্যাতি দেখলাম আবার ততটাই তাড়াতাড়ি তাদের নিভে যেতেও দেখলাম। আমার মনে হয় এরা অভিনয়কে ভালোবেসে অভিনয় করা, টিঁকে থাকার লড়াইতে নাম লেখাতে চায় না। ১০ বছর পরে আমি নিজেকে কোথায় দেখতে চাই এই দূরদৃষ্টি নিয়ে তারা অভিনয়ে আসছে না। আসছে চটজলদি খ্যাতির লোভে। আমি অডি কিনব, বিএমডব্লু কিনব, বড় ফ্ল্যাটে থাকব..ব্যাস আমার জীবন তৈরি। এটা হল গ্ল্যামার জগতের ধ্বংসাত্বক দিক। চারটে লোক বাজারে চিনলেই যেন রাজ্য জয় করে ফেলেছে। আমার এদের কাউকে দেখে মনে হয় না যে এরা অভিনয়কে ভালোবেসে এসেছে। যদি অভিনয়ের উন্নতি দেখা না যায়, প্রকাশ না পায়, তাহলে তারা কী শিখল!'
আরও পড়ুন: Swastika Mukherjee Exclusive: বাবার মৃত্যুর দিনও শ্যুটিং বাতিল করতে পারিনি
তারকা সন্তান হয়েও কখনও অসফলতার মুখোমুখি হয়েছেন স্বস্তিকা? অভিনেত্রী বললেন, 'এখনও হই। 'পাতাললোক'-এর মতো সিরিজে বা দিল বেচারার মতে ছবিতে অভিনয় করার পরেও শেষ ১ বছরে আমি মুম্বইতে ১১টা কাজের জন্য অডিশন দিয়েছিলাম। সেই ১১টা কাজই হয়নি। একটা দুটো নয়, ১১টা কাজ। স্টুডিওতে গিয়ে অডিশন দিয়েছি, শ্যুট করে পাঠিয়েছি, তার পরেও সুযোগ পাইনি। আমার জায়গায় সেই অভিনয়টা অন্য কেউ করেছেন। আমার পরিচিত বন্ধুবান্ধবরাও করেছে। আমি পরে দেখে বুঝেছি, এই সিনটারই তো অডিশান দিয়েছিলাম। তার মানে কী আমার সব শেষ? কাজটা দেখার পর যাঁরা আমার অডিশান নিয়েছিল তাঁদের ফোন করে জানতে চেয়েছি, আমার মধ্যে কী কী খামতি ছিল। কারণটা জানতে চেয়েছি যাতে আমি সেটা নিয়ে কাজ করতে পারি। আমি অভিনয়টাই করতে চেয়েছি। দামি গাড়ি, বাড়ি, জামা নিয়ে কোনোদিন ভাবিইনি।'