দুর্গা পুজো মানেই পেটপুরে ভূরিভোজ। সারাবছর যাঁরা কড়া ডায়েটেও থাকেন, পুজোর ৫ দিন, তা থেকে ছুটি নেন তাঁরা। ব্রেকফাস্ট থেকে ডিনার, নানা সময় মামারকম খাওয়া দাওয়া। আর ঠাকুর দেখতে গিয়ে স্ট্রিট ফুড খান না এমন মানুষ তো খুবই কম ! কিন্তু উৎসব শেষে শরীরটাকে আবার পুরনো ফর্মে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে তো । অনিয়মের ফলে শরীরে যা ক্ষতি হয়, তা ঠিকঠাক করে নিতে দরকার একটা ডিটক্স ডায়েট।পরামর্শ দিলেন ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট ড. অনন্যা ভৌমিক।
বেশি করে জল খান : শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ জমা হলে তা বের করে দেওয়া জরুরি। শরীরকে রিহাইড্রেট করতে প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস জল খাওয়া জরুরি।
সম্পূর্ণ ফল এবং শাকসবজি খান: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার সমৃদ্ধ বিভিন্ন ধরনের ফল খাওয়া বেশ জরুরি। পুজোর পর থেকে ফাস্ট ফুড খাওয়া কমিয়ে ফেলতে হবে। শাকসবজি খেতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে। এমন খাবার খান, যা সহজে হজম হবে। খাদ্য তালিকায় থাকুক শাক, বেরি, সাইট্রাস জাতীয় ফল, শাকসবজি এবং অ্যাভোকাডোর মতো খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন।
প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন: প্রক্রিয়াজাত এবং প্যাকেটজাত খাবার বাদ দিন ডায়েট থেকে। এই খাবারগুলিতে প্রায়শই সোডিয়াম, কমপ্লেক্স শর্করা এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বি বেশি থাকে। পরিবর্তে, তাজা শাকসবজি , ফল, অপ্রক্রিয়াজাত খাবারগুলি বেছে নিন যা শরীরকে পুষ্টিও দেবে , আর সহজে হজম হবে।
চর্বিহীন প্রোটিন খান: আপনার খাবারে তালিকায় লিন ফ্যাট যেমন গ্রিলড চিকেন, মাছ, তোফু অন্তর্ভুক্ত করুন। এতে মনও ভরবে, শরীরও ভাল থাকবে।
হোল গ্রেন বেছে নিন: ভাতের বদলে কিনোয়া, ব্রাউন রাইস এবং ওটসের মতো গোটা শস্য বেছে নিন। হোল গ্রেন, ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ সরবরাহ করে।
অ্যালকোহল এবং চিনিযুক্ত পানীয় বাদ দিন: অ্যালকোহল এবং চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন কারণ তা শরীরকে ডিহাইড্রেট করতে পারে এবং শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। পরিবর্তে জল, গ্রিন টি, এবং তাজা ফলের রস খেতে পারেন।
গ্রিন টি পান করুন: গ্রিন টি-র রয়েছে বিশেষ ডিটক্সিফাইং ফিচার। এটি বিপাক প্রক্রিয়াতে সাহায্য করতে পারে। আপনার দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় গ্রিন টি শরীরকে ফিট রাখে।
অন্তর্ভুক্ত করুন প্রোবায়োটিকস: প্রোবায়োটিকস অন্ত্রে ভাল ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করে। হজম ক্ষমতা বাড়াতে আপনার খাদ্যতালিকায় yogurt, kefir, sauerkraut, kimchi মতো খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন।
শুধু খাবার খেলেই হবে না, খাওয়ার সঠিক পদ্ধতিও অবলম্বন করা চাই। খাবার সঠিকভাবে চিবানোর জন্য সময় নিন, একটি শান্ত পরিবেশে খাবার খান । এই অভ্যেস অতিরিক্ত খেয়ে ফেলা এড়াতে সহায়তা করবে।
পর্যাপ্ত ঘুম এবং ব্যায়াম করুন: পর্যাপ্ত ঘুম এবং নিয়মিত ব্যায়াম সামগ্রিক ডিটক্সিফিকেশন এবং সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। প্রতি রাতে ৭- ৮ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। নিয়মিত যোগব্যায়াম করুন।
মনে রাখবেন, ইন্টারনেট দেখে যে কোনও ডিটক্স ডায়েট নয়, পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়েই ডায়েট প্ল্যান করুন।