একটি নতুন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে অ্যাসপার্টেম ও স্যাকারিনের মত কৃত্রিম মিষ্টকারক যুক্ত পানীয় দিনের পর দিন গ্রহণ করলে মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি ও শব্দ স্মরণ করার ক্ষমতা দ্রুত হারে কমে যাচ্ছে। মস্তিষ্কের ক্ষমতাকে (Brain Ageing) ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এই উপাদান। কম ক্যালরিযুক্ত চিনির বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও এই কৃত্রিম মিষ্টকারক (Artificial Sweeteners) নিয়মিত ব্যবহারের ফলে বুদ্ধিমত্তা নষ্ট হতে পারে, এমনকী মানুষের কগনিটিভ দক্ষতা নষ্ট হতে পারে।। এমনটাই জানাচ্ছে সাম্প্রতিক সমীক্ষা।

নিউরোলজি জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গিয়েছে যারা সর্বাধিক পরিমাণে মিষ্টজাতীয় খাবার গ্রহণ করছেন তাদের জ্ঞানীয় ক্ষমতা বা কগনিটিভ সক্ষমতা ৬২ শতাংশ দ্রুত হ্রাস পেয়েছে অর্থাৎ যা কিনা মস্তিষ্কের বয়স ১.৬ বছর বেড়ে যাওয়ার সমান। বেশিরভাগ মানুষ গড়ে দিনে ১৯১ মিলিগ্রাম বা প্রায় ১ চা চামচ কৃত্রিম মিষ্টকারক গ্রহণ করে থাকে নানাভাবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুসারে ডায়েট সোডার একটি ক্যানে প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ মিলিগ্রাম কৃত্রিম মিষ্টকারক থাকে।

দেখা গিয়েছে যে সমস্ত ব্যক্তি সবথেকে কম বা ক্যালরিহীন মিষ্টি গ্রহণ করেছেন সবথেকে বেশি তাদের গ্লোবাল কগনিটিভ হ্রাস ৬২ শতাংশ দ্রুত ঘটেছে যারা সবথেকে কম মিষ্টি খেয়েছেন তাদের তুলনায়। অর্থাৎ সেই ব্যক্তিদের মস্তিষ্কের বয়স অন্যদের তুলনায় ১.৬ বছর বেড়ে গিয়েছে।

গবেষকরা ব্রাজিলের প্রায় ১৩ হাজার মানুষের উপর গবেষণা বিশ্লেষণ করেছেন, যাদের গড় বয়স ৫২ বছর। গবেষণার শুরুতেই অংশগ্রহণকারীদের খাদ্যতালিকাগত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল এবং গড়ে ৮ বছরে তিন বার বেশ কয়েকটি কগনিটিভ পরীক্ষা করা হয়েছিল। ডায়েট সোডা ছাড়াও কৃত্রিম মিষ্টকারকের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে ফ্লেভারড জলে, লো-ক্যালরি ডেজার্টে আর এনার্জি ড্রিঙ্কসে।

মাঝারি স্তরের অংশগ্রহণকারীদের বিশ্বব্যাপী জ্ঞানীয় হ্রাসের হার ৩৫ শতাংশ দ্রুত ছিল যা সবথেকে কম পরিমাণে কৃত্রিম মিষ্টকারক গ্রহণকারীদের তুলনায় ১.৩ বছর বেশি বয়সের সামিল। এই তথ্যও পাওয়া গিয়েছে গবেষণায়। গত মাসে অস্ট্রেলিয়ান একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে মাত্র এক ক্যান ডায়েট সোডা পান করলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি ৩৮ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে যাতে মিষ্টি থাকে। এতে আরও বলা হয়েছে যে কৃত্রিমভাবে মিষ্টিযুক্ত সফট ড্রিঙ্কসের ঝুঁকি নিয়মিত চিনিযুক্ত পানীয়ের তুলনায় আরও বেশি, ২৩ শতাংশ ঝুঁকি বেড়ে যায় এই কারণে।