কলকাতা:  সদ্য ভোট শেষ হয়েছে উত্তরপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রে। পায়ে হেঁটে রোদে ঘুরে প্রচার করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু একেবারে ভোটের শেষলগ্ন পর্যন্তও ঘুরেছেন বুথে বুথে। তাঁর কথায়, 'মেয়ের বিয়ে হলে তো বাবার বসে থাকা চলে না!' আপাতত কদিনের বিশ্রাম, তারপর আবার কাজে ফেরা। রাজনীতি সংক্রান্ত কথা নয় শুনেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। তারপর একটু হেসে কাঞ্চন মল্লিক বললেন, 'রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে বলতে হাফিয়ে উঠেছিলাম।'


পয়লা বৈশাখ। বাঙালিদের কাছে নববর্ষ মানেই একরাশ নস্টালজিয়া। কর্মব্যস্ত জীবনের ইঁদুরদৌড়ের মধ্যেও এই দিনটায় মনে পড়ে যায় হালখাতার মিষ্টির বাক্স, নতুন জামার গন্ধ। কেমন ছিল কাঞ্চনের ছোটবেলার নববর্ষগুলো? অভিনেতা বলছেন, 'আমার ছোটবেলার নববর্ষ কেটেছে কালীঘাটে। এখনও মনে আছে, মা নীলষষ্ঠী করতেন নববর্ষের আগে। আর আমাদের জন্য প্রতিবছর কিনে আনতেন নতুুন জামা। সাধারণ হলেও তাতে লেগে থাকত অনেকটা আনন্দ। পয়লা বৈশাখের সকাল সকাল কালীঘাটে পুজো দিয়ে সেই নতুন জামা পরতাম। দুপুরের খাওয়ার মেনুতে পাঁঠার মাংস হত। আর সেটা না পারলে মুরগির মাংস। নীলষষ্ঠীর দিন কালীঘাটে সঙ বেরত। পুরাণের বিভিন্ন চরিত্র সেজে। সেটাও একটা অন্যতম আকর্ষণ ছিল। রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতাম দেখব বলে। এই ছিল আমার ছোটবেলার নববর্ষ।'


এরপর বড় হয়ে ওঠা, কৈশোর। সেসময়ের নববর্ষ আবার অন্যরকম। কাঞ্চন বলছেন, 'পয়লা বৈশাখে দোকানে দোকানে নতুন লাল খেরোর খাতা লাগত। আমরা আগে থেকে সেই খাতা বানিয়ে রাখতাম। প্রথম পাতায় একটা স্বস্ত্বিক চিহ্ন এঁকে ওঁ শ্রী গণেশায় নমঃ লেখা আর তার নীচে তিনটে এক টাকার কয়েনের ছাপ। এক একটা খাতা পিছু একটাকা করে উপার্জন হত। তখন সেই টাকাটাই আমাদের কাছে অনেক।


এখনও পয়লা বৈশাখ আসে। কিন্তু তাতে আর প্রাণ খুঁজে পান না কাঞ্চন। বললেন, 'এখন আমরা পয়লা বৈশাখ উদযাপন করি কর্পোরেট ধাঁচে। নিয়মমাফিক বড় মিষ্টির প্যাকেট আসে। কিন্তু ছোটবেলার সেই নির্মল খুশিটুকু যেন হারিয়ে গিয়েছে কোথাও। আমাদের নতুন জামা-কাপড় কেনার চলও নেই তেমন।'