কলকাতা : সদ্যজাত শিশুকে (new Born baby) তো বটেই, বাচ্চার জন্মের ৬ মাস পর্যন্ত তাকে এক এবং একমাত্র স্তনের দুধই খাওয়াতে হবে। এমনটাই পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা। তাই এই সময়টা মাকেও পেতে হবে ভরপুর পুষ্টি, যাতে তিনি তাঁর সন্তানকে পর্যাপ্ত দুধ (breastfeeding) দিতে পারেন। তার মানে শুধু বেশি বেশি খেলে চলবে না। নিতে হবে সঠিক ডায়েট (balanced Diet) । অনেক সময় দেখা যায়, এমন অনেককিছু খেয়ে ফেলছেন মায়েরা, যাতে তাঁদের ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যাচ্ছে, কিন্তু সন্তানের লাভের লাভ হচ্ছে না। তাই মায়ের ডায়েট প্ল্যান (Diet plan) করতে হবে এমন ভাবে, যা তাঁকে পুষ্টি জোগাবে, ওজন বাড়াবে না। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট ড. অনন্যা ভৌমিক। তিনি জানালেন, প্রথমেই মাকে খেয়াল রাখতে হবে জল খাওয়ার উপর। সবসময় নিজেকে হাইড্রেটেড রাখতে হবে। 



  •  সুষম খাদ্য খান: স্তন্যদায়ী মাকে খেতে হবে বেশি করে ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য, চর্বিহীন প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি ।

  • পর্যাপ্ত ক্যালোরি গ্রহণ করুন: বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য প্রয়োজন অতিরিক্ত শক্তির । আর শক্তি আসে খাবার থেকেই। এই সময় শরীরের চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন মাকে  ক্যালোরি ইনটেক প্রায় ৫০০-৭০০ ক্যালোরি বাড়াতে হবে। সন্তান জন্মের পর মায়ের ওজন, তাঁর খাবারের চার্ট সম্পর্কে একবার পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া জরুরি

  • প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান: চর্বিহীন মাংস, হাঁস-মুরগি, মাছ, ডিম, লেবু, বাদাম এবং বীজ প্রোটিনের চমৎকার উৎস যা আপনার স্বাস্থ্য ভাল রাখা এবং দুধ উৎপাদন উভয় ক্ষেত্রেই সাহায্য করে।

  • চর্বিযুক্ত মাছ খান: স্বাস্থ্যকর ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পেতে মায়ের খাদ্যের মধ্যে থাকুক নানারকম সামুদ্রিক মাছ।  এগুলি শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্যও অপরিহার্য। 

  • ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার: মা ও শিশুর হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম দরকার।  দুগ্ধজাত দ্রব্য, শাক-সবজি এবং ফোর্টিফাইড উদ্ভিদ-ভিত্তিক দুধ খাওয়া উপকারী। 

  • হাইড্রেটেড থাকুন: ডিহাইড্রেশন এড়াতে এবং  দুধ যাতে পর্যাবপ্ত পরিমাণে আসে, সে কথা মাথায় রেখে, সারা দিন প্রচুর তরল পান করুন। প্রাথমিকভাবে জল খেতে হবে বারবার।

  • পর্যাপ্ত আয়রন দরকার: আয়রনের ঘাটতি রোধ করতে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যেমন চর্বিহীন মাংস, সবজি, সবুজ শাক এবং শস্য থাকুক পাতে। 

  •  ক্যাফিন এবং অ্যালকোহল  নয়:  ক্যাফিনযুক্ত পানীয় গ্রহণ সীমিত করতে হবে।  অ্যালকোহল এড়িয়ে চলতে হবে। সেগুলি মায়ের দুধের মাধ্যমে শিশুর মধ্যে প্রবেশ করা ঠিক নয়। 

  • কম খাবার, ঘন ঘন খাবার: সারাদিনে ছোট ছোট মিল খেতে হবে। স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খাওয়া মায়ের শরীরে শক্তির মাত্রা বজায় রাখতে এবং দুধ উৎপাদনে সহায়তা করতে পারে।

  • প্রক্রিয়াজাত এবং চিনিযুক্ত খাবার ক্ষতিকর: যতটা সম্ভব প্রক্রিয়াজাত নয়, এমন খাবার বেছে নিন এবং  চিনিযুক্ত খাবার এবং পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট খাওয়া কমান। 


মনে রাখবেন, প্রত্যেক মহিলার শারীরিক পরিস্থিতি আলাদা। সময় অনুসারে তাঁর চাহিদা পরিবর্তিত হতে পারে। তাই ব্যক্তিগত পরামর্শের কোনও ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্টের সঙ্গেই যোগাযোগ করুন। 


 



অনন্যা ভৌমিক, পুষ্টিবিদ