কলকাতা: উৎসবের আনন্দে গা ভাসিয়েছেন আপামর বাঙালি। বাদ গেলেন না প্রখ্যাত লেখিকা তসলিমা নাসরিনও। মণ্ডপে প্রতিমাদর্শন করতে গিয়ে নিজের অনুভূতিও তুলে ধরলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। জানালেন, হিন্দু সংস্কৃতিই বাঙালি সংস্কৃতি। যে ধর্ম বা দর্শনেই বিশ্বাসী হোক না কেন বাঙালি, তাঁদের জাতিসত্তা একটিই, ভারতীয়। কিন্তু তসলিমার মন্তব্যের একটি বিশেষ অংশের বিরোধিতা করলেন প্রখ্যাত কবি তথা গীতিকার জাভেদ আখতার। (Taslima Nasreen)

Continues below advertisement

দুর্গাপ্রতিমা দর্শনের কিছু ছবির সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি লেখা পোস্ট করেন তসলিমা। তিনি লেখেন, ‘লুকোছাপার কিছু নেই, হিন্দু সংস্কৃতিই বাঙালি সংস্কৃতি। আমরা যারা বাঙালি, যে ধর্ম বা দর্শনই বিবর্তনের পথ ধরে বিশ্বাস করি না কেন, আমাদের জাতিসত্তা ভারতীয়। ভারতের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলমান এবং ধর্মে অবিশ্বাসী সকলের, অথবা প্রায় সকলের, পূর্ব-পুরুষ আর পূর্ব-নারী ভারতীয় হিন্দু’। (Javed Akhtar)

তসলিমা আরও লেখেন, ‘বাঙালি যদি মুসলমান হয়, তবুও তার সংস্কৃতি আরবের সংস্কৃতি নয়। তার সংস্কৃতি ভাঙালি সংস্কৃতি, যেটি মূলত হিন্দু সংস্কৃতি। এই ঢাকঢোল, এই নাচগানই বাঙালির আদি সংস্কৃতি। এটিই বাঙালিত্ব। এটিকে অস্বীকার করা মানে নিজেকে অস্বীকার করা’।

Continues below advertisement

ফেসবুকের পাশাপাশি মাইক্রোব্লগিং সাইট X-এও ওই লেখাটি পোস্ট করেন তসলিমা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তাঁর ওই লেখার প্রেক্ষিতে নিজের মতামত জানান জাভেদ। তিনি লেখেন, ‘আমরা, অওধের লোকজন বাঙালি সংস্কৃতি, ভাষা এবং সাহিত্যকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করি। কিন্তু গঙ্গা-যমুনা-অওধ সংস্কৃতির শিষ্টাচার এবং পরিশীলিত ভাবকে সম্মান করতে, তা অনুভব করতে না পারেন, সেটা সম্পূর্ণ রূপে তাঁরই ক্ষতি। এই সংস্কৃতির সঙ্গে আরবের কোনও সংযোগ নেই। হ্যাঁ, পারস্য এবং মধ্য এশিয়ার সংস্কৃতি ও ভাষা আমাদের সংস্কৃতি ও ভাষাতেও ঢুকে পড়েছে, পশ্চিমি সংস্কৃতির মতোই, কিন্তু গোটাটাই আমাদের নিজেদের শর্ত অনুসারে হয়েছে। আর একটা কথা, অনেক বাঙালি পদবীই কিন্তু পারসিক’।

তবে শুধুমাত্র জাভেদই নন, সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তসলিমার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। মহাভারতে বাঙালি জাতিকে 'ম্লেচ্ছ' বলে উল্লেখ করার কথা স্মরণ করিয়ে দেন কেউ। বাঙালি সংস্কৃতি আসলে বৌদ্ধ সংস্কৃতি থেকে এসেছে বলেও জানান কেউ কেউ।