কলকাতা: কলকাতার বুকে একটা বস্তি, আর সেখানে থাকা কিছু মানুষের লড়াইয়ের গল্প। সেই লড়াইয়ের রসদ যোগায় সুর, মিউজিক। চেনা কলকাতার বুকে থাকা সেই অচেনা জগতের খোঁজ পেয়ে যায় জয়ী। তারপর? সুর, র‌্যাপ, থেকে শুরু করে অপরাধ জগত, বাঁচবার ইচ্ছা... 'ট্যাংরা ব্লু'জ'-এর গল্পের মোড়কে পাওয়া যাবে সেই উত্তর। পরিচালক সুপ্রিয় সেনের নতুন ছবির জন্য এই প্রথমবার রুপোলি পর্দায় জুটি বাঁধলেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ও মধুমিতা সরকার। 


মুম্বইয়ের উঠতি সঙ্গীত পরিচালক জয়ী। গানে মজে, গান ভালোবাসে সে। আর মধুমিতা? ছোটবেলা থেকে তাঁর তিনটি ভালোলাগা। কাজ, ভ্রমণ আর গান। অভিনেত্রী বলছেন, 'আমি যে কোনও রকম গান শুনতে ভালোবাসি। যেমন গানের কথা আমায় টানে, তেমনই টানে ইনস্ট্রুমেন্টাল মিউজিক। সেইদিক থেকে ট্যাংরা ব্লু'জ এমন একটা ছবি যার প্রাণই মিউজিক। এমন একটি ছবির অংশ হতে পারা আমার কাছে খুব বড় ব্যাপার।' আর পরমব্রতর সঙ্গে জুটি বাঁধার অভিজ্ঞতা? মধুমিতা হেসে বললেন, 'যতক্ষণ না বড়পর্দায় নিজেকে পরমদার সঙ্গে দেখতে পাচ্ছি আমার যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না। আমি ভিন্ন স্বাদের কাজ করতে চেয়েছি সবসময়। আর এখন সেই সুযোগগুলোও পাচ্ছি। তার ওপর এমন কো-স্টার। এর থেকে ভালো আর কী হতে পারে!'


ট্যাংরায় থেকে শ্যুটিং করতে হত। বস্তি এলাকার অলিতে-গলিতে ঘুরতে ঘুরতে মধুমিতা ভাবতেন, কলকাতার মধ্যেও এমন একটা জায়গা থাকতে পারে? গল্পের 'জয়ী' বলছেন, 'শ্যুটিং-এ ঠাসা কাজ থাকত। ট্যাংরায় যখন শ্যুট করতাম, দেখতাম সব অদ্ভুত অদ্ভুত বাড়ির গঠনশৈলী, রাস্তাঘাট... অন্য চোখে চিনেছি জায়গাটাকে। আর আমাদের টিমটা ভীষণ ভালো ছিল। ডিওপি রঞ্জন পালিত স্যারের সঙ্গে ছবি বানানো নিয়ে প্রচুর কথা বলতাম। সুপ্রিয় স্যারের থেকেও অনেক কিছু শিখেছি।'


আরও দেখুন


বস্তির জীবনেও এত সুর! শুনেই সিনেমা বানানোর স্বপ্ন দেখেন পরমব্রত


 


'পাখি' থেকে 'ইমন', 'চিনি' থেকে 'জয়ী'। প্রত্যেকবার নিজের ইমেজ ভাঙছেন মধুমিতা। কতটা চ্যালেঞ্জিং এই ভাঙা গড়াটা? 'ভগবান করুন, আমি যেন চিরজীবন এই ভাঙা গড়াটার মধ্যেই থাকতে পারি।' হাসলেন মধুমিতা। তারপর বললেন, 'ধারাবাহিক থেকে সিনেমায় অভিনয়, একটা জিনিস সবসময় মাথায় রাখি, যেন আমার আগের চরিত্রের সঙ্গে নতুন চরিত্রের কোনও মিল না থাকে। যদি দিন যাবে কাজটা কঠিন হবে আর আমার খিদেটাও বাড়তে থাকবে।' এমন কোনও চরিত্র রয়েছে যাতে অভিনয় করার স্বপ্ন দেখেন? নায়িকা বললেন, 'আমার অনেকদিন ধরে ডার্ক সেডের চরিত্রে অভিনয় করার ইচ্ছে। আমার চেহারা দেখে হয়ত মিষ্টি মেয়ে, প্রেমিকা বা কলেজ পড়ুয়ার চরিত্র দেওয়াটা খুব সহজ। কিন্তু আমি চাই সম্পূর্ণ বিপরীত কোনও চরিত্র যেটা আমার চেহারার সঙ্গে মানায়ই না। সেটা কোনও সিরিয়াল কিলার বা সাইকো হতে পারে। দর্শক দেখে মনে করবে, মধুমিতা এমনও হতে পারে! এমন কোনও অভিনয় করার জন্য আমি মুখিয়ে থাকব।' বলিউডে কার সঙ্গে অভিনয় করার স্বপ্ন রয়েছে? 'আমির খান। ওনার কোনও ছবিতে একটা সিনের জন্য যদি থাকতে পারি...। তবে আমার প্রিয় অভিনেতা ছিলেন ইরফান খান। এখনও তাই..।' একটু থামলেন মধুমিতা।


শ্যুটিং সেটের সবচেয়ে মজার ঘটনা? 'উল্টোদিকে মঞ্চ তৈরি চলছে, আর আমি আমার ব্যান্ড মেম্বারদের সঙ্গে বিট বক্সিং করছি.. বুম...বুম... বুম.. বুম...'