নয়াদিল্লি: নার্গিস মারা যাওয়ার সময় কাঁদেননি ছেলে সঞ্জয় দত্ত। তিন বছর ধরে সেই যন্ত্রণা তাঁর বুকের মধ্যে চাপা ছিল। অবশেষে তাঁর হাতে আসে মায়ের একটি অডিও টেপ-- যেখানে, তিনি তাঁর শেষ ইচ্ছার কথা বলে গিয়েছিলেন। তা দেখে, বাচ্চা ছেলের মতো কেঁদে ফেলেছিলেন সঞ্জয়।
সম্প্রতি সঞ্জয় দত্তের ওপর একটি বই প্রকাশিত হয়েছে। ইয়াসির উসমানের লেখা সঞ্জয় দত্ত: দ্য ক্রেজি আনটোল্ড স্টোরি অফ বলিউড’জ ব্যাড বয় শীর্ষক বইতে অভিনেতার জীবনের বহু অজানা গল্প-ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে বর্ণত হয়েছে সঞ্জয়ের ভাল, খারাপ, সর্বনাশা সময় থেকে শুরু করে তাঁর ভুলভ্রান্তি, লড়াই, ট্র্যাজেডি এবং সাফল্য।
বইতে লেখা হয়েছে সঞ্জয়ের জীবনের নারীদের কথা,। উঠে এসেছে মাদকাসক্তির সময় থেকে শুরু করে গোসাপের বিষপান করা এবং নিজের বাড়ির মধ্যেই এক রাতে গুলি চালানো।
লেখক জানান, সঞ্জয়রে অভিনীত প্রথম ছবি ‘রকি’ মুক্তি পাওয়ার ঠিক আগে ১৯৮১ সালের ৩ মে মারা যান নার্গিস। দুঃখ নিজের মধ্যেই লুকিয়ে রেখেছিলেন। একবারও কাঁদেননি সঞ্জয়। তিনবছর তেমনভাবেই চলছিল।
এরপর মাদকের নেশা কাটিয়ে উঠতে সঞ্জয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান রিহ্যাবে। সেখানে তাঁকে অনুপ্রেরণা দিতে বাবা সুনীল দত্ত ছেলের কাছে মায়ের মৃত্যুর ঠিক আগে রেকর্ড করা কয়েকটি টেপ পাঠিয়ে দেন।
সঞ্জয়ের কোনও ধারনা ছিল না ওই টেপের মধ্যে কী রয়েছে। তিনি চালাতেই, গোটা ঘরে নার্গিসের আওয়াজ প্রতিধ্বনিত হতে থাকে। শৈশবের কথা মনে পড়ে যায় তাঁর। বইতে লেখা হয়েছে, টেপে রেকর্ড হওয়া নার্গিসের গলার স্বর ভীষণই ক্ষীণ ছিল। বোঝা যেত, তিনি প্রচণ্ড দুর্বল, ভেঙে পড়েছিলেন। তাঁর অসম্ভব যন্ত্রণা ছিল।
তা সত্ত্বেও, ছেলের জন্য তিনি কিছু পরামর্শ দিয়ে গিয়েছিলেন। সঞ্জয়কে নার্গিস বলেছিলেন, নম্রতা বজায় রাখতে। চরিত্র বজায় রেখ। কখনও দেখনদারি করো না। সবসময় নম্র থেক, বড়দের সম্মান করো। এটাই তোমাকে তোমার কাজে শক্তি জোগাবে। এটাই তোমার সঙ্গে সবসময় থাকবে।
সঞ্জয়কে উদ্ধৃত করে বইতে লেখা হয়েছে, আমি কেঁদে ভাসিয়েছিলাম। আমি টানা চারদিন কেঁদেছিলাম। তখন আমার মনে হল, মা মারা যাওয়ার সময় তো আমি কাঁদিইনি। তিনবছর পর মায়ের গলার স্বর আমার জীবন পাল্টে দেয়।