কলকাতা: ৪০ মিনিটের এই সল্পদৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্র জুড়ে আঁকা হয়েছিল মানুষ ও বন্যপ্রাণীদের ভালবাসা আর বন্ধনের ছবি। সেই রসায়ন এতটাই মন ছোঁয়া, যা দেশকে এনে দিল শ্রেষ্ঠ সম্মান। অস্কার (Oscar)। ছবির নাম, 'দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স' (The Elephant Whisperers)। বোমান ও বেইলি, দক্ষিণী এই দম্পতির দুই শিশু হাতিকে রক্ষা করার গল্প বলা হয়েছে এই সল্পদৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্রে। কার্তিকি গঞ্জালভেস (Kartiki Gonsalves) পরিচালিত, গুণীত মোঙ্গা (Guneet Monga) প্রযোজিত ছবিটিতে বিশ্বের দরবারে সম্মানিত হলেও এই ছবির যাঁদের জীবন নিয়ে তৈরি, তাঁরা যেন রয়েছেন একটু আড়ালেই। 


বোমান ও বেইলি তামিলনাড়ুর মুডুমালাই ন্যাশানাল পার্ক (Mudumalai National Park)-এ থাকেন। বোমান মাহুত পরিবারের সদস্য। দুই হাতির শিশুর দায়িত্ব নেওয়ার আগে বন্য পশুদেরই দেখাশোনা করতেন তিনি। এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন হাতির ক্যাম্পে কাজ করতেন তিনি। অন্যদিকে বন্যপ্রাণীদের ভয় পেতেন বেইলি। তাঁর প্রাক্তন স্বামী বাঘের হাতে নিহত হয়েছিলেন। এরপর তাঁকে শিশু হাতিদের দেখাশোনার কাজে নিয়োগ করা হয়। সেখান থেকেই বেইলির আলাপ হয় বোমানের সঙ্গে। এরপর ভালবাসা আর তারপর বিয়ে।


২০১৭ সালে তাঁরা দেড় বছরের একটি ছেলে শিশু হাতির দেখাশোনা করার দায়িত্ব নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর নাম দেন রঘু। তাকে নিয়েই গড়ে ওঠে ৩ জনের সংসার। মানুষ আর বন্য প্রাণীর এক অদ্ভুত ভালবাসার গল্প। এরপরে তাঁদের পরিবারে আসে আরও এক নতুন সদস্য। ছোট্ট এক মেয়ে শিশু হাতি, তার নাম দেওয়া হয় আম্মু। ধীরে ধীরে রঘু বড় হয়ে ওঠে। এরপর রঘুকে অন্য আরেকজন মাহুতের কাছে দিয়ে দেওয়া হয়। 


আরও পড়ুন: The Elephant Whisperers: অস্কারের মঞ্চে সেরা 'দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স', অনলাইনে কোথায় দেখবেন এই ছবি?


রঘুর বিচ্ছেদ বোমান ও বেইলির জন্য হৃদয়বিদারক। এমনকি মুষড়ে পড়েছিল আম্মুও। আপাতত থেপ্পাকাডু এলিফ্যান্ট ক্যাম্পে (Theppakadu Elephant Camp) ৫ বছরের আম্মুকে নিয়ে থাকেন বোমান ও বেইলি।


এই ছবিটি জনপ্রিয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম 'নেটফ্লিক্স'-এ (Netflix) দেখতে পাবেন। ৮ ডিসেম্বর ২০২২ সালে নেটফ্লিক্সেই মুক্তি পায় ছবিটি। অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস ছাড়াও এই ছবি নিউ ইয়র্কের বার্ষিক ডক্যুমেন্টারি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল 'ডক এনওয়াইসি'তে শর্টলিস্টেড হয়েছিল। 'মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস'-এর 'হলিউড মিউজিক'-এ এই ছবির আবহ মনোনীত হয়েছিল। এছাড়া 'আইডিএ ডকুমেন্টারি অ্যাওয়ার্ডস'-এ 'বেস্ট শর্ট ডকুমেন্টারি' বিভাগে মনোনয়ন পায় এই ছবি।