কলকাতা : আজ ২৭ সেপ্টেম্বর। জন্মদিন ভগত সিংহের (Bhagat Singh)। ১৯০৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহন করেছিলেন এই স্বাধীনতা সংগ্রামী। ২৩শে মার্চ, ১৯৩১-এ শহিদ হন তিনি। মাত্র ২৪ বছরের জীবনকালেই তিনি ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন পুরোধা। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি ছিলেন অন্যতম প্রভাবশালী বিপ্লবী। তাঁকে শহিদ-ই আজম ভগত সিংহ নামে অভিহিত করা হয়।
ভগত সিংহের জন্ম পাঞ্জাবের কালান গ্রামের এক সান্ধু জাঠ পরিবারে। তাঁর পিতার নাম সর্দার কিসান সিংহ সান্ধু ও মায়ের নাম বিদ্যাবতী। ভগতের নামের অর্থ ভক্ত। তিনি যে পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সেটি ছিল এক দেশপ্রেমী শিখ পরিবার। এই পরিবারের কয়েকজন সদস্য ভারতের বিভিন্ন স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। অতীতে তাঁর পরিবারের কেউ কেউ আবার মহারাজা রঞ্জিত সিংহের সেনাবাহিনীতে কাজ করতেন। ভগত সিংহের ঠাকুরদা অর্জুন সিংহ, দয়ানন্দ সরস্বতীর হিন্দু সমাজ সংস্কার আন্দোলন আর্যসমাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ভগতের উপরেও এই সংগঠনের গভীর প্রভাব লক্ষিত হত। তাঁর পরিবার আগে থেকেই ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিল। কৈশোরেই ভগৎ ইউরোপীয় বিপ্লবী আন্দোলনের ইতিহাস সম্পর্কে পড়াশোনা করেন। এরপর তিনি একাধিক বিপ্লবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন।
স্বাধীনতা সংগ্রামী লালা লাজপত রায়ের হত্যার প্রতিশোধে এক ব্রিটিশ পুলিশ অফিসারকে গুলি করে হত্যা করেন ভগৎ। বিচারে তাঁর ফাঁসি হয়। তাঁর দৃষ্টান্ত ভারতীয় যুবসমাজকে স্বাধীনতা সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করে। তাই এরকম দাপুটে স্বাধীনতা সংগ্রামীর জন্মদিনে আজ নেটনাগরিকরা তাঁকে শ্রদ্ধায়, সম্মানে ভরিয়ে দিচ্ছেন। সেটাই স্বাভাবিক। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলেন নতুন গতিপথ এনেছিলেন তিনি। ১৯২৯ সালে তিনি এবং তাঁর আর এক স্বাধীনতা সংগ্রামী বন্ধু বটুকেশ্বর দত্ত বোমা মেরেছিলেন ইংরেজদের। এরপরও তাঁরা দুজন স্বাধীনতার স্বপক্ষে স্লোগান দিয়ে যাচ্ছিলেন দীপ্তভঙ্গীতে। পরে পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে।
এমন স্বাধীনতা সংগ্রামীর জন্মদিনে তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় আজ ভগত সিংহের ছবির ছড়াছড়ি। বেশিরভাগ পোস্টই তাঁকে নিয়ে। কেউ লিখেছেন ভারতের প্রকৃত নায়ক। কেউ বা লিখেছেন ভারতীয় যুবসমাজের চিরকালীন আইকন। কেউ বা আবার লিখেছেন তাঁরই উক্তি। 'ওরা আমায় মারতে পারবে। কিন্তু আমার আইডিয়াকে মারতে পারবে না।' সত্যিই তাই। কে বলে ভগত সিং প্রায় ৯০ বছর আগে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আজও তিনি আমাদের দেশের প্রত্যেকটা মানুষের মনে বিরাজ করছেন।