সব রোগের প্রাথমিক কোনও লক্ষণ নেই

Continues below advertisement

সাধারণত মানুষ মনে করে যে শরীর প্রতিটি সমস্যাই বেড়ে যাওয়ার আগে ইঙ্গিত দেয়।   কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই অনেক গুরুতর রোগ ধীরে ধীরে শরীরে ছড়িয়ে যায়। অথচ চোখে পড়ার মতো কোনও লক্ষণ দেখা যায় না। এসব অসুখকে ‘নীরব ঘাতক’ বলে।  এগুলো হৃদপিণ্ড, লিভার, কিডনি এবং অগ্ন্যাশয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির ক্ষতি করে। যখন সেই সব রোগের লক্ষণ দেখা যায়, তখন দেরি হয়ে গিয়েছে হয়ত।   তাই এই রোগগুলি সম্পর্কে সচেতন থাকা খুবই জরুরি। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সঠিক জীবনযাত্রা এবং সময় মতো পরীক্ষা-নিরীক্ষা এই লুকোনও বিপদ থেকে বাঁচানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায়। আসুন, ৫টি রোগ সম্পর্কে জেনে নিই। 

WHO-এর সতর্কতা

Continues below advertisement

WHO-এর মতে, নন-কমিউনিকেবল রোগগুলি আজ বিশ্বে সবচেয়ে বড় নীরব ঘাতক। এই সব অসুখ প্রতি বছর প্রায় তিন-চতুর্থাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী। এই রোগগুলির মধ্যে পড়ে হৃদরোগ, ক্যান্সার, ক্রনিক শ্বাসকষ্টের রোগ এবং অবশ্যই ডায়াবেটিস। এই রোগগুলি ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং হঠাৎ গুরুতর রূপ নেয়।  বিশেষ করে খেয়াল রাখুন নিচে আলোচ্য রোগগুলির দিকে। 

ফ্যাটি লিভার রোগ

যখন লিভারে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ফ্যাট জমা হতে শুরু করে, তখন শুরুতে এর কোনও বিশেষ লক্ষণ দেখা যায় না। এই কারণে অনেকেই এটিকে গুরুত্ব দেন না। সময় থাকতে মনোযোগ না দিলে এটি বিভিন্ন অঙ্গে ফোলাভাব এবং পরে লিভারের কার্যকারিতা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে।

কীভাবে বাঁচবেনসুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং সময়মতো লিভার পরীক্ষা করা খুবই জরুরি।

 হৃদরোগ

হৃদরোগ বিশ্বে মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ। অনেক সময় প্রাথমিক পর্যায়ে কোনও লক্ষণ দেখা যায় না। যেমন করোনারি আর্টারি ডিজিজে শিরাগুলি ধীরে ধীরে সরু হতে থাকে, তবে ব্যথা বা অস্বস্তি হয় না এবং হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। নীরব হার্ট অ্যাটাকও খুবই বিপজ্জনক, কারণ এতে বুকে তীব্র ব্যথা হয় না, বরং ক্লান্তি, হালকা ব্যথা বা শ্বাসকষ্টের মতো সামান্য জিনিস দেখা যায়, যা মানুষ উপেক্ষা করে।

কীভাবে বাঁচবেন

হার্টের পক্ষে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া , ব্যায়াম, মানসিক চাপ কমানো এবং নিয়মিত হার্ট চেকআপ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

 উচ্চ রক্তচাপ 

উচ্চ রক্তচাপকে ‘নীরব ঘাতক’ বলা হয়, কারণ এটি প্রায়শই কোনও লক্ষণ ছাড়াই রক্তচাপ বাড়তে থাকে। এটি ধীরে ধীরে রক্তনালীগুলির ক্ষতি করে এবং হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং কিডনি বিকল হওয়ার কারণ হতে পারে।

কীভাবে বাঁচবেন

নিয়মিত ব্লাড প্রেসার পরীক্ষা করা, নুন কম খাওয়া, সক্রিয় থাকা, মদ্যপান ও তামাক থেকে দূরে থাকা এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা।

এইচআইভি ও এইডস

এইচআইভি সংক্রমণ হলেও শুরুতে কোনও বিশেষ লক্ষণ দেখায় না। অনেক সময় হালকা জ্বর বা গলা ব্যথার মতো সাধারণ লক্ষণ দেখা যায়, যা মানুষ সাধারণ ভাইরাল ভেবে উপেক্ষা করে। কিন্তু ভাইরাস ধীরে ধীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়।

কিভাবে বাঁচবেন

নিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করুন, নিয়মিত এইচআইভি পরীক্ষা করান এবং পজিটিভ হলে ART চিকিৎসা সময়মতো শুরু করুন। এটি ভাইরাসের নিয়ন্ত্রণ করে এবং এইডস হওয়া থেকে বাধা দিতে পারে।

টাইপ-২ ডায়াবেটিস

ডায়াবেটিস। নীরব ঘাতক। শরীরকে কুরে কুরে খায়। ক্রনিক হলেও এই রোগ ম্যানেজেবল। জানতে হবে তার উপায়। নইলে ডায়াবেটিস, নার্ভের কার্যকারিতা থেকে দৃষ্টিশক্তি , সবটাই খারাপ করে দেয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ডায়াবেটিসের কোনও আলাদা লক্ষণ দেখা যায় না, তবে ধীরে ধীরে এটি হৃদপিণ্ড, কিডনি, চোখ এবং স্নায়ুর ক্ষতি করতে শুরু করে।

কীভাবে বাঁচবেন

সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং সময়মতো ব্লাড সুগার পরীক্ষার মাধ্যমে এই রোগটিকে প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা যেতে পারে।

দাবিত্যাগ: এই তথ্য গবেষণা এবং বিশেষজ্ঞদের মতামতের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। এটিকে চিকিৎসা পরামর্শ হিসাবে বিবেচনা করবেন না। কোনও নতুন কার্যকলাপ বা ব্যায়াম শুরু করার আগে আপনার ডাক্তারের বা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।