মুম্বই: ‘উড়তা পঞ্জাব’ বিতর্কে কঠোর অভিমত জানাল বম্বে হাইকোর্ট। তাদের স্পষ্ট বক্তব্য, কোনও সিনেমা পরিচালককে তাঁর ছবির বিষয়বস্তু নিয়ে নির্দেশ দেওয়ার এক্তিয়ার নেই কারও। তাঁর ছবির বিষয় কী হবে, সে ব্যাপারে কেউ তাঁকে ফরমান দিতে পারে না।


পঞ্জাবের মাদক পাচার, চোরাচালানের সমস্যার পটভূমিতে তৈরি হওয়া ছবিটিতে এমন কিছু দেখানো হয়নি যাতে ওই রাজ্যের ভাবমূর্তি খারাপ হবে বা দেশের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা নিয়েও কোনও প্রশ্ন তোলা হয়নি ছবিতে, বলেছেন বিচারপতিরা। সামগ্রিকভাবে সিবিএফসি-র বক্তব্য নাকচ করে দিয়েছে আদালত।

সিবিএফসি-কে বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা ছবিটিকে মাত্র একটি দৃশ্য ছেঁটে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ছাড়পত্র দিতে বলেছে আদালত, যাতে ১৭ জুন নির্ধারিত দিনেই ছবিটি মুক্তি পায়। পাশাপাশি ছবি থেকে প্রকাশ্যে মূত্রত্যাগের দৃশ্যটি বাদ দিতে নির্দেশ দিয়েছে ছবির নির্মাতাদেরও। ডিসক্লেমার সংশোধন করতে বলেছে তাদের।

তবে আদালতের এদিনের যে বক্তব্যটি সিবিএফসি-কে অস্বস্তিতে ফেলবে, তা হল, সিনেমাটোগ্রাফ আইনে সেন্সর শব্দটিকেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ফলে ছবিতে কাঁচি চালানোর কোনও আইনি এক্তিয়ারই নেই সিবিএফসি-র। আদালতের বক্তব্য, সিবিএফসি-র সিনেমার দৃশ্য কাটছাঁট করা, বাদ দেওয়া বা অদলবদল ঘটানোর ক্ষমতার সঙ্গে অবশ্যই দেশের সংবিধানের সংশ্লিষ্ট ধারা ও সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সঙ্গে সাযুজ্য থাকতে হবে। সিবিএফসি-কে ‘ঠাকুমা-সুলভ’ মনোভাব ছেড়ে সময়ের সঙ্গে নিজেদের বদলাতে পরামর্শ দিয়েছে বিচারপতি এস সি ধর্মাধিকারী ও বিচারপতি শালিনী ফানসালকর-জোশির ডিভিশন বেঞ্চ। বলেছে, শিল্প সংক্রান্ত বিষয়ে বোর্ডের অতিরিক্ত সংবেদনশীল হওয়া উচিত নয়। সৃজনশীল মানুষকে বাধা দিতে পারে না সিবিএফসি। কেননা তা হলে তাঁরা হতাশ হবেন, মার খাবে সৃষ্টিশীলতা। আজকাল ছবি পরিচালকরা খুব নির্মম, সাহসী, স্পষ্টবক্তা। কিন্তু এজন্য তাঁদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করা উচিত নয়।

সিবিএফসি-র রিভাইসিং কমিটি ‘উড়তা পঞ্জাব’ ছবিটিতে বেশ কিছু পরিবর্তন করতে বলেছে। যেমন, ছবি থেকে ‘পঞ্জাব’ শব্দটিই বাদ দিতে হবে। এর বিরুদ্ধেই ছবির নির্মাতা ফ্যানটম ফিল্মস বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়।

গতকাল অবশ্য সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যান পহলাজ নিহালনি জানিয়ে দেন, ১৩টি দৃশ্য ছেঁটে এ ক্যাটাগরিতে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ‘উড়তা পঞ্জাব’কে। তিনি বলেন, বোর্ডের ৯ জন সদস্য ছবিটি দেখে ১৩টি দৃশ্য বাদ দিয়ে সর্বসম্মত ভাবে ছাড়পত্র দিয়েছে। সিবিএফসি-র কাজ শেষ। এবার ছবির প্রযোজক আদালত বা ট্রাইব্যুনালে যাবেন কিনা, সেটা তাঁর ব্যাপার। যা নির্দেশ আসবে, আমরা পালন করব।