মুম্বই: 'ডার্টি পিকচার' (Dirty Picture), 'ভুল ভুলাইয়া' (Bhool Bhulaiyaa), 'শকুন্তলা দেবী' (Shakuntala Devi), একের পর এক হিট ছবি, দুর্দান্ত অভিনয়, যে কোনও চরিত্রে সাবলীল। তিনি বিদ্যা বালান (Happy Birthday Vidya Balan)। আজ বলিউডের এই তারকা অভিনেত্রীর জন্মদিন। ৪৪ বছরের অভিনেত্রীর জন্মদিনে জানা যাক তাঁর সম্পর্কে ১০ অজানা তথ্য।
তামিল ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান
বিদ্যা বালান জন্মগ্রহণ করেন মুম্বইয়ের এক তামিল ব্রাহ্মণ পরিবারে। কেরলের পালাক্কড়ে তাঁদের আদি বাড়ি। পি.আর. বালান ও সরস্বতীর দ্বিতীয় ও ছোট মেয়ে। বাড়িতে তিনি তামিল ও মালয়লম মিশ্রিত ভাষা বলে বড় হয়েছেন।
ছোট থেকেই অভিনয়ে মন
ছোট থেকেই মনে মনে অভিনেত্রী হওয়ার বাসনা ছিল বিদ্যার। শাবানা আজমি, শ্রীদেবী, মাধুরী দীক্ষিতের মতো অভিনেত্রীদের কাজ দেখে তিনি উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন।
ছোটপর্দার হাত ধরে অভিনয় শুরু
জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেত্রী তাঁর অভিনয়ের পথচলা শুরু করেছিলেন ছোটপর্দা থেকে। একতা কপূরের ধারাবাহিক 'হাম পাঁচ'-এ অভিনয় শুরু করেন মাত্র ১৬ বছর বয়সে। চরিত্রের নাম ছিল রাধিকা। তবে বড়পর্দায় অভিনয়ের জন্য ধারাবাহিকের কাজ ছাড়েন।
মালয়লম ইন্ডাস্ট্রিতে অসাফল্য
মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজতত্ত্বে স্নাতকোত্তর পড়ার সময় বিদ্যা বালানের কাছে মালয়লম তারকা মোহনলালের বিপরীতে প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের অফার আসে। প্রজেক্টের নাম 'চক্রম'। ছবির প্রথম দফার কাজ শেষ করেন অভিনেত্রী। একইসঙ্গে প্রায় এক ডজন ছবিতে সই করেন তিনি। কিন্তু তারপর প্রযোজনার কোনও সমস্যার কারণে 'চক্রম'-এর কাজ বন্ধ হয়ে যায়, ও বিদ্যার গায়ে 'অশুভ' তকমা সেঁটে দেওয়া হয়। তাঁর একমাত্র সম্পূর্ণ শেষ করা মালয়লম ছবি 'কলরি বিক্রমণ' কিন্তু সেই ছবিও মুক্তি পায়নি।
ফিরিয়ে দেয় তামিল ইন্ডাস্ট্রিও
শুধু মালয়লম ছবিই নয়, তামিল সিনে দুনিয়াতেও বিশেষ লাভ করতে পারেননি তিনি। একাধিক সম্মানীয় কাজ তাঁর হাতে আসে, যার মধ্যে মাধবনের 'রান' অন্যতম। এই ছবি ব্লকবাস্টার হিট হয়। কিন্তু ছবি থেকে বিদ্যাকে সরিয়ে দেওয়া হয়, এবং তাঁর বদলে মীরা জ্যাসমিনকে সুযোগ দেওয়া হয়। এরপর 'বালা' ছবি থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয় ও তার বদলে মীরা জ্যাসমিনকে সুযোগ দেওয়া হয়। এরপর 'মানাসসেল্লম' ছবিতেও তাঁকে নিয়ে পরে তৃষাকে নেওয়া হয় তাঁর বদলে।
অজস্র বিজ্ঞাপনী ছবিতে কাজ
দক্ষিণী ছবিতে একের পর এক অসাফল্যের পর বিদ্যা বালান সিদ্ধান্ত নেন বিনোদন জগতের সঙ্গে বিজ্ঞাপনী ছবির মাধ্যমে নিজের সংযোগ রাখবেন। সিনেমায় বড় ব্রেক পাওয়ার আগে প্রায় ৬০টি বিজ্ঞাপনী ছবিতে কাজ করেছেন তিনি।
'পরিণীতা'র ললিতা হয়ে ওঠা
বাংলা ছবি 'ভাল থেকো'তে ডেবিউ করার পর বিদ্যা বালান 'পরিণীতা' ছবির জন্য অডিশন দেন পরিচালক প্রদীপ সরকারের সুপারিশে। যদিও প্রযোজক বিধু বিনোদ চোপড়া তৎকালীন এক তাবড় অভিনেত্রীকে ললিতার চরিত্রে কাস্ট করতে চেয়েছিলেন। তবে প্রায় ৬ মাস ধরে বিদ্যা বালানের একাধিক অডিশন ও স্ক্রিন টেস্টের পর প্রযোজক রাজি হন তাঁকে ললিতার চরিত্রে নিতে।
'অন্য কেউ' হয়ে ওঠার চেষ্টা
'কিসমত কানেকশন', 'হে বেবি'র মতো ছবিতে একেবারে ভিন্ন ধরনের চরিত্রে দেখা যায় বিদ্যাকে। সেই কারণে বিপুল সমালোচিতও হন তিনি। বিদ্যা বালান যদিও নিজেই একসময় স্বীকার করেন যে তিনি সত্যিই 'অন্য কেউ' হয়ে ওঠার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। পরে তিনি সেই সমস্ত চরিত্রই বেছে নিতে শুরু করেন যেগুলিতে তিনি নিজে বিশ্বাস করতেন।
মালয়লম ছবিতে 'কামব্যাক'!
মালয়লম ছবিতে 'কামব্যাক' করার কথাও ভেবেছেন অভিনেত্রী। কিংবদন্তি লেখিকা মাধবী কুট্টি ওরফে কমল সুরাইয়ার চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ফিরতে চেয়েছিলেন। ফটোশ্যুটও করে ফেলেন তিনি এমনকী মালয়লম শিখতেও শুরু করেন যাতে উচ্চারণ স্পষ্ট হয়। তবে পরবর্তীকালে সৃজনশীল পার্থক্যের কারণে বিদ্যা সেই প্রজেক্ট ছেড়ে দেন। পরিচালকের থেকে 'অপেশাদার' তকমাও জোটে।
বিদ্যা বালানের স্বপ্নের চরিত্র
বিদ্যা বালান তাঁর একাধিক সাক্ষাৎকারে বলেছেন তাঁর স্বপ্নের চরিত্র হচ্ছে 'চার্লি চ্যাপলিন'। কিংবদন্তি এই কমিক চরিত্রটি তিনি তাঁর যে কোনও ছবির অন্তত একটি দৃশ্যে চরিত্রায়ণ করতে চান ঠিক যেমন 'মিস্টার ইন্ডিয়া'য় শ্রীদেবী করেছিলেন।