ক্যানসারের নেই আনসার। এই কথা বলার যুগ পেরিয়ে এসেছে চিকিৎসা শাস্ত্র। এখন বিভিন্ন ধরনের কর্কট রোগকে বাগে রাখতে সক্ষম অত্যাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে। সময় মতো ক্যানসার ধরা পড়লে, অন্যান্য রোগের মতো নির্মৃলও হচ্ছে। বেরিয়েছে সার্ভাইক্যাল ক্যানসার প্রতিরোধী টিকাও। তবুও এখনও ক্যানসার মানেই একটা অজানা আতঙ্ক। আশঙ্কা মৃত্যুর, আতঙ্ক  চিকিৎসা-যন্ত্রণার, ভীতি পাহাড়প্রমাণ খরচের। তবে এসবকিছুতে ইতিচিহ্ন টানতে পারে একটি জিনিস - টিকা !


মারণরোগ ক্যানসারের টিকা আর স্বপ্ন নয়, তা নাকি সত্যি সত্যি তৈরি করে ফেলেছেন রুশ বিজ্ঞানীরা। শুধু তাই নয়, এর সুফল পাওয়া যাবে আগামী বছর থেকেই। খবর, ২০২৫ সাল থেকেই রাশিয়ায় ক্যানসার রোগীদের দেওয়া হবে বিনামূল্যে, জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট । 


রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ রেডিয়োলজি মেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের জেনারেল ডিরেক্টর আন্দ্রে কাপ্রিন এই সুখবর শেয়ার  করেন। তিনি জানান, বহুদিনের প্রচেষ্টা আছে এই আবিষ্কারের পিছনে। মেসেঞ্জার আরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে। যদি বাকি ধাপগুলি ঠিকঠাক ভাবে এগোয় সামনের বছর থেকেই রাশিয়ার মানুষ এই ভ্যাকসিন পেতে পারেন। 


Gamaleya National Research Center for Epidemiology and Microbiology-এর ডিরেক্টর আলেকজান্ডার গিন্টসবার্গ জানিয়েছেন, ক্যান্সারের ভ্যাকসিনের প্রাক-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়ে গিয়েছে। এই টিকা টিউমারের বৃদ্ধি রোধ করে।  মেটাস্টেসিস দূর করতে বেশ কার্যকর। এই খবর ইতিমধ্যেই রাশিয়ার মানুষের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন  ভ্লাদিমির পুতিন। জানিয়েছেন,  তাঁর দেশের মানুষ মারণ রোগের টিকা পাবে বিনামূল্যে । 


জানা গিয়েছে, এই ভ্যাকসিনটি শরীরের ক্যানসারের  কোষ চিনে নিতে পারে। তারপর শুরু করে  ধ্বংস করা। এই থেরাপিউটিক ক্যান্সার ভ্যাকসিন টিউমার কোষের প্রোটিন বা অ্যান্টিজেনকে বিশেষভাবে টার্গেট করে। টিউমার নির্মূলে কার্যকর হয়ে ওঠে। এখনও পর্যন্ত রুশ বিজ্ঞানীদের দাবি,এই প্রতিরোধমূলক ভ্যাকসিন (HPV) ক্যান্সার প্রতিরোধে খুবই সহায়ক।


নতুন ভ্যাকসিন শরীরে সাধারণ ইনজেকশনের মারফতই দেওয়া হবে। বিজ্ঞানীদের দাবি, প্রাকৃতিক উপাদান থেকে এই ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে, তাই এর কোনও মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে না। রাশিয়া বিশ্বজুড়ে ক্যানসার রোগীদের জন্য বিনামূল্যে এই ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হতে পারে। আগামী দিনে এই ভ্যাকসিন  সারা বিশ্বেই ক্যান্সারের হার কমাতে সক্ষম হবে বলে গবেষকদের আশা।  সরকার ইতিমধ্যে এই ভ্যাকসিনের প্রচারের জন্য বড় টাকা বরাদ্দ করেছে। রাশিয়া মনে করছে এই প্রতিষেধক  ক্যানসারের চিকিৎসায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারে। তবে বিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, টিকাটি সব ধরনের ক্যানসারের ছড়িয়ে পড়াই রুখে দিতে পারবে কি না, তা নিশ্চিত করতে  এখনও অনেক পরীক্ষাপ প্রয়োজন। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।