কলকাতা: 'এই পথ যদি না শেষ হয়'...। বাঙালির মনে এখনও গেঁথে আছে এই গানের প্রতিটি কলি। আর চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেই সাদা কালো ছবি যা বাঙালির মনে চিরসবুজ হয়ে আছে। কিংবদন্তি উত্তম-সুচিত্রা জুটিকে যেন অমরত্ব দিয়েছে এই গান। আজ, শুক্রবার, মহানায়কের জন্মবার্ষিকী। উত্তম বন্দনায় দিনভর মেতে রয়েছে আপামর বাঙালি। উত্তম-সুচিত্রা নস্ট্যালজিয়াও প্রতিটি আলোচনায় ঘুরে ফিরে আসছে।


যে জুটি বাঙালির কাছে প্রেমের সমার্থক, মহানায়কের জন্মবার্ষিকীতে সেই উত্তম-সুচিত্রার মাদকতায় আচ্ছন্ন মুনমুন সেন। স্টুডিওতে গিয়ে উত্তম-সুচিত্রার রসায়ন সচক্ষে একাধিকবার দেখেছিলেন। উপলব্ধি করেছিলেন, কেন এই জুটির ছটায় আলোকিত হয়েছিল ইন্ডাস্ট্রি।


উত্তমকুমারের ৯৫তম জন্মবার্ষিকীতে এবিপি লাইভকে মোবাইল ফোনে সুচিত্রা-কন্যা বললেন, 'আমি বাইরের স্কুলে পড়াশোনা করতাম। উত্তমকুমার কখনও সেভাবে আমাদের বাড়ি আসতেন না। কাজেই ওনার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কখনও খুব একটা আলাপ ছিল না। কখনও স্টুডিওতে গেলে দেখতাম, উনি আর মা একসঙ্গে কাজ করতেন। তবে হ্যাঁ, সুপ্রিয়াদেবীকে আমি চিনতাম। ওনার সঙ্গে আলাপ ছিল। কথা হয়েছে অনেকবার।'


বর্তমানেও উত্তমকুমারের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে মুনমুন সেনের পরিবারের। বললেন, 'আমি ওনার মেয়েকে চিনতাম। ওনার নাতনি আমার দুই মেয়ে, মানে রিয়া, রাইমার বান্ধবী।'


একাধিক নায়িকার সঙ্গে বিভিন্ন ছবিতে অভিনয় করেছেন উত্তমকুমার। তবে উত্তম-সুচিত্রা জুটি মায়া কাটাতে পারেনি প্রজন্মের পর প্রজন্ম। ছবির বিষয়বস্তু নয়, চিত্রনাট্য নয়, কেবল উত্তম সুচিত্রা জুটির ম্যাজিক দেখতেই হলে ভিড় করতেন দর্শক। নিজের বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে উত্তমকুমার একাধিকবার স্বীকার করে নিয়েছেন, সুচিত্রা সেন পাশে না থাকলে তিনি কখনও উত্তমকুমার হতেন না। অন্যদিকে বাংলা এমনকি হিন্দি ছবিতেও অন্যান্য নায়কদের সঙ্গে সুচিত্রা সেনের জুটি তুলনামূলকভাবে কম সাফল্য পেয়েছিল। স্বর্ণযুগ বার বার রুপোলি পর্দায় ফিরে পেতে চেয়েছে উত্তম সুচিত্রাকেই।


উত্তম-সুচিত্রা জুটির প্রথম হিট ছবি ‘সাড়ে চুয়াত্তর’। অবাক করার মত ঘটনা, এই ছবিতে তাঁরা কেউই প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেননি। এমনকি পোস্টারে তাঁদের কোনও ছবিও ছিল না। কিন্তু হাসির সেই ছবিতেও দর্শকদের নজর কেড়েছিল উত্তম-সুচিত্রার রসায়ন। আর তারপর.. কিংবদন্তি হয়ে ওঠার ইতিহাস, যার সাক্ষী ছিল কয়েক দশকের রুপোলি পর্দা।