নয়াদিল্লি: জ্বর, সর্দি কাশি থেকে খিঁচুনির মতো উপসর্গ। এক প্রাণঘাতী রোগ ছড়িয়ে পড়ে কেরলে! যার পোশাকি নাম প্রাইমারি অ্যামিওবিক মেনিঙ্গোএনসেফেলাইটিস। মস্তিষ্কে সরাসরি আঘাত হানার ফলে প্রচলিত নাম 'ব্রেন ইটিং অ্যামিবা'। পুজোর ঠিক আগে আগে দক্ষিণের রাজ্যে প্রকোপ দেখানো এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে পশ্চিমবঙ্গেও। এর জন্য দায়ী নায়েগলেরিয়া ফওলেরি নামে একটি প্যারাসাইট। সেপ্টেম্বরের পরিসংখ্যান বলছে, সারা বিশ্বে গত কয়েক বছরে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ৫০০। তবে উদ্বেগ বাড়িয়ে গত দেড় বছরে শুধু কেরলেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয় শতাধিক। কিন্তু শুধু ২০২৫ সালে এক লাফে শুধু কেরলেই নায়েগলেরিয়া ফওলেরির দাপট যে এত সাঙ্ঘাতিক বেড়ে গিয়েছে তা জানা গেল কেরলের দেওয়া পরিসংখ্যানে। এই প্রসঙ্গে সংসদে উত্তরও দিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীও। লোকসভায় দেওয়া তথ্য অনুসারে, এই বছর ব্রেন-খেকো অ্যামিবায় ১৭০ জন আক্রান্ত হয়েছেন শুধু কেরলে। মৃত্যু হয়েছে ৪২ জনের। শুক্রবার সংসদে জানানো হয়, ২০২৫ সালে অ্যামিবিক মেনিনগোএনসেফালাইটিস বা মস্তিষ্ক-খেকো অ্যামিবা ১৭০ জন আক্রান্ত হয়েছে। ৪২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
লোকসভায় লিখিত জবাবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী প্রতাপরাও যাদব উল্লেখ করেন, কেরল রাজ্যে ২০২৩ সাল থেকে মোট ২১১ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও ২০২৩ সালে অ্যামিবিক মেনিনগোএনসেফালাইটিসের দুটি কেস ধরা পড়ে। সে-বছর ২ জনের মৃত্যু হয়। ২০২৪ সালে ৩৯ কেস ধরা পড়ে। ৯ টি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। অথচ ২০২৫ সালে এই রোগে আক্রান্তর সংখ্যা বেড়ে হয় ১৭০। ৪২ জনের মৃত্যু হয়।
মন্ত্রী গত বছরের জুলাই মাসে কোঝিকোড়ের জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র (এনসিডিসি) অ্যামিবিক মেনিনগোএনসেফালাইটিস নিয়ে একটি গবেষণা করে। সেই গবেষণার উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী। জানান, কেরে এই অ্যামিবিক মেনিনগোএনসেফালাইটিসের বাড়বড়ন্তের বিষয়টি নিয়ে উচ্চ-স্তরের বৈঠক হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে আইসিএমআর। এছাড়া ১৮টি ভাইরাস গবেষণা ও ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরির (VRDL)-ও এই বিষয়টিতে নজর রাখছে। এ নিয়ে মানুষকেও সতর্ক করা হচ্ছে।
জ্বর, সর্দি-কাশি, খিঁচুনি কিংবা অসংলগ্ন আচরণ, এসব উপসর্গ দেখেও, সাধারণ রোগ ভেবে উড়িয়ে দিচ্ছেন? সাবধান হোন! আপনার শরীরে বাসা বাঁধেনি তো সর্বনাশা 'ঘিলুখেকো অ্যামিবা'? তাই এসব লক্ষণ দেখলেই সতর্ক হোন।