নয়াদিল্লি: শুধু ছবির পর্দাতেই নয়, তার থেকে অনেক গভীর ছিল নাসিরুদ্দিন শাহ-ওম পুরী সম্পর্ক। প্যারালাল ছবির এই দুই প্রবাদপ্রতিম অভিনেতা বাস্তব জীবনেও অভিন্ন হৃদয় বন্ধু ছিলেন। এমনকী নাসিরকে একবার প্রাণেও বাঁচান ওম পুরী।


নাসিরের আত্মজীবনী ‘অ্যান্ড দেন ওয়ান ডে: আ মেমোয়ার’-এ এই ঘটনার উল্লেখ আছে। ১৯৭৭-এর ঘটনা। ভূমিকা ছবির শ্যুটিং চলার সময় এক রাতে ডিনারে যান ওম-নাসির। তখন রেস্তোঁরায় ঢোকে জশপাল নামে নাসিরের এক প্রাক্তন বন্ধু, যার সঙ্গে কিছুদিন ধরে তিনি দূরত্ব রক্ষা করছিলেন। ওমের সঙ্গে কথা বললেও নাসিরকে উপেক্ষা করে সে। তবে তাঁর থেকে চোখ সরায়নি একবারও। নাসিরের মনে হয়, সে তাঁদের পিছনের টেবিলে গিয়ে বসেছে।

হঠাৎ পিঠের ঠিক মাঝখানে তীক্ষ্ণ কিছু বিঁধে যাওয়ার অনুভূতি হয় তাঁর। কিন্তু নড়ার আগেই দেখেন, ওম পুরী লাফিয়ে পড়েছেন তাঁর পিছন দিকে। ঘুরে দেখেন, জশপালের হাতে ছোট একটি ছুরি, তার ডগা থেকে রক্ত চুঁইয়ে পড়ছে। আবার আঘাত করার জন্য হাত তুলেছে সে। কিন্তু ততক্ষণে ওম পুরী ও আরও দু’জন তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ব্যর্থ করে দেন তার চেষ্টা।

ওম চেয়েছিলেন তখনই নাসিরকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে। কিন্তু বাদ সাধেন রেস্তোঁরা কর্মীরা। পুলিশ না আসা পর্যন্ত তাঁদের যেতে দেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দেন তাঁরা। ততক্ষণে রক্তে নাসিরের শার্ট ভিজে গেছে, চুইয়ে পড়েছে প্যান্টেও।

পুলিশের গাড়ি এলে ওম কোনও অনুমতির তোয়াক্কা না করে এক লাফে ভ্যানের ওপর উঠে যান। দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিককে পীড়াপীড়ি করতে থাকেন, নাসিরকে আগে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিতে। বেশ কিছুক্ষণ অনুরোধের পর বরফ গলে। তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় জুহুর কুপার হাসপাতালে।

সেদিনের ঘটনার কথা এখনও স্পষ্ট মনে আছে নাসিরের। তিনি বিশ্বাস করেন, ওম পুরী এসে না দাঁড়ালে সেদিন তাঁর বেঁচে ফেরা শক্ত হত।