কলকাতা : হাসপাতালে শিশুদের বেডের জন্য হাহাকার। ভর্তি আইসিইউ। বহু হাসপাতালে নেই পর্যাপ্ত পিডিয়াট্রিক বেডও। এই পরিস্থিতিতে একরত্তিদের চিকিৎসা দিতে হাসপাতালে বেড ভাগাভাগিও করতে হচ্ছে। ঠিক কোন কোন উপসর্গ দেখলে বুঝতে হবে, শিশুর জ্বর সর্দিকাশি মারাত্মক আকার নিয়েছে, অ্যাডিনোভাইরাস ( Adenovirus ) হলেও হতে পারে? অ্যাডিনো আক্রান্ত কোন শিশুকে আর বাড়িতে ফেলে রাখা যাবে না ? দরকার তৎক্ষণাৎ হসপিটালাইজেশন ? এই বিষয়ে বিস্তারিত জানালেন, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জয়দেব রায় ( Dr. Jaydeb Roy ) ।
ডা. রায় জানালেন, এই রোগে যে শিশুদের অবস্থা সঙ্কটজনক হচ্ছে, তাদের বয়স কয়েক মাস থেকে ২ বছর। এই বয়সের শিশুরা নিজেদের কষ্ট বলতে পারে না। যখন তাঁদের অবস্থার অতি অবনতি হয়, তখন হয়ত অভিভাবকরা ছোটাছুটি শুরু করেন। তাই এই বয়সীদের ক্ষেত্রে অ্যাডিনোভাইরাসের প্রথম উপসর্গ থেকে সতর্ক হতে হবে।
ডা. রায়ের মতো, এই বয়সের শিশুরা সাধারণত বাড়ির বাইরে যায় না। স্কুলে যায় না। তাই তাদের অসুখটা আসে বাড়ির বড়দের থেকে। বাড়িতে যদি কোনও বড় বাচ্চা থাকে, তাদের থেকেও আসতে পারে রোগটি। তাই সতর্ক হতে হবে তাঁদেরই। হাঁচি, কাশি, জ্বর ইত্যদি হলে কোনওভাবে একদম ছোট বাচ্চাটির কাছে যাওয়া যাবে না। একান্ত যেতে হলেও মাস্ক পরে যাওয়া জরুরি।
কতগুলি লক্ষণ আছে, যা দেখলে আর শিশুকে বাড়িতে ফেলে রাখা যাবে না। যেমন :
- টানা জ্বর
- শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া
- শ্বাসকষ্ট
- অক্সিজেন লেভেল পড়ে যাওয়া
- প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত
- প্রস্রাব কমে যাওয়া
- প্রবল ডায়ারিয়া
- শ্বাসকষ্টের ফলে পাঁজর ঢুকে যাওয়া
এই উপসর্গগুলি দেখলেই হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে । - জ্বর এলে কী করবেন ?
বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ জানালেন, জ্বর এলে বারবার তাপমাত্রা পরীক্ষা করা জরুরি। সেই সঙ্গে দিতে হবে প্যারাসিটামল। অ্যাডিনোভাইরাসের কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ নেই। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া অ্যান্টি বায়োটিকের কোনও ভূমিকা নেই। তাই প্যারাসিটামলি ভরসা। বাকিটা উপসর্গ দেখে চিকিৎসা। এছাড়া শিশুর জ্বর এলে তাঁকে বেশি করে ফ্লুইড দিতে হবে, যাতে শরীরে ডিহাইড্রেশন না আসে। সেই সঙ্গে বারবার চেক করতে হবে অক্সিজেন লেভেল। এর জন্য ছোটদের অক্সিজেন লেভেল মাপা যায় এমন অক্সিমিটার কিনে নিতে হবে। পিডিয়াট্রিশয়ানের সঙ্গে যোগাযেগ রাখতে হবে। শিশু খাওয়া কমিয়ে দিলে বা একেবারেই ছেড়ে দিলে, তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।