Viral Video: সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো তুমুল ভাইরাল হয়েছে যেখানে দাবি করা হচ্ছে যে পশ্চিমবঙ্গে একের পর এক হিন্দু মন্দির (Fact Check) ভেঙে ফেলছে ইসলামিরা। কিন্তু আদপে সেই ভিডিয়োটি বাংলাদেশে সুফি মাজার ভেঙে ফেলার দৃশ্য। ফলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ (Viral Video) জাগিয়ে তুলতে এই কাজ করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বুম লাইভের ফ্যাক্ট চেক ডেস্ক জানিয়েছে যে, এই ভিডিয়োটি বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার, এর সঙ্গে ভারতের কোনওরকম সম্পর্ক নেই। আরও অনুসন্ধান করে দেখা গিয়েছে ভাইরাল ভিডিয়োর ঘটনাটি ঘটেছে ফেব্রুয়ারি মাসে। সেই সময় বাংলাদেশে একদল মৌলবাদী ইসলামী একটি সুফি মাজারে হানা দেয়, উরস আয়োজনের আগেই গোরাঘাট উপজেলায় রহিম শাহ বাবা ভাণ্ডারীর মাজারে ভাঙচুর চালায় তারা। সুফি সন্তের মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন হয় এই উরসের দিনে। আর সেদিনেই এই আক্রমণ হয়েছিল।
ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে একদল উন্মত্ত জনতা মাজারে ঢুকে ভাঙচুর করছে, লাঠি দিয়ে সব ভেঙে ফেলছে এবং মণ্ডপের একটা অংশে তারা আগুনও জ্বালিয়ে দেয়। এখানেই আয়োজিত হওয়ার কথা ছিল উরস। কিন্তু এই ভিডিয়োটিই সমাজমাধ্যমে শেয়ার করা হয় এমনভাবে যেন হিন্দু মন্দির ভেঙে ফেলছে ইসলামীরা। ভিডিয়োতে হিন্দিতে টেক্সটে লেখা হয়, 'দেখো, হিন্দু ভাইয়েরা, বাংলার হিন্দু মন্দিরে এ কী হচ্ছে ! তোমরা এখনও ভ্রাতৃত্বের কথা বলবে ?'
ভাইরাল হওয়া ভিডিয়ো দেখুন
ফ্যাক্ট চেক
বাংলায় কিওয়ার্ড সার্চ করে বুম লাইভের ফ্যাক্ট চেক ডেস্ক দেখেছে একই ভিডিয়োর একটি দীর্ঘ ভার্সন যা একটি বাংলাদেশি ফেসবুক পেজ পোস্ট করেছে। আর এই ভিডিয়োতে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে বলা হয়েছে যে বাংলাদেশের গোরাঘাট উপজেলায় রহিম শাহ বাবা ভাণ্ডারীর মাজারে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এছাড়া ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এর দিনে একই ঘটনার একটি লাইভ স্ট্রিমিংও খুঁজে পাওয়া যায় ফেসবুকে।
এখানে দেখুন সেই পোস্ট
এরপরে এই ঘটনা সংক্রান্ত কোনও খবর হয়েছে কিনা দেখার জন্য কিওয়ার্ড রিসার্চ করা হয় এবং দেখা যায় প্রথম আলো বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম এই ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই সংবাদমাধ্যমের মতে ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বেশ কিছু তৌহিদি জনতা সিরাত মুস্তাকিম পরিষদের ব্যানারে একটি বিশাল মিছিল করে এবং রহিম শাহ বাবা ভাণ্ডারীর মাজারে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। সেই সুফি মাজারে ২ থেকে ৪ মার্চ যে উরস আয়োজিত হওয়ার কথা ছিল তার বিরোধিতা করে এই দল। কারণ তৌহিদি জনতা দলের মতে এই সমাবেশ আদপে মদ্যপান, গান-বাজনা এবং অশালীন কাজকর্মের আখড়া। বাংলাদেশে এর আগেও বেশ কিছু জায়গায় আক্রমণ হেনেছে এই ধর্মীয় মৌলবাদী গোষ্ঠী।
একই ঘটনা নিয়ে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে দেখা যায় আরেকটি বাংলাদেশি সংস্থা কালবেলা নিউজ। বুম বাংলাদেশ শাখা গোরাঘাট থানার অফিসার ইন চার্জ মহম্মদ নাজমুল হকের সঙ্গে কথা বলেছে এই ভিডিয়োর ব্যাপারে আরও প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা লাভের জন্য। তিনি নিশ্চিত করেছেন যে এই ভিডিয়োর ঘটনা বাংলাদেশেই ঘটেছে, তা ভারতে ঘটেনি কখনও।
ডিসক্লেমার: এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে বুম লাইভ এবং শক্তি কালেক্টিভের অংশ হিসেবে, প্রতিবেদনটির অনুবাদ করেছে এবিপি লাইভ বাংলা।