Eye Health: সারাক্ষণ মোবাইল ঘাঁটেন? কিংবা মুখ গুঁজে বসে থাকেন ল্যাপটপে? স্ক্রিন টাইম যত বাড়বে ততই কমবে কাছের জিনিস দেখার ক্ষমতা। অর্থাৎ দৃষ্টিশক্তি কমজোর হবে। নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেবে। বাচ্চাদের পাশাপাশি বড়দের ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম অতীব ক্ষতিকর একটি বিষয়। বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইস যেমন- স্মার্টফোন, ট্যাব, ল্যাপটপের অতিরিক্ত ব্যবহার আপনার স্ক্রিন টাইম, অর্থাৎ এইসব ডিজিটাল ডিভাইসের স্ক্রিন দেখার সময় অনেক বাড়িয়ে দেবে। আর এর জেরেই মায়োপিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। তরুণ প্রজন্মের উপর প্রভাব পড়ে সবচেয়ে বেশি। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে, অল্প বয়সীদের মধ্যে দূরের জিনিস দেখার শক্তি দুর্বল হয়ে পড়বে স্ক্রিন টাইম বেশি থাকলে। একেই বলে মায়োপিয়া। দূরের জিনিস দেখতে অসুবিধা হয় এই রোগ থাকলে। ঝাপসা দেখা যায় দূরে থাকা জিনিস। 


কোভিড পরবর্তী সময়ে মায়োপিয়া - চোখের এই রোগ বিশ্বজুড়েই অনেক বেশি মাত্রায় দেখা দিচ্ছে। আর তা নিয়েই চিন্তায় রয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আসলে কোভিডের সময় থেকেই অনলাইনে পড়াশোনার বিষয়টি জোরকদমে শুরু হয়েছে। বইয়ের বদলে পড়ুয়াদের চোখ থাকছে ফোন, ট্যাব, ল্যাপটপের স্ক্রিনে। এর ফলেও বাচ্চাদের ডিজিটাল ডিভাইসের স্ক্রিন দেখার সময় আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এখন অবশ্য আগের মতোই স্কুলে গিয়ে পড়ুয়াদের স্বাভাবিক পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। কিন্তু তাও অনেকটা জায়গা জুড়েই এখনও রয়ে গিয়েছে অনলাইনে মাধ্যমে পড়াশোনা করার অভ্যাস। 


বাচ্চাদের জীবনে অনলাইন পড়াশোনার ব্যাপারটা চালু হওয়ার পর থেকেই বাইরে বেরনোর সম্ভাবনা অনেক কমে গিয়েছে আগের তুলনায়। অনেকক্ষণ ডিজিটাল ডিভাইসের স্ক্রিন দেখলে চোখে শুধু মায়োপিয়া নয় আরও অনেক অসুবিধাই দেখা দিতে পারে। তবে বাচ্চাদের জীবন থেকে আপনি একদিনে সমস্ত ডিজিটাল ডিভাইস সরিয়ে দেবেন, এমনটা ভাবলে কিন্তু হবে না। আদতে এই ভাবনাচিন্তা যথেষ্টই অবাস্তব। হয়তো আপনি বাচ্চাকে মোবাইলে গেম খেলতে দেবেন না। ইউটিউবে ভিডিও দেখতে দেবেন না। টিভি দেখার ক্ষেত্রেও হাজারটা নিষেধাজ্ঞা রাখবেন। ল্যাপটপ, ট্যাবের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য করতে চাইবেন। কিন্তু এইসব ভাবনার বাস্তবায়ন করা একপ্রকার অসম্ভব। কারণ যে বাচ্চাটি অনলাইনে পড়াশোন করে, তাকে তো ডিজিটাল ডিভাইসের স্ক্রিন দেখতেই হবে। 


তাহলে উপায় কী? বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, একদিনে একটি বাচ্চার জীবন থেকে আপনি যেমন সমস্ত ডিজিটাল ডিভাইস সরিয়ে স্ক্রিন টাইম কমিয়ে দিতে পারবেন না। তবে কয়েকটি পদক্ষেপ নিলে ধীরে ধীরে স্ক্রিন টাইম কমানো সম্ভব। আজকাল বাচ্চারা সেভাবে মাঠে খেলতে যায় না। প্রতিযোগিতার জীবনে সময়ও হয়ে ওঠে না ওদের। তাই এই ব্যাপারটা অভিভাবকদেরই খেয়াল রাখতে হবে। নিজের বাচ্চাকে মাঠে, খোলা আকাশের নীচে খেলতে পাঠান। সারাক্ষণ যেন বাচ্চা ঘরে বসে ফোন না ঘাঁটে। ফোনের স্ক্রিনে গেম না খেলে বাড়ির বাইরে গিয়ে খেলাধুলো করার পরামর্শ দিন ওদের। 


চোখের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য কয়েকটি সহজ নিয়ম মেনে চলতে পারলে উপকার পাবেন আপনি 


২০-২০-২০ রুল - এই নিয়মে ২০ মিনিট স্ক্রিন দেখার পর ২০ সেকেন্ডের একটা বিরতি নিতে হবে। এই বিরতির সময় ২০ ফুট দূরের কোনও জিনিসকে দেখতে হবে। এছাড়াও বাড়ির বাইরে প্রতিদিন অন্তত ২ ঘণ্টা বাচ্চাদের সক্রিয় রাখুন। খেলাধুলো করতে পারলে সবচেয়ে ভাল। 


তথ্যসূত্র- আইএএনএস