নয়া দিল্লি : নিয়মিত মদ্যপান (Alcohol consumption )করেন না, কিন্তু উৎসব-অনুষ্ঠানে অল্প-বিস্তর হয়েই থাকে ? কিংবা রোজই একটু-আধটু চুমুক? ভাবছেন এতে আর কীই বা ক্ষতি ? আপনি জানেনও না কতটা ক্ষতি করছেন নিজের। মদ্যপান অল্প হলেও ক্ষতিকর ! এমনটাই বলছে গবেষণা।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দাবি, অ্যালকোহল সেবন প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী । এর শিকার মূলত অর্থনৈতিকভাবে মাঝারি বা পিছিয়ে পড়ে দেশগুলির মানুষ। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং চিনের পিকিং এর গবেষকরা (niversity of Oxford in the UK and Peking in China )১২ বছর ধরে চিনের শহর ও গ্রামীণ এলাকার ৫১২,০০০ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন। দেখা গিয়েছে অ্যালকোহলের প্রভাবে ২০০ টিরও বেশি রোগ ধরতে পারে। কিংবা কোনও অসুখ থাকলে , তা আরও খারাপের দিকে এগোতে পারে।
নেচার মেডিসিনে প্রকাশ পেয়েছে তাঁদের এই গবেষণাপত্র। অনুসন্ধানে দেখা গিয়েছে যে, পুরুষদের মধ্যে ৬১ টি রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় অ্যালকোহল সেবন। যদিও এই স্টাডিটিতে বেশিরভাগ পুরুষদেরই স্যাম্পল হিসেবে নেওয়া হয়েছিল। স্যাম্পলের মধ্যে মাত্র ২ শতাংশ ছিলেন মহিলা, যাঁরা নিয়মিত অ্যালকোহল পান করেন।
এই ৬১ টি রোগের মধ্যে ২৮টি রোগকে আগেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অতিরিক্ত অ্যালকোহল পানের সঙ্গে সংযুক্ত করেছিল । অর্থাৎ এই ২৮ টি অসুখের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায় অ্যালকোহল পান করলে। যেমন - সিরোসিস অফ লিভার ( liver cirrhosis ), স্ট্রোক ( stroke ) , and নানারকম পাচনতন্ত্রের ক্যান্সার ( gastrointestinal cancers )। এছাড়া এই গবেষণায় উঠে এসেছে আরও ৩৩ টি রোগের নাম, যেগুলিও অ্যালকোহল পানের সঙ্গে বাড়ে বলে মনে করছেন গবেষকরা। যেমন - বাত (gout ), ছানি (cataract ), হাড় ভাঙা ( fractures ) , গ্যাস্ট্রিক আলসার ( gastric ulcer ) ইত্যাদি।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে অ্যালকোহল পান থেকে হওয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে প্রতিবছর ১১ লক্ষেরও বেশি মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যাই বেশি। বলাই বাহুল্য, এঁদের মধ্যে যাঁরা নিয়মিত মদ্যপান করেন তাঁদেরই বেশি ঝুঁকি।
আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, বেশি অ্যালকোহল পানের ফলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। কিন্তু ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ (IHD) এর ক্ষেত্রে ঝুঁকি বাড়ে বলে কোনও সঙ্কেত পাওয়া যায়নি এই গবেষণায়। তবে মাঝারি মদ্যপানের (অর্থাৎ এক-দুই পানীয় / দিন) করলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে বলে যাঁরা দাবি করেন, তার সপক্ষেও কোনও প্রমাণ মেলেনি।