হৃদরোগ নিয়ে মানুষের আশঙ্কা আর আলোচনা , কোনওটারই শেষ নেই। ২০ র কোঠার তরুণই হোক বা ষাট পেরনো বৃদ্ধ,হার্টের সমস্যা থেকে কেউ সুরক্ষিত নন। হার্টের অসুখের কারণ হিসেবে কয়েকটি বিষয় নিয়ে খুবই আলোচনা হয়। যেমন  কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ, আর্টারি ব্লকেজ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা হয়েছে।  তবে, আরও একটি বিষয় নীরব ঘাতক হয়ে উঠতে পারে।  উচ্চ পটাসিয়াম অথবা হাইপারক্যালেমিয়ার সমস্যা । এই বিষয়টি ক্রমশই বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠছে। হাইপারক্যালেমিয়া থেকে তরুণ, আপাতদৃষ্টিতে সুস্থ-সবল ব্যক্তিরাও হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারে। 

হার্টের ইলেকট্রিকাল রিদমের জন্য পটাসিয়াম তো দরকার। কিন্তু শরীরে পটাশিয়াম অতিরিক্ত হয়ে গেলে তা আবার ঘাতক হতে পারে।  অতিরিক্ত ক্যালশিয়াম  হৃদস্পন্দনের যে স্বাভাবিক ট্র্যাক রয়েছে, তা ভেঙে দেয়।  পর্যাপ্ত পটাসিয়াম ছাড়া শরীরের বৈদ্যুতিক সংকেতগুলি ঠিক মতো তৈরি করতে পারে না। পটাশিয়ামের সামান্য ভারসাম্যহীনতা থেকেও অ্যারিথমিয়া হতে পারে। গুরুতর ক্ষেত্রে হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে পারে।

এবার হঠাৎ শরীরে পটাশিয়াম বেড়ে যায়ই বা কেন ? ইন্ডিয়া টু-কে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডঃ অঞ্জলি মেহতা জানিয়েছেন, ভারতে বেশির ভাগ মানুষের খাদ্য তালিকায় রোজ কলা আর আলু থাকেই। কলা এবং আলুতে উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। তবে এগুলো খাওয়া খারাপ, তা কিন্তু বলেননি ডাক্তার। বরং নিজের শরীরের অবস্থার কথা জেনে তবেই হবে খেতে। যেমন চিকিৎসতের পরামর্শ  কিডনির গুরুতর সমস্যা, ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ থাকলে কলা-আলু খাওয়ার আগে সাবধান হওয়া দরকার। শরীরে পটাশিয়াম তো হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে না !  আমাদের জীবনধারা এবং খাদ্যাভ্যাসই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এর জন্য দায়ী।  হাইপারক্যালেমিয়া সম্পর্কে ভারতে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা নেই বললেই চলে।  দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীদের  প্রায়শই এই সমস্যা হয়।  ভারতে ডায়াবেটিসজনিত কিডনি রোগের হার বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এবং এই ধরনের রোগীদের পটাশিয়ামের মাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়।  রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ACE ইনহিবিটর বা ARB নিয়ে থকেন। তাঁদেরও পটাশিয়াম ইনটেকে রাশ টানা দরকার।  কিছু অ্যান্টিবায়োটিক এবং রক্ত পাতলা করে এমন ওষুধ খান যাঁরা,তাঁদের সতর্ক থাকতেই হবে।   প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বা সাপ্লিমেন্টে খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।  

এপ্রিকট এবং শুকনো ফল, অ্যাভোকাডো, আপেল, কমলালেবু, কলা, শাকসবজি , যেমন পালং শাক এবং  শসা, ঝুকিনি, বেগুন এবং কুমড়ো ইত্যাদি। এছাড়া গাজর, আলু এবং মিষ্টি আলু, প্রভূতিও পটাশিয়ামের ভাণ্ডার। শিম , শুঁটি জাতীয় খাবার নিয়ে সতর্ক থাকুন।