কলকাতা: নতুন সিনেমা নিয়ে আসছেন অভিনেত্রী তনুশ্রী চক্রবর্তী (Tnusree Chakraborty)। এম/এস সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী প্রোডাকশনের ব্যানারে আসছে নতুন সিনেমা, 'পরী-মণি'। গল্পের বিষয়বস্তু মূলত ভৌতিক হলেও, তার আড়ালে একটি সামাজিক বার্তা দেবে এই সিনেমার গল্প। ছবির মুখ্যভূমিকায় দেখা যাবে তনুশ্রীকে। অন্যান্য ভূমিকায় রয়েছেন, রজতাভ দত্ত, দেবরাজ ভট্টাচার্য ও প্রজ্ঞা গোস্বামী। সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী ও সৌভিক দের যৌথ প্রযোজনায় আসতে চলেছে এই সিনেমা। ছবির গল্প সিদ্ধার্থ চক্রবর্তীর লেখা।

এই চলচ্চিত্র এক সামাজিক হরর গল্প, যেখানে ভয়, ভালবাসা, অপরাধবোধ, দায়িত্ববোধ এবং জীবনের হাহাকার একসঙ্গে মিশে যায় এক শৈল্পিক প্রকাশে। ঘটনাটি ঘটে এক সাধারণ ঘরের মধ্যে, কিন্তু সেই ঘরের দেওয়াল যেন লুকিয়ে রেখেছে এক অসাধারণ অতীত — এক মা, এক কন্যা, এবং সেই শিশুর অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র পরী — একটি কিশোরী মেয়ে । এই চলচ্চিত্র তুলে ধরে এক মায়ের মানসিক বিপর্যয়, নারীর চেতনার বিকৃতি, এবং সমাজের নীরব নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে এক বিদ্রোহ। পরী মণি শুধু একটি সিনেমা নয় — এটি এক প্রতিরোধের কণ্ঠস্বর, এক নিঃশব্দ আর্তনাদের প্রতিচ্ছবি, যা ভয়ের ভাষার মধ্যে দিয়েও মানুষই অসহায়তার বিষের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলে, এমনটাই জানাচ্ছেন পরিচালকেরা। 

নতুন সিনেমা নিয়ে তনুশ্রী বলছেন, 'পরী মণি' আমার জন্য খুব একটি বিশেষ ছবি। এটি একটি হরর-থ্রিলার সিনেমা। আমার চরিত্রটির অনেক রং আছে, এবং এটা নিঃসন্দেহে আগের কাজগুলোর থেকে আলাদা। গল্পটা দারুণভাবে গাঁথা হয়েছে। আমরা ছবিটা শুট করেছি একটি অনবদ্য প্রাকৃতিক লোকেশনে। রনি দা অসাধারণ কাজ করেছেন। শিশুটিও দুর্দান্ত – এক দারুণ আবিষ্কার। ওর সঙ্গে কাজ করে খুবই ভালো লেগেছে। পরিচালকদ্বয় জানেন তারা কী চাইছেন, তাঁদের দৃষ্টি পরিষ্কার, এবং কাজের প্রতি তাঁদের প্রতিশ্রুতি অসাধারণ। তাঁদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল সত্যিই খুব ভাল।'

ছবিটি নিয়ে দুই পরিচালক বলছেন, 'পরী মণি'-র শুরু হয়েছিল একটি হরর গল্প হিসেবে, কিন্তু যখন আমরা গল্পটি গঠন করতে শুরু করি, তখন বুঝলাম এটি আসলে আমাদের সমাজেরই প্রতিফলন — যেখানে আসল ভয় অনেক সময় লুকিয়ে থাকে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিকতার আবরণের নিচে। এই ছবির মাধ্যমে আমরা অতিপ্রকৃতির শিহরণ ও এক কঠিন সামাজিক বাস্তবতাকে একসঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করেছি — সেই বাস্তবতা, যা প্রায়শই অবহেলিত বা চুপ করিয়ে দেওয়া হয়। আমাদের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র দর্শককে ভয় দেখানো নয় — বরং তার ভিতরে কিছু নাড়া দেওয়া, একটি প্রশ্ন তোলা, অস্বস্তির জন্ম দেওয়া, কিংবা একটি উপলব্ধি করানো। "পরী মণি" এক রহস্যময় গল্প, তবে তার থেকেও বেশি — এটি একটি সতর্কবার্তা, যে আমাদের সবচেয়ে ভয়ের বিষয়গুলো অনেক সময় আমাদের সবচেয়ে কাছের জায়গা থেকেই উঠে আসে।'