কলকাতা : লিভারের কোষে অতিরিক্ত চর্বি জমার ফলেই ঘটে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা।  লিভারে কিছু চর্বি থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু লিভারে ফ্যাট জমতে জমতে যদি তা  ৫-১০% এর বেশি হয়ে যায়, তাহলে তা আরও গুরুতর লিভারের রোগের কারণ হতে পারে। অ্যালকোহল সেবনে ফ্যাটি লিভারে ঝুঁকি বাড়ে নিঃসন্দেহে। কিন্তু দেখে গিয়েছে, অ্যালকোহল ছুঁয়েও দেখেন না, এমন মানুষেরও ফ্যাটি লিভার হয়। এর পিছনে কারণ একাধিক। যেমন, স্থূলতা, খারাপ খাদ্যাভ্যাস, বসে বসে কাজ, শারীরিক কসরত না-করা, ডায়াবেটিসের মতো সমস্যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়, সেই সঙ্গে ফ্যাটি লিভারেরও। 

ফ্যাটি লিভার থেকে আর কী কী রোগ?

ফ্যাটি লিভারের সমস্যা বাড়াবাড়ি পর্যায় গেলে ফাইব্রোসিস, সিরোসিস, লিভার ফেইলিওর এবং লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তবে কারও ফ্যাটি লিভার যদি প্রথম পর্যায়ে ধরা পড়ে, তাহলে জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমেই আবার ভাল পরিস্থিতিতে ফেরা সম্ভব। 

ফ্যাটি লিভারের সমস্যা থেকে মুক্তি সম্ভব? 

জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে, বিশেষ করে প্রাথমিক পর্যায়ে, ফ্যাটি লিভারের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।  সব চিকিৎসকরাই পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাসকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন এই বিষয়ে ।  প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং অতিরিক্ত চিনি এড়িয়ে চলতে হবে। এছাড়া শাকসবজি, গোটা শস্য, চর্বিহীন প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি রেখতে হবে ডায়েট চার্টে। এছাড়াও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।  সুস্থ বিপাকক্রিয়া বজায় রাখার জন্য দৈনন্দিন রুটিনে এক্সারসাইজ রাখতেই হবে। সপ্তাহে ১৫০ মিনিট মতো অ্যারোবিকস করা আবশ্যক। ওজন নিয়ন্ত্রণ করলে  লিভারে চর্বি জমা আটকানো যেতে পারে। তবে চিকিৎসকদের পরামর্শ,ক্র্যাশ ডায়েট বয়, দ্রুত ওজন কমানো ভালোর চেয়ে ক্ষতিই বেশি করতে পারে। আর সবথেকে আগে, ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের  অ্যালকোহল এড়িয়ে চলতে হবে। এছাড়া পর্যাপ্ত জল খেতে হবে  লিভারের কার্যকারিতা বজায় রাখতে। এই ধরনের  স্বাস্থ্যবিধির মাধ্যমে ফ্যাটি লিভার থেকে সেরে ওঠা যেতে পারে।  জীবনশৈলি ও ডায়েটে এই কয়েকটি পরিবর্তন  আনলেই তিন মাসের মধ্যেই গ্রেড ১ ফ্যাটি লিভার থেকে সেরে ওঠা সম্ভব। গ্রেড টু হলে নিয়ম আরও কড়া হবে, প্রয়োজনে ওষুধপত্র লাগতে পারে। তবে সমস্যা যদি তারও বেশি হয়, তাহলে একনিষ্ঠভাবে ডাক্তারের পরামর্ষ মেনে চলতেই হবে।  

ডিসক্লেমার: লেখায় উল্লেখিত দাবি বা পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। এটি মেনে চলার আগে অবশ্যই সরাসরি বিশেষজ্ঞ/চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।