কলকাতা: ঠিকমতো ঘুম না হলে রোজকার কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে। এমনকী কাজের মাঝে বারবার ঝিমুনিও আসে। তবে অনিয়মিত অপর্যাপ্ত ঘুমের আরও বিপদ রয়েছে। ইদানীং একদল গবেষকের গবেষণায় জানা গেল সেই সম্পর্কে বিশদ তথ্য। ঘুমের অভাবে মস্তিষ্কের বিভিন্ন স্নায়ুর ক্ষতি হয় - এই তত্ত্ব এর আগেও বেশ কিছু গবেষণায় উঠে এসেছে। এবার দেখা গেল, সেই ঘুমই বিপদ ঘটাতে পারে স্মৃতিশক্তির। পাশাপাশি কগনিটিভ ক্ষমতাও কমিয়ে দিতে পারে ঘুম। আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব নিউরোলজির জার্নাল নিউরোলজিতে এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। 


কাদের উপর এই গবেষণা?


৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সী ব্যক্তিদের নিয়ে এই পরীক্ষা করা হয়েছে। কমবেশি ১১ বছর ধরে তাঁদের উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়। দুই ক্ষেপে টানা তিনদিন ধরে তাদের অ্যাক্টিভিটি রিস্ট ওয়াচ পরিয়ে শুতে পাঠানো হয়েছিল। সেই অনুযায়ী দেখা গিয়েছে, গড়ে ৬ ঘন্টা ঘুমোন এই বয়সের ব্যক্তিরা।  মোট ৫২৬ জনের উপর এই পরীক্ষা করা হয়েছিল। প্রত্যেককে একটি করে স্লিপ ডায়েরি দেওয়া হয়, যেখানে ঘুম সংক্রান্ত তথ্য লেখা যেত। এতেই দেখা গিয়েছে, ২৩৯ জনের ঘুমের সামগ্রিক অভিজ্ঞতা খারাপ।


কী জানা গিয়েছে গবেষণায়?


ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে স্মৃতিশক্তির উপর খারাপ প্রভাব পড়ে। পাশাপাশি কগনিটিভ কার্যক্ষমতাও কমে যায়। যা ডিমেনশিয়া বা অ্যালঝাইমার্স রোগের অন্যতম প্রধান কারণ। কগনিটিভ ক্ষমতা ঠিকমতো ভাববার শক্তি কেড়ে নেয়। পাশাপাশি কোনও সমস্যা সমাধানের ক্ষমতাও কমিয়ে দেয়। ঘুমের সমস্যা হলে মূলত স্নায়ুর উপর খারাপ প্রভাব পড়ে। যার থেকে এমন বিপদ ঘনিয়ে আসে।


কী বলছেন গবেষক?


সান ফ্রান্সিসকোর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক উই লেঙের কথায়, অ্যালঝাইমার্স মূলত বয়সকালের রোগ। তবে এই রোগের উপসর্গ অনেক আগে থেকেই শুরু হয়ে যায়। তাই রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করতে ঘুমের উপর জোর দেওয়া জরুরি। গবেষক লেঙের কথায়, এই গবেষণার ফলে জানা গিয়েছে, একজনের স্বাস্থ্যের জন্য গভীর ঘুম কতটা জরুরি। কতক্ষণ ধরে ঘুম হচ্ছে, তার থেকেও বেশি জরুরি কেমন ঘুম হচ্ছে - এমনটাই জানাচ্ছে গবেষণার ফলাফল। তাই ব্রেনের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে কম সময় ঘুমোলেও গভীর ও ব্যাঘাতহীন ঘুমের উপর জোর দিচ্ছেন গবেষকরা।


আরও পড়ুন: Mental Stress: আপনি কি মানসিক অবসাদে ভুগছেন? এই লক্ষণগুলো কি আপনার মধ্যেও দেখা যাচ্ছে?